Ajker Patrika

গাঁদায় সেজেছে ঘিওর

আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯: ০৪
গাঁদায় সেজেছে ঘিওর

‘হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল, এনে দে এনে দে নইলে বাঁধব না, বাঁধব না চুল।’ গাঁদা ফুলে মুগ্ধ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গানে এভাবেই উঠে এসেছে এই ফুলের জন্য আকুতি। সেই গাঁদায় সেজেছে মানিকগঞ্জের ঘিওর। উপজেলার আনাচ-কানাচ ভরে উঠেছে লাল-হলুদ গাঁদা ফুলে।

একসময় বাড়ির উঠান কিংবা ছাদে টবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ফুল ফোটানো। তবে এখন দিন পাল্টেছে, বেড়েছে ফুলের চাহিদা। ফলে শৌখিন বাগানের গণ্ডি পেরিয়ে ফুল হয়ে উঠেছে চাষের পণ্য, বাণিজ্যিক পণ্য। সব ফুলের মধ্যে গাঁদার চাহিদা আগে থেকেই একটু বেশি। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন দিবসের আয়োজনে কিংবা বিয়ে, জন্মদিন, পূজার মতো উৎসব-অনুষ্ঠানে এই ফুলের ব্যাপক ব্যবহার হয়। দিনে দিনে চাহিদা বাড়ায় মানিকগঞ্জেও বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে গাঁদার চাষ।

গাঁদা মূলত শীতকালীন ফুল। তবে অগ্রহায়ণ থেকেই ফুটতে শুরু করে। পৌষ আসতে এখনো দিন সাতেক বাকি। তবে এবার শীত একটু আগেভাগেই চলে এসেছে। আর শীতের প্রভাবে ফুটতে শুরু করেছে হলুদ-লাল গাঁদা, রঙিন হয়ে উঠতে শুরু করেছে মানিকগঞ্জের ঘিওর। শুধু ঘিওরই নয়, মানিকগঞ্জ সদর, সিঙ্গাইর, হরিরামপুর, সাটুরিয়া, দৌলতপুর, শিবালয়ের বিভিন্ন এলাকায়ও এই ফুলের চাষ হয়।

গাঁদা ফুল বিভিন্ন জাত রয়েছে, যেমন ইনকা, গিনি গোল্ড, ইয়েলো সুপ্রিম, গোল্ডস্মিথ, ম্যান ইন দ্য মুন, মেরিয়েটা, হারমনি, লিজন অব অনার ইত্যাদি। আমাদের দেশে চায়নিজ গাঁদা, রাজ গাঁদা, আফ্রিকান ও ফরাসি জাতের গাঁদার চাষ বেশি হয়। গাঁদার নাম শুনলে চোখে হলুদ রঙের এই ফুলের ছবি ভাসলেও লাল, কমলা, গাঢ় খয়েরি, লাল-হলুদের মিশ্রণের গাঁদাও পাওয়া যায়।

ঘিওরের ফুলচাষি সাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দোআঁশ মাটি গাঁদা চাষের উপযোগী। বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের ক্ষেত্রে প্রতি শতক জমিতে ৪০ কেজি পচা গোবর, দুই কেজি ইউরিয়া, তিন কেজি টিএসপি ও দুই কেজি এমওপি সার দিতে হবে। ঘিওরের বানিয়াজুরী এলাকার সিফাত নার্সারির মালিক আব্দুর রশিদ জানান, গাঁদা ফুলের চারা রোপণ করার সময় হলো নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ সময় চারা রোপণ করলে ফুল চাষে বেশি লাভবান হওয়া যায়।

শুধুই কি সৌন্দর্যবর্ধক? গাঁদা ফুল ও পাতার রস ঔষধি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে সুপ্রাচীনকাল থেকে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক উত্তম পালিত বলেন, গাঁদা ফুলের নির্যাস টিউমারের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ ও ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া কানপাকা রোগ নিরাময়েও এই নির্যাস উপকারী। শরীরের কোথাও কেটে গেলে এই ফুলের নির্যাস বেশ কাজে দেয়। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের তেল ও সুগন্ধি তৈরিতেও গাঁদা ফুল ব্যবহার হচ্ছে।

ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ বিপুল হোসেন বলেন, বাংলাদেশে গাঁদা একটি জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত ফুল। এটি শীতকালীন ফুল হলেও গ্রীষ্ম ও বর্ষাতেও এর চাষাবাদ হয়। বাণিজ্যিক চাহিদা থাকায় এই ফুলের চাষে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

আ.লীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার, ছেলেকে ৫ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ