Ajker Patrika

এবারের জি-৭ সম্মেলন যে কারণে তাৎপর্যপূর্ণ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
এবারের জি-৭ সম্মেলন  যে কারণে তাৎপর্যপূর্ণ

জাপানে আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে বিশ্বের ধনী দেশগুলোর সংগঠন জি-৭-এর শীর্ষ সম্মেলন। তিন দিনের এ সম্মেলনে অংশ নিতে গতকাল বৃহস্পতিবার জাপানে পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরই মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রেসিডেন্ট ঋষি সুনাক। জড়ো হয়েছেন জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও কানাডার শীর্ষ নেতারাও। খবর সিএনএনের। 
জাপানে অনুষ্ঠিত এবারের জি-৭ সম্মেলনের তাৎপর্য অনেক। এর বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।

এবার সবচেয়ে প্রাগ্রসর গণতান্ত্রিক দেশগুলোর নেতারা বসছেন ঐতিহাসিক হিরোশিমায়, যেখানে বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক হামলা হয়। ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর ছোড়া পারমাণবিক বোমার প্রাথমিক বিস্ফোরণে এখানে ৭০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল এবং তেজস্ক্রিয়া-সংক্রান্ত অসুস্থতায় ধীরে ধীরে আরও অনেকের মৃত্যু হয়েছিল।

বিপর্যয়কর এ হামলার দুই বছর পর মার্কিন কয়েকজন বিজ্ঞানী বিশ্ব পারমাণবিক বিপর্যয়ের কতটা কাছাকাছি, তার বার্ষিক নির্দেশক হিসেবে ‘ডুমসডে ক্লক’ নামের এক ঘড়ি তৈরি করেছিলেন। পরমাণুবিজ্ঞানীদের বুলেটিন অনুসারে, ‘ঘড়িটি এখন মধ্যরাতে ৯০ সেকেন্ডে দাঁড়িয়ে আছে। এর মানে বিশ্ব এখন চরম বিপর্যয়ের মুখে।’

জাপানের প্রতিবেশী চীন পরমাণু অস্ত্রের মজুত বাড়াচ্ছে। উত্তর কোরিয়া রেকর্ড হারে পারমাণবিক হামলায় সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাচ্ছে। আর ইরান নিজস্ব পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

তবে বুলেটিন বলছে, ঘড়িটি এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক মাত্রায় অবস্থান করার প্রধান কারণ রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। পশ্চিমা দেশগুলোর অন্যতম মিত্র ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা এখন দ্বিতীয় বছরে গড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত যুদ্ধের কোনো সুষ্ঠু পরিসমাপ্তি না হওয়ায় মস্কোর কাছে থাকা অন্তত ছয় হাজার পারমাণবিক অস্ত্র সব সময় একটা উদ্বেগ জারি রেখেছে। কারণ, হিরোশিমায় সমবেত হওয়া বেশির ভাগ দেশই ইউক্রেনের সেনাদের অস্ত্র সরবরাহ করছে। কাজেই চলমান রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে এটি বিশ্ববাসীকে আবার পারমাণবিক ঝুঁকির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।

এ সম্মেলনে ইউক্রেন ইস্যুতে ধনী দেশগুলোর একতায় কোনো ফাটল ধরবে, তেমন আশঙ্কা নেই।

আবার সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে চীনের দোরগোড়ায়, বেইজিংয়ের কাছে। দেশটির সামরিক স্থাপনা ও জি-৭ সম্মেলনের সভাপতি কিশিদা এবং জাপানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র হলো উদ্বেগের বড় কারণ। একদিকে চীন, অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার দিকে চোখ রেখে গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা টোকিওর সামরিক বাজেট দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।

চীনের হুমকি মোকাবিলার প্রশ্নে কিশিদাকে সব ধরনের সহযোগিতা জোগাতে বাইডেনও এককাট্টা। সর্বোপরি, কয়েক হাজার মার্কিন সেনা জাপানে অবস্থান করছেন এবং দুই মিত্র গত জানুয়ারিতে তাদের সামরিক সম্পর্ক আরও তাৎপর্যজনক মাত্রায় বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।

এ শীর্ষ সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত, যখন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রে ঋণের মাত্রা বেড়েই চলছে। বড় ঋণগ্রস্ত অন্য দুটি দেশ হলো জাপান ও যুক্তরাজ্য। দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানও হিরোশিমায় বাইডেনের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে রয়েছেন। এ কারণেও এ সম্মেলনের তাৎপর্য বিপুল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত