Ajker Patrika

পদ্মায় ভাঙনে আতঙ্ক হুমকিতে রক্ষা বাঁধ

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৪৩
পদ্মায় ভাঙনে আতঙ্ক হুমকিতে রক্ষা বাঁধ

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ভাঙন। এতে হুমকিতে পড়েছে পদ্মার তীর রক্ষার ৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার বাঁধ। হুমকিতে আছে আন্ধারমানিক বাজার, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান। ভাঙনের আতঙ্কে দিন পার করছে উপজেলার কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে নদীভাঙন রোধে ফ্লাড অ্যান্ড রিভার ব্যাংক ইরোশন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (প্রথম পর্যায়) আওতায় পদ্মার তীর রক্ষা বাঁধ নির্মিত। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আলগীরচর থেকে হারুকান্দি ইউনিয়নের শেষ পর্যন্ত ৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার এ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু হঠাৎ নদীর তীর ভাঙনে এটি পড়েছে হুমকির মুখে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার আন্ধারমানিক, খালপাড় বয়ড়ার কড়ইতলা এলাকা, কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কুশিয়ারচর, কালীতলা এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার চরাঞ্চলের লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের সেলিমপুর এলাকায়ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে চরাঞ্চলের আজিমনগর ইউনিয়নের বাসিন্দারাও।

পদ্মাপাড়ের আন্ধারমানিক কড়ইতলা এলাকার দোকানি আক্কাস আলী বলেন, ‘বাঁধে গত বছর ভাঙন ধরছিল। এবার পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হইছে। বাঁধের দু-চার হাত দূরেই পদ্মা আবার ভাঙতেছে। এর আগে পাঁচবার বাড়ি ভাঙছে। আমাগো বাড়ি আর দোকান ভাঙলে আমরা থাকমু কই, খামু কি?’

পাটগ্রাম অনাথবন্ধু সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হরিপদ সূত্রধর বলেন, ‘ছোটকাল থেকে পদ্মার ভাঙন দেখেছি। পদ্মার ভাঙনে হরিরামপুরের শত শত গ্রাম, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, ফসলের খেত বিলীন হয়ে গেছে। হরিরামপুর রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’

হরিরামপুরের সন্তান, আইন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব তৈয়বুল আজহার বলেন, জরুরি ভিত্তিতে পদ্মা তীরবর্তী হরিরামপুর উপজেলা সদর রক্ষা বাঁধ সংস্কার এবং ভাঙনকবলিত এলাকায় নতুন বাঁধ নির্মাণ করা জরুরি। হরিরামপুর থানার পেছনের কড়ইতলা ভেঙে গেলেই পদ্মা ঢুকে যাবে থানার সীমানায়। ভাঙনরোধে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা দরকার।

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মার তীর রক্ষা বাঁধের খালপাড় কড়ইতলা ভাঙন বিষয়ে জেলা প্রশাসক স্যারকে জানিয়েছি। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের এনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও স্যারকে অনুরোধ করেছি। শিগগির মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ দল আসবে বলে আশা করছি। এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডও বিষয়টি সম্পর্কে জানে।’

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈনুদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাঁধ সংস্কারসহ অনেকগুলো প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত