Ajker Patrika

মাদক ছেড়ে কামিনী ফুলের পাতা বিক্রি

পাটকেলঘাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯: ০৯
Thumbnail image

পাটকেলঘাটার কালিপদ দাশ (৩০) মাদক ছেড়ে এখন কামিনী ফুলের পাতা বিক্রি করে চালান সংসার। তাঁর পরিবারে স্ত্রী ও এক পুত্রসন্তান রয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি এখন সুখেই আছেন।

একসময় কালিপদের হাঁটতে গেলেও মনে হতো পেছনে পুলিশ আসছে। কালিপদ বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছেন। এরপর মাদক ছেড়ে একটা ভ্যানগাড়ি কিনে চালানো শুরু করেন। কিন্তু তেমন ভাড়া না হওয়ায় বিকল্প পেশা হিসেবে তিনি বেছে নেন কামিনী ফুলের পাতা বিক্রি।

কালিপদ বলেন, ‘তালা ও পাটকেলঘাটার গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন বাড়ি থেকে এই কামিনী ফুলের পাতা কিনি। পরে সেসব ২০ টাকা আঁটি বিক্রয় করি।’

কালিপদ আরও বলেন, তাঁর এই পাতা ঢাকা ও চট্টগ্রামে রপ্তানি হয়। বিভিন্ন দিবসে এই পাতা বেশি দামে বিক্রি হয়। যেমন ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চসহ বিশেষ দিনে এই পাতার চাহিদা বাড়ে।

কালিপদ দাশ আক্ষেপ করে জানান, তাঁর পিতা-মাতা কেউ নেই। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি মেজো। বাকি দুই ভাইয়ের পৃথক সংসার। তবে কালিদাশের পিতা-মাতা পরের জমিতে ঘর বেঁধে থাকতেন। তাঁরা মারা যাওয়ার পর কালিদাশ তাঁর স্ত্রী সন্তান নিয়ে সেই সুধীর চ্যাটার্জির বাড়িতেই থাকেন।

নিজের বলতে তাঁদের কোনো জমি নেই। দীর্ঘ ৩০-৪০ বছর যাবৎ তাঁরা এভাবে যাযাবর হিসেবে বাস করে আসছেন।

কালিপদ দাশ কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ প্রতিবেদককে জানান, তাঁরা সরকারি সাহায্য বলতে কোনো কিছু পান না। মেম্বর বা চেয়ারম্যান তাঁদের কোনো অনুদান দেয় না।

কালিপদ দাশ আরও বলেন, ‘লজ্জার কিছু নেই। এখন আর মাদক খাই না। বিক্রিও করি না। কারণ আমার একটা ছেলে আছে। সে বড় হচ্ছে তাঁর ভবিষ্যৎ আছে। সবকিছু চিন্তা করে অপকর্মের পথ ছেড়ে দিয়েছি।’

কালিপদ দাশ আরও বলেন, ‘আমি তালা উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গিয়ে এই কামিনী ফুলের পাতা কিনে বিক্রয় করে মোটামুটি রোজগার করি। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কামিনী ফুলের চাহিদা বাড়বে। এখন সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত