Ajker Patrika

অর্ধশত কোটি টাকা গায়েব

মনোহরদী (প্রতিনিধি) নরসিংদী
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১১: ০৬
অর্ধশত কোটি টাকা গায়েব

মনোহরদীতে শাহ সুলতান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামে একটি এনজিওর বিরুদ্ধে গ্রাহক আমানতের প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সমিতির কার্যালয় তালাবদ্ধ করে কর্মকর্তারা পালিয়ে গেছেন। আমানতকারীরা প্রতিদিন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছেন।

আবুল কালাম আজাদ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি এই সমিতির উদ্যোক্তা। তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। কিছুদিন আগে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি নরসিংদীর ঘোড়াদিয়া-সংগীতা রোডের গাজী মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা দেখিয়ে এনজিওটির কার্যক্রম শুরু করেন।

ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, শাহ সুলতান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামে ২০১৩ সালে জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে উপজেলার খিদিরপুর বাজারে শুরু হয় এর ঋণদান কার্যক্রম। পুঁজি সংগ্রহের জন্য ব্যাংক সুদের দ্বিগুণ মুনাফার লোভ দেখিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করে। খিদিরপুরসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের ৫ শতাধিক মানুষ গ্রাহক হন। গ্রাহক করার এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন পশ্চিম চরমান্দালিয়া গ্রামের ওসমান মৌলভী, মনতলা ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক মুজিবুর রহমান সাহি ও মো. মফিজ উদ্দিন।

প্রতি মাসে এক লাখ টাকায় ১ হাজার ৪০০ টাকা মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রামের মানুষদের আকৃষ্ট করা হয়। পশ্চিম চরমান্দালীয়া গ্রামের ওবাইদুল বলেন, ওসমান মৌলভীর প্ররোচনায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা সমিতিতে জমা রাখেন তিনি। এখন টাকা ফেরত পেতে সমিতি এবং ওসমান মৌলভীর বাড়িতে ধরনা দিয়ে হয়রান হচ্ছেন। ওসমান মৌলভীও এখন আত্মগোপনে।

ওবাইদুলদের প্রতিবেশী নাছিমার জমা রাখেন ২ লাখ টাকা। প্রতিবেশী রুমা জমা রেখেছেন ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। রামপুর গ্রামের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার তপন কুমার বণিক ও তার পরিবারের এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা আমানত রেখেছেন। আমানত ফেরত পেতে তাঁরা প্রতিদিনই তালাবদ্ধ সমিতির অফিসে ভিড় জমিয়ে বিক্ষোভ করছেন।

জানতে চাইলে মুজিবুর রহমান সাহি বলেন, তাঁর মাধ্যমে সমিতিতে টাকা জমা হলেও তিনি লাভবান হননি। বরং তাঁর নিজেরই সাড়ে ১৪ লাখ টাকা এবং তাঁর ভাগনে মনতলার আশরাফ আলীর ২ লাখ ৫০ হাজার ও শ্যালিকা কিশোরগঞ্জ শহরের আল আমিনের স্ত্রী রোকেয়ার ৩০ লাখ টাকা সমিতিতে জমা আছে।

তবে সমিতির উদ্যোক্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, সব টাকাই দফায় দফায় নরসিংদীর প্রধান অফিসে জমা হয়েছে। ৬৯ লাখ টাকা এলাকায় ঋণ হিসেবেও বিভিন্ন জনের কাছে রয়েছে। এই অফিসসহ প্রধান অফিসের সব টাকাই বিনিয়োগ হয়েছে নরসিংদীতে শাহ সুলতান নামের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমাগত লোকসান দিয়ে এখন সেসব পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য টাকা ফেরত দেওয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। সমিতির এমডি ফারুক মোল্লা লাপাত্তা হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘শাহ সুলতান সমবায় সমিতি তালাবদ্ধ করে কর্মকর্তারা পালিয়ে গেছেন বলে জানতে পেরেছি। তবে আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম কাশেম বলেন, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে সমিতি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত