Ajker Patrika

চোরাচালান ঠেকাতে গরু মহিষেরও ‘জন্মনিবন্ধন’

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ৫২
Thumbnail image

রাজশাহীর সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে কৃষকের বাড়িতে জন্ম নেওয়া গরু-মহিষের বাছুরের হিসাব রাখতে ‘জন্মনিবন্ধন’ প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিজিবি। অনেক সময় ভারত থেকে পাচার করে আনা গরু নদীপাড়ে এনে বলা হয়, এটি বাড়িতে পোষা। এতে পোষা নাকি পাচার করে আনা তা নির্ধারণ করতে হিমশিম খেতে হতো বিজিবিকে। গরু-মহিষের হিসাব রাখতে চালু করা জন্মনিবন্ধন প্রক্রিয়ায় এ ক্ষেত্রে সুফলও মিলছে।

রাজশাহী শহরের ঠিক ওপারে পবা উপজেলার চর মাঝাড়দিয়াড় গ্রাম। সেই গ্রামের আশরাফুল ইসলাম সম্প্রতি গরুর জন্মনিবন্ধন করাতে যান বিজিবির চর মাঝাড়দিয়াগ সীমান্ত ফাঁড়িতে। সেখানেই কথা হয় আশরাফুলের সঙ্গে। তিনি জানান, এলাকায় গরু-মহিষের বাছুর জন্ম হলেই সেটি ১০ দিনের মধ্যে বিজিবির সীমান্ত ফাঁড়িতে আনতে হয়। বাছুর দেখার পর বিজিবি সদস্যরা খাতায় বাছুরের বিবরণ লিখে রাখেন। গরু-মহিষ বেচতে যাওয়ার আগে নিতে হয় ছাড়পত্র।

চর মাঝাড়দিয়াড় গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি বাড়িতেই কমপক্ষে পাঁচটি থেকে ৫০টি পর্যন্ত গরু-মহিষ আছে। বিক্রি করতে যাওয়ার সময় আগে ঝামেলায় পড়তে হতো। এখন বিজিবি ফাঁড়ির ছাড়পত্র থাকে বলে সমস্যা হয় না।’

গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চর কানাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বুলবুল হোসেন জানান, গরু-মহিষকে চরানোর জন্য সীমান্ত এলাকায় নিতে হয়। কাঁটাতারের বেড়ার দিক থেকে আসতে দেখলেই বিজিবি আগে সন্দেহ করত। এখন জন্মনিবন্ধন থাকার কারণে সমস্যা হয় না। তবে হাটের দিন গরু-মহিষ নিয়ে ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য মানুষের ভিড় লেগে যায়। তখন একটু ঝামেলা হয়।

চর আষাড়িয়াদহ ইউপির তথ্যমতে, পুরো ইউনিয়নে প্রায় ২২ থেকে ২৩ হাজার গরু-মহিষ আছে। সবগুলোরই জন্মনিবন্ধন করা আছে। এলাকার দুটি বিজিবি ক্যাম্প জন্মনিবন্ধনের কাজটি করে থাকে। এ জন্য কোনো টাকা লাগে না।

চর আষাড়িয়াদহ ইউপি চেয়ারম্যান মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘বছরের পর বছর এই জন্মনিবন্ধন ও ছাড়পত্রের প্রথা চলে আসছে।’

বিজিবির রাজশাহী-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘সীমান্ত এলাকার গ্রামগুলোর পর একটা নদী। নদীটা পার হলেই গরু-মহিষ চেনার আর উপায় থাকে না। সে জন্য সীমান্তের চোরাচালান বন্ধের একটা চেষ্টা হিসেবে গরু-মহিষের জন্মনিবন্ধন ও ছাড়পত্রের নিয়ম করা হয়েছে। এতে সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। ভারতীয় গরু-মহিষ আর দেশে ঢুকতে পারে না। সীমান্তে অকাল মৃত্যুও কমে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত