রাহুল শর্মা, ঢাকা

দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী মানসম্পন্ন সামগ্রী সরবরাহ করা হয়নি। ৭৯০টি স্ক্যানার সরবরাহের কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি একটিও। কম্পিউটারে যুক্ত করা হয়েছে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার। সামগ্রী সরবরাহের সময়সীমা ছিল ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর। কোভিডের কারণে চার দফায় সাড়ে ১০ মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু সে সময়ের মধ্যেও সব সামগ্রী সরবরাহ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১৩ হাজারের বেশি আসবাব দেওয়াই হয়নি। এমন বড় আকারের অনিয়ম হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) প্রায় শতকোটি টাকার কেনাকাটায়।
অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে মন্ত্রণালয়ের তদন্তে। কয়েকটি স্কুলে খোঁজ নিয়েও অপর্যাপ্ত ও নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহের তথ্য মিলেছে।
দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী সামগ্রী সরবরাহ না করা এবং অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার সরবরাহ করায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করতে বলা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। সেই সঙ্গে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করায় জামানত বাজেয়াপ্ত করারও সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এসব সুপারিশ এখনো কার্যকর করেনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। তারা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা জানতে একটি কমিটি করেছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী সামগ্রী সরবরাহ না করার কারণেই অভিযুক্ত ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
নিম্নমানের কারণে পুরো টাকাই গচ্চা
জানা যায়, সেসিপের আওতায় ৬৪০টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রি-ভোকেশনাল ও ভোকেশনাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৩ মে দুটি প্যাকেজের আওতায় ১০টি লটে আন্তর্জাতিক দরপত্র ডাকা হয়। এগুলোর মধ্যে একটি লটে (জিডি-৫০ এ, লট-০১: পিভিআইপি ইকুইপমেন্ট ফর আইসিটি ট্রেড) ৩৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি সামগ্রী অর্থাৎ ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, মাউস, কি-বোর্ড, স্ক্যানার এবং আসবাব (কম্পিউটার টেবিল, কম্পিউটার চেয়ার, আলমারি) সরবরাহ করার কথা। ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট এ লটের সামগ্রী ও সেবা সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় যৌথ প্রতিষ্ঠান ‘ফ্লোরা টেলিকম লিমিটেড অ্যান্ড বাংলাদেশ সায়েন্স হাউজ’। সামগ্রী সরবরাহের চুক্তিমূল্য ছিল ১ কোটি ১২ লাখ ৬১ হাজার ৩৭ ডলার (ডলারের তখনকার দর ৮৫ টাকা হিসাবে প্রায় ৯৫ কোটি ৭১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা)। সেবার মূল্য ৯৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নিম্নমানের কারণে ইতিমধ্যে পরিশোধ করা পুরো টাকাই গচ্চা গেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব আ ন ম তরিকুল ইসলামের সই করা চিঠিতে বলা হয়, ‘স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ না করে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন অপারেটিং সিস্টেম সরবরাহ করায় সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তাদের এ ধরনের কার্যকলাপে বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
দেওয়া হয়নি ৭৯০টি স্ক্যানার
নারায়ণগঞ্জের পাগলা উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আসবাবপত্র যা দিয়েছে, তা বেশি ভালো না। আর কম্পিউটারগুলো ভালো না খারাপ, তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। কিছুদিন আগে মন্ত্রণালয় থেকে লোকজন এসে সবকিছু দেখে গেছেন।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের অষ্টগ্রাম হাইস্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘সব জিনিস পাইনি। আসবাবপত্রগুলো তেমন সুবিধার মনে হচ্ছে না।’
জানা যায়, এখনো সরবরাহ করা হয়নি ১ হাজার ৮৪০টি কম্পিউটার টেবিল, ১১ হাজার ২০০টি চেয়ার, ৫৬০টি আলমারি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সেসিপের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ড. সামসুন নাহার বলেন, ‘আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। একটি লটে মালপত্রের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতে প্রায় ৯৭ কোটি টাকার সামগ্রী রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ না করার। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক, তারা (ঠিকাদার) শর্ত অনুযায়ী সফটওয়্যার দেয়নি। বেশ কিছু সামগ্রী এখনো দেওয়ার বাকি।’
পদাধিকারবলে সেসিপের পরিচালক মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি গত সোমবার বলেন, ‘এ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানসহ কেনাকাটা ও সরবরাহ পুরো বিষয়টিই ঘটেছে আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগে। কিছুদিন আগে এ প্রকল্পের একটি লটের কেনাকাটার অনিয়মের বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নিতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাঠপর্যায় থেকে অভিযোগ
জানা যায়, অভিযোগ ওঠার পর সরেজমিনে এর সঠিকতা দেখতে ২০২২ সালের ২১ জুলাই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে তিনটি প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী সব সামগ্রী সরবরাহ ও ইনস্টলেশন না করাসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে; পাশাপাশি এই কর্মসূচির আওতায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই অনুরূপ অনিয়মের চিত্র পরিলক্ষিত হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে কমিটি।
নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, শর্ত অনুযায়ী মোট দুইভাবে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর একটি ডলারে সামগ্রীর দামের জন্য, অন্যটি আইসিটি-সংক্রান্ত সেবা প্রদানের জন্য। এর মধ্যে পণ্যের জন্য আট দফায় পরিশোধ করা হয়েছে ৮০ লাখ ১৫ হাজার ১৮৪.৮৫ ডলার (তখনকার হিসাবে ৬৮ কোটি ১২ লাখ ৯০ হাজার ৬৪০ টাকা)। সেবার জন্য পরিশোধ করা হয়েছে ৮৬ লাখ ৩ হাজার ১০০ টাকা।
মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আগে প্রকল্প কর্মকর্তাদের নজরে আসার কথা, কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। মাঠপর্যায় থেকে অভিযোগ পেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্ত করেছে। এখন বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কিছু কর্মকর্তা তৎপর।
জানা যায়, সরবরাহকারীকে আগেই পরিশোধ করা হয়েছে বেশির ভাগ অর্থ। তদন্তাধীন অবস্থায় বাকি টাকা দেওয়ারও পাঁয়তারা চলছে।
এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক বলেন, সরকারি বিধিবিধানের বাইরে কিছুই হবে না।
মন্ত্রণালয়কেই দোষারোপ ফ্লোরার
ফ্লোরা টেলিকমের নির্বাহী পরিচালক শহিদুল ইসলাম অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এসব অভিযোগ সত্য নয়। সেরা প্রোডাক্টগুলোই সরবরাহ করেছি। খারাপ পণ্য সরবরাহ করা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক দরপত্র একবার পাস হয়ে গেলে মন্ত্রণালয় থেকে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। কেন তারা এখন এসব অভিযোগ তুলছে, তা বোধ্যগম্য নয়।’ লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যা দরপত্রে চেয়েছে, তা-ই দিয়েছি।’
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোহাম্মদ কায়কোবাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটি গুরুতর অপরাধ। সরকারের উচিত দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি দিন দিন সংস্কৃতিতে পরিণত হচ্ছে। যারা এই অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড না হয়।

দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী মানসম্পন্ন সামগ্রী সরবরাহ করা হয়নি। ৭৯০টি স্ক্যানার সরবরাহের কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি একটিও। কম্পিউটারে যুক্ত করা হয়েছে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার। সামগ্রী সরবরাহের সময়সীমা ছিল ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর। কোভিডের কারণে চার দফায় সাড়ে ১০ মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু সে সময়ের মধ্যেও সব সামগ্রী সরবরাহ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১৩ হাজারের বেশি আসবাব দেওয়াই হয়নি। এমন বড় আকারের অনিয়ম হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) প্রায় শতকোটি টাকার কেনাকাটায়।
অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে মন্ত্রণালয়ের তদন্তে। কয়েকটি স্কুলে খোঁজ নিয়েও অপর্যাপ্ত ও নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহের তথ্য মিলেছে।
দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী সামগ্রী সরবরাহ না করা এবং অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার সরবরাহ করায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করতে বলা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। সেই সঙ্গে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করায় জামানত বাজেয়াপ্ত করারও সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এসব সুপারিশ এখনো কার্যকর করেনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। তারা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা জানতে একটি কমিটি করেছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী সামগ্রী সরবরাহ না করার কারণেই অভিযুক্ত ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
নিম্নমানের কারণে পুরো টাকাই গচ্চা
জানা যায়, সেসিপের আওতায় ৬৪০টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রি-ভোকেশনাল ও ভোকেশনাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৩ মে দুটি প্যাকেজের আওতায় ১০টি লটে আন্তর্জাতিক দরপত্র ডাকা হয়। এগুলোর মধ্যে একটি লটে (জিডি-৫০ এ, লট-০১: পিভিআইপি ইকুইপমেন্ট ফর আইসিটি ট্রেড) ৩৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি সামগ্রী অর্থাৎ ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, মাউস, কি-বোর্ড, স্ক্যানার এবং আসবাব (কম্পিউটার টেবিল, কম্পিউটার চেয়ার, আলমারি) সরবরাহ করার কথা। ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট এ লটের সামগ্রী ও সেবা সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় যৌথ প্রতিষ্ঠান ‘ফ্লোরা টেলিকম লিমিটেড অ্যান্ড বাংলাদেশ সায়েন্স হাউজ’। সামগ্রী সরবরাহের চুক্তিমূল্য ছিল ১ কোটি ১২ লাখ ৬১ হাজার ৩৭ ডলার (ডলারের তখনকার দর ৮৫ টাকা হিসাবে প্রায় ৯৫ কোটি ৭১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা)। সেবার মূল্য ৯৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নিম্নমানের কারণে ইতিমধ্যে পরিশোধ করা পুরো টাকাই গচ্চা গেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব আ ন ম তরিকুল ইসলামের সই করা চিঠিতে বলা হয়, ‘স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ না করে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন অপারেটিং সিস্টেম সরবরাহ করায় সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তাদের এ ধরনের কার্যকলাপে বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
দেওয়া হয়নি ৭৯০টি স্ক্যানার
নারায়ণগঞ্জের পাগলা উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আসবাবপত্র যা দিয়েছে, তা বেশি ভালো না। আর কম্পিউটারগুলো ভালো না খারাপ, তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। কিছুদিন আগে মন্ত্রণালয় থেকে লোকজন এসে সবকিছু দেখে গেছেন।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের অষ্টগ্রাম হাইস্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘সব জিনিস পাইনি। আসবাবপত্রগুলো তেমন সুবিধার মনে হচ্ছে না।’
জানা যায়, এখনো সরবরাহ করা হয়নি ১ হাজার ৮৪০টি কম্পিউটার টেবিল, ১১ হাজার ২০০টি চেয়ার, ৫৬০টি আলমারি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সেসিপের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ড. সামসুন নাহার বলেন, ‘আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। একটি লটে মালপত্রের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতে প্রায় ৯৭ কোটি টাকার সামগ্রী রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ না করার। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক, তারা (ঠিকাদার) শর্ত অনুযায়ী সফটওয়্যার দেয়নি। বেশ কিছু সামগ্রী এখনো দেওয়ার বাকি।’
পদাধিকারবলে সেসিপের পরিচালক মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি গত সোমবার বলেন, ‘এ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানসহ কেনাকাটা ও সরবরাহ পুরো বিষয়টিই ঘটেছে আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগে। কিছুদিন আগে এ প্রকল্পের একটি লটের কেনাকাটার অনিয়মের বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নিতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাঠপর্যায় থেকে অভিযোগ
জানা যায়, অভিযোগ ওঠার পর সরেজমিনে এর সঠিকতা দেখতে ২০২২ সালের ২১ জুলাই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে তিনটি প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী সব সামগ্রী সরবরাহ ও ইনস্টলেশন না করাসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে; পাশাপাশি এই কর্মসূচির আওতায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই অনুরূপ অনিয়মের চিত্র পরিলক্ষিত হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে কমিটি।
নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, শর্ত অনুযায়ী মোট দুইভাবে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর একটি ডলারে সামগ্রীর দামের জন্য, অন্যটি আইসিটি-সংক্রান্ত সেবা প্রদানের জন্য। এর মধ্যে পণ্যের জন্য আট দফায় পরিশোধ করা হয়েছে ৮০ লাখ ১৫ হাজার ১৮৪.৮৫ ডলার (তখনকার হিসাবে ৬৮ কোটি ১২ লাখ ৯০ হাজার ৬৪০ টাকা)। সেবার জন্য পরিশোধ করা হয়েছে ৮৬ লাখ ৩ হাজার ১০০ টাকা।
মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আগে প্রকল্প কর্মকর্তাদের নজরে আসার কথা, কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। মাঠপর্যায় থেকে অভিযোগ পেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্ত করেছে। এখন বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কিছু কর্মকর্তা তৎপর।
জানা যায়, সরবরাহকারীকে আগেই পরিশোধ করা হয়েছে বেশির ভাগ অর্থ। তদন্তাধীন অবস্থায় বাকি টাকা দেওয়ারও পাঁয়তারা চলছে।
এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক বলেন, সরকারি বিধিবিধানের বাইরে কিছুই হবে না।
মন্ত্রণালয়কেই দোষারোপ ফ্লোরার
ফ্লোরা টেলিকমের নির্বাহী পরিচালক শহিদুল ইসলাম অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এসব অভিযোগ সত্য নয়। সেরা প্রোডাক্টগুলোই সরবরাহ করেছি। খারাপ পণ্য সরবরাহ করা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক দরপত্র একবার পাস হয়ে গেলে মন্ত্রণালয় থেকে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। কেন তারা এখন এসব অভিযোগ তুলছে, তা বোধ্যগম্য নয়।’ লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যা দরপত্রে চেয়েছে, তা-ই দিয়েছি।’
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোহাম্মদ কায়কোবাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটি গুরুতর অপরাধ। সরকারের উচিত দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি দিন দিন সংস্কৃতিতে পরিণত হচ্ছে। যারা এই অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড না হয়।
রাহুল শর্মা, ঢাকা

দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী মানসম্পন্ন সামগ্রী সরবরাহ করা হয়নি। ৭৯০টি স্ক্যানার সরবরাহের কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি একটিও। কম্পিউটারে যুক্ত করা হয়েছে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার। সামগ্রী সরবরাহের সময়সীমা ছিল ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর। কোভিডের কারণে চার দফায় সাড়ে ১০ মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু সে সময়ের মধ্যেও সব সামগ্রী সরবরাহ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১৩ হাজারের বেশি আসবাব দেওয়াই হয়নি। এমন বড় আকারের অনিয়ম হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) প্রায় শতকোটি টাকার কেনাকাটায়।
অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে মন্ত্রণালয়ের তদন্তে। কয়েকটি স্কুলে খোঁজ নিয়েও অপর্যাপ্ত ও নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহের তথ্য মিলেছে।
দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী সামগ্রী সরবরাহ না করা এবং অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার সরবরাহ করায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করতে বলা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। সেই সঙ্গে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করায় জামানত বাজেয়াপ্ত করারও সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এসব সুপারিশ এখনো কার্যকর করেনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। তারা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা জানতে একটি কমিটি করেছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী সামগ্রী সরবরাহ না করার কারণেই অভিযুক্ত ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
নিম্নমানের কারণে পুরো টাকাই গচ্চা
জানা যায়, সেসিপের আওতায় ৬৪০টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রি-ভোকেশনাল ও ভোকেশনাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৩ মে দুটি প্যাকেজের আওতায় ১০টি লটে আন্তর্জাতিক দরপত্র ডাকা হয়। এগুলোর মধ্যে একটি লটে (জিডি-৫০ এ, লট-০১: পিভিআইপি ইকুইপমেন্ট ফর আইসিটি ট্রেড) ৩৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি সামগ্রী অর্থাৎ ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, মাউস, কি-বোর্ড, স্ক্যানার এবং আসবাব (কম্পিউটার টেবিল, কম্পিউটার চেয়ার, আলমারি) সরবরাহ করার কথা। ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট এ লটের সামগ্রী ও সেবা সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় যৌথ প্রতিষ্ঠান ‘ফ্লোরা টেলিকম লিমিটেড অ্যান্ড বাংলাদেশ সায়েন্স হাউজ’। সামগ্রী সরবরাহের চুক্তিমূল্য ছিল ১ কোটি ১২ লাখ ৬১ হাজার ৩৭ ডলার (ডলারের তখনকার দর ৮৫ টাকা হিসাবে প্রায় ৯৫ কোটি ৭১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা)। সেবার মূল্য ৯৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নিম্নমানের কারণে ইতিমধ্যে পরিশোধ করা পুরো টাকাই গচ্চা গেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব আ ন ম তরিকুল ইসলামের সই করা চিঠিতে বলা হয়, ‘স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ না করে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন অপারেটিং সিস্টেম সরবরাহ করায় সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তাদের এ ধরনের কার্যকলাপে বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
দেওয়া হয়নি ৭৯০টি স্ক্যানার
নারায়ণগঞ্জের পাগলা উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আসবাবপত্র যা দিয়েছে, তা বেশি ভালো না। আর কম্পিউটারগুলো ভালো না খারাপ, তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। কিছুদিন আগে মন্ত্রণালয় থেকে লোকজন এসে সবকিছু দেখে গেছেন।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের অষ্টগ্রাম হাইস্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘সব জিনিস পাইনি। আসবাবপত্রগুলো তেমন সুবিধার মনে হচ্ছে না।’
জানা যায়, এখনো সরবরাহ করা হয়নি ১ হাজার ৮৪০টি কম্পিউটার টেবিল, ১১ হাজার ২০০টি চেয়ার, ৫৬০টি আলমারি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সেসিপের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ড. সামসুন নাহার বলেন, ‘আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। একটি লটে মালপত্রের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতে প্রায় ৯৭ কোটি টাকার সামগ্রী রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ না করার। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক, তারা (ঠিকাদার) শর্ত অনুযায়ী সফটওয়্যার দেয়নি। বেশ কিছু সামগ্রী এখনো দেওয়ার বাকি।’
পদাধিকারবলে সেসিপের পরিচালক মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি গত সোমবার বলেন, ‘এ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানসহ কেনাকাটা ও সরবরাহ পুরো বিষয়টিই ঘটেছে আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগে। কিছুদিন আগে এ প্রকল্পের একটি লটের কেনাকাটার অনিয়মের বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নিতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাঠপর্যায় থেকে অভিযোগ
জানা যায়, অভিযোগ ওঠার পর সরেজমিনে এর সঠিকতা দেখতে ২০২২ সালের ২১ জুলাই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে তিনটি প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী সব সামগ্রী সরবরাহ ও ইনস্টলেশন না করাসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে; পাশাপাশি এই কর্মসূচির আওতায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই অনুরূপ অনিয়মের চিত্র পরিলক্ষিত হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে কমিটি।
নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, শর্ত অনুযায়ী মোট দুইভাবে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর একটি ডলারে সামগ্রীর দামের জন্য, অন্যটি আইসিটি-সংক্রান্ত সেবা প্রদানের জন্য। এর মধ্যে পণ্যের জন্য আট দফায় পরিশোধ করা হয়েছে ৮০ লাখ ১৫ হাজার ১৮৪.৮৫ ডলার (তখনকার হিসাবে ৬৮ কোটি ১২ লাখ ৯০ হাজার ৬৪০ টাকা)। সেবার জন্য পরিশোধ করা হয়েছে ৮৬ লাখ ৩ হাজার ১০০ টাকা।
মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আগে প্রকল্প কর্মকর্তাদের নজরে আসার কথা, কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। মাঠপর্যায় থেকে অভিযোগ পেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্ত করেছে। এখন বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কিছু কর্মকর্তা তৎপর।
জানা যায়, সরবরাহকারীকে আগেই পরিশোধ করা হয়েছে বেশির ভাগ অর্থ। তদন্তাধীন অবস্থায় বাকি টাকা দেওয়ারও পাঁয়তারা চলছে।
এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক বলেন, সরকারি বিধিবিধানের বাইরে কিছুই হবে না।
মন্ত্রণালয়কেই দোষারোপ ফ্লোরার
ফ্লোরা টেলিকমের নির্বাহী পরিচালক শহিদুল ইসলাম অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এসব অভিযোগ সত্য নয়। সেরা প্রোডাক্টগুলোই সরবরাহ করেছি। খারাপ পণ্য সরবরাহ করা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক দরপত্র একবার পাস হয়ে গেলে মন্ত্রণালয় থেকে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। কেন তারা এখন এসব অভিযোগ তুলছে, তা বোধ্যগম্য নয়।’ লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যা দরপত্রে চেয়েছে, তা-ই দিয়েছি।’
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোহাম্মদ কায়কোবাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটি গুরুতর অপরাধ। সরকারের উচিত দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি দিন দিন সংস্কৃতিতে পরিণত হচ্ছে। যারা এই অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড না হয়।

দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী মানসম্পন্ন সামগ্রী সরবরাহ করা হয়নি। ৭৯০টি স্ক্যানার সরবরাহের কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি একটিও। কম্পিউটারে যুক্ত করা হয়েছে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার। সামগ্রী সরবরাহের সময়সীমা ছিল ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর। কোভিডের কারণে চার দফায় সাড়ে ১০ মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু সে সময়ের মধ্যেও সব সামগ্রী সরবরাহ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১৩ হাজারের বেশি আসবাব দেওয়াই হয়নি। এমন বড় আকারের অনিয়ম হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) প্রায় শতকোটি টাকার কেনাকাটায়।
অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে মন্ত্রণালয়ের তদন্তে। কয়েকটি স্কুলে খোঁজ নিয়েও অপর্যাপ্ত ও নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহের তথ্য মিলেছে।
দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী সামগ্রী সরবরাহ না করা এবং অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার সরবরাহ করায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করতে বলা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। সেই সঙ্গে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করায় জামানত বাজেয়াপ্ত করারও সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এসব সুপারিশ এখনো কার্যকর করেনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। তারা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা জানতে একটি কমিটি করেছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী সামগ্রী সরবরাহ না করার কারণেই অভিযুক্ত ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
নিম্নমানের কারণে পুরো টাকাই গচ্চা
জানা যায়, সেসিপের আওতায় ৬৪০টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রি-ভোকেশনাল ও ভোকেশনাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৩ মে দুটি প্যাকেজের আওতায় ১০টি লটে আন্তর্জাতিক দরপত্র ডাকা হয়। এগুলোর মধ্যে একটি লটে (জিডি-৫০ এ, লট-০১: পিভিআইপি ইকুইপমেন্ট ফর আইসিটি ট্রেড) ৩৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি সামগ্রী অর্থাৎ ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, মাউস, কি-বোর্ড, স্ক্যানার এবং আসবাব (কম্পিউটার টেবিল, কম্পিউটার চেয়ার, আলমারি) সরবরাহ করার কথা। ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট এ লটের সামগ্রী ও সেবা সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় যৌথ প্রতিষ্ঠান ‘ফ্লোরা টেলিকম লিমিটেড অ্যান্ড বাংলাদেশ সায়েন্স হাউজ’। সামগ্রী সরবরাহের চুক্তিমূল্য ছিল ১ কোটি ১২ লাখ ৬১ হাজার ৩৭ ডলার (ডলারের তখনকার দর ৮৫ টাকা হিসাবে প্রায় ৯৫ কোটি ৭১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা)। সেবার মূল্য ৯৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নিম্নমানের কারণে ইতিমধ্যে পরিশোধ করা পুরো টাকাই গচ্চা গেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব আ ন ম তরিকুল ইসলামের সই করা চিঠিতে বলা হয়, ‘স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ না করে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন অপারেটিং সিস্টেম সরবরাহ করায় সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তাদের এ ধরনের কার্যকলাপে বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
দেওয়া হয়নি ৭৯০টি স্ক্যানার
নারায়ণগঞ্জের পাগলা উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আসবাবপত্র যা দিয়েছে, তা বেশি ভালো না। আর কম্পিউটারগুলো ভালো না খারাপ, তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। কিছুদিন আগে মন্ত্রণালয় থেকে লোকজন এসে সবকিছু দেখে গেছেন।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের অষ্টগ্রাম হাইস্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘সব জিনিস পাইনি। আসবাবপত্রগুলো তেমন সুবিধার মনে হচ্ছে না।’
জানা যায়, এখনো সরবরাহ করা হয়নি ১ হাজার ৮৪০টি কম্পিউটার টেবিল, ১১ হাজার ২০০টি চেয়ার, ৫৬০টি আলমারি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সেসিপের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ড. সামসুন নাহার বলেন, ‘আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। একটি লটে মালপত্রের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতে প্রায় ৯৭ কোটি টাকার সামগ্রী রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ না করার। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক, তারা (ঠিকাদার) শর্ত অনুযায়ী সফটওয়্যার দেয়নি। বেশ কিছু সামগ্রী এখনো দেওয়ার বাকি।’
পদাধিকারবলে সেসিপের পরিচালক মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি গত সোমবার বলেন, ‘এ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানসহ কেনাকাটা ও সরবরাহ পুরো বিষয়টিই ঘটেছে আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগে। কিছুদিন আগে এ প্রকল্পের একটি লটের কেনাকাটার অনিয়মের বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নিতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাঠপর্যায় থেকে অভিযোগ
জানা যায়, অভিযোগ ওঠার পর সরেজমিনে এর সঠিকতা দেখতে ২০২২ সালের ২১ জুলাই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে তিনটি প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী সব সামগ্রী সরবরাহ ও ইনস্টলেশন না করাসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে; পাশাপাশি এই কর্মসূচির আওতায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই অনুরূপ অনিয়মের চিত্র পরিলক্ষিত হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে কমিটি।
নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, শর্ত অনুযায়ী মোট দুইভাবে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর একটি ডলারে সামগ্রীর দামের জন্য, অন্যটি আইসিটি-সংক্রান্ত সেবা প্রদানের জন্য। এর মধ্যে পণ্যের জন্য আট দফায় পরিশোধ করা হয়েছে ৮০ লাখ ১৫ হাজার ১৮৪.৮৫ ডলার (তখনকার হিসাবে ৬৮ কোটি ১২ লাখ ৯০ হাজার ৬৪০ টাকা)। সেবার জন্য পরিশোধ করা হয়েছে ৮৬ লাখ ৩ হাজার ১০০ টাকা।
মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আগে প্রকল্প কর্মকর্তাদের নজরে আসার কথা, কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। মাঠপর্যায় থেকে অভিযোগ পেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্ত করেছে। এখন বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কিছু কর্মকর্তা তৎপর।
জানা যায়, সরবরাহকারীকে আগেই পরিশোধ করা হয়েছে বেশির ভাগ অর্থ। তদন্তাধীন অবস্থায় বাকি টাকা দেওয়ারও পাঁয়তারা চলছে।
এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক বলেন, সরকারি বিধিবিধানের বাইরে কিছুই হবে না।
মন্ত্রণালয়কেই দোষারোপ ফ্লোরার
ফ্লোরা টেলিকমের নির্বাহী পরিচালক শহিদুল ইসলাম অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এসব অভিযোগ সত্য নয়। সেরা প্রোডাক্টগুলোই সরবরাহ করেছি। খারাপ পণ্য সরবরাহ করা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক দরপত্র একবার পাস হয়ে গেলে মন্ত্রণালয় থেকে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। কেন তারা এখন এসব অভিযোগ তুলছে, তা বোধ্যগম্য নয়।’ লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যা দরপত্রে চেয়েছে, তা-ই দিয়েছি।’
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোহাম্মদ কায়কোবাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটি গুরুতর অপরাধ। সরকারের উচিত দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি দিন দিন সংস্কৃতিতে পরিণত হচ্ছে। যারা এই অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড না হয়।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী মানসম্পন্ন সামগ্রী সরবরাহ করা হয়নি। ৭৯০টি স্ক্যানার সরবরাহের কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি একটিও। কম্পিউটারে যুক্ত করা হয়েছে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার। সামগ্রী সরবরাহের সময়সীমা ছিল ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর। কোভিডের কারণে চার দফায় সাড়ে ১০ মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু সে সময়ের মধ্যেও সব
১৮ জানুয়ারি ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী মানসম্পন্ন সামগ্রী সরবরাহ করা হয়নি। ৭৯০টি স্ক্যানার সরবরাহের কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি একটিও। কম্পিউটারে যুক্ত করা হয়েছে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার। সামগ্রী সরবরাহের সময়সীমা ছিল ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর। কোভিডের কারণে চার দফায় সাড়ে ১০ মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু সে সময়ের মধ্যেও সব
১৮ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী মানসম্পন্ন সামগ্রী সরবরাহ করা হয়নি। ৭৯০টি স্ক্যানার সরবরাহের কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি একটিও। কম্পিউটারে যুক্ত করা হয়েছে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার। সামগ্রী সরবরাহের সময়সীমা ছিল ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর। কোভিডের কারণে চার দফায় সাড়ে ১০ মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু সে সময়ের মধ্যেও সব
১৮ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী মানসম্পন্ন সামগ্রী সরবরাহ করা হয়নি। ৭৯০টি স্ক্যানার সরবরাহের কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি একটিও। কম্পিউটারে যুক্ত করা হয়েছে অপ্রচলিত ও লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার। সামগ্রী সরবরাহের সময়সীমা ছিল ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর। কোভিডের কারণে চার দফায় সাড়ে ১০ মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু সে সময়ের মধ্যেও সব
১৮ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫