Ajker Patrika

সড়ক নেই, সেতু অচল

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৪১
সড়ক নেই, সেতু অচল

প্রায় দেড় বছর আগে মাদারীপুরের লক্ষ্মীগঞ্জের কুমার নদের ওপর প্রায় পৌনে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় সেতু। অথচ নির্মাণ হয়নি দুই পাশের সংযোগ সড়ক। সেতু দিয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পার হলেও চলাচল করতে পারে না যানবাহন। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে ৬টি ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। সেতুটি চালু হলে জেলা সদরের হাজারো মানুষের দীর্ঘ দিনের দুর্ভোগের অবসান ঘটবে বলে দাবি স্থানীয়দের।

মাদারীপুরে সেতু বিভাগের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের এপ্রিলে মাদারীপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকায় কুমার নদের ওপর ৯৯ মিটারের একটি সেতু নির্মাণ শুরু করে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর এলজিইডি। চলতি বছরের জুনে কাজের মেয়াদ শেষ হয়। ৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে দাবি করে হামীম ইন্টারন্যাশনাল নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ৫ কোটি এক লাখ টাকা বিল তুলে নিয়েছেন। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ। দীর্ঘদিনেও সেতুটি চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।

সংযোগ সড়কের জন্য জেলা প্রশাসন জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)। সেতুর দুই পাশে ১১০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণের লক্ষ্যে জমি অধিগ্রহণের জন্য তিন কোটি ৪২ লাখ টাকা জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় জমা দিয়েছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন।

লক্ষ্মীগঞ্জের বাসিন্দা বেলাল খান জানান, একটি পাকা রাস্তা ও কুমার নদীর ওপর সেতু এটাই ছিল এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি। কারণ সদর উপজেলার সঙ্গে পাঁচখোলা, রাস্তি, কালিকাপুরসহ অন্তত ৬টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতে একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। একটি সেতুর অভাবে স্বাধীনতার পর থেকে দুর্ভোগে পড়েন এসব এলাকার মানুষ। শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের যাতায়াতসহ কৃষি পণ্য আনা-নেওয়ায় ভোগান্তি ছিল চরমে। তবে শেষ পর্যন্ত সেতু হলেও দুর্ভোগ কমেনি, বরং বেড়েছে। কারণ সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি ব্যবহার করতে পারছে না এলাকাবাসী। তার ওপর পায়ে হাঁটার যে রাস্তা রয়েছে সেটিও বর্ষা মৌসুমে কর্দমাক্ত হয়ে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা রহিমন আক্তার নামে এক গৃহিণী বলেন, ‘সেতু নির্মাণের আগে নৌকায় করে নদী পার হয়েছি। এখনো সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় একইভাবে নদী পারাপার হচ্ছি। সেতুর সংযোগ সড়কটি চলাচলের উপযুক্ত নয়। মানুষ নৌকায় পার হয় অথবা ঝুঁকি নিয়ে খানাখন্দে ভরা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা চাই সেতুটি দ্রুত চালু হোক।’

স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল বলেন, ‘নদীর ওপারের প্রায় ৬টি ইউনিয়নে হাজারো মানুষের বসবাস। হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ সবই নদীর ওপারে। তাই প্রতিদিনই কোনো না কোনো কাজে আমাদের ওপারে যেতে হয়। ২০১৮ সালে সেতুটি নির্মাণ হলেও এই সেতু আমরা ব্যবহার করতে পারছি না।’

এ ব্যাপারে মাদারীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার বলেন, ‘সংযোগ সড়কের জন্য জেলা প্রশাসন জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় পরবর্তী কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। কাজ বুঝিয়ে দিলে বাকি কাজ করে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।’

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণে জমির মালিকানা নিয়ে জটিলতা থাকলেও দ্রুত তা সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করি, দ্রুত সেতুটি চালু করা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালদূষণকারী কারখানা পেল পরিবেশবান্ধব পুরস্কার

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

অপারেশন রেড ওয়েডিং ও নার্নিয়া: ইরানের সেনা কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানীদের হত্যায় ইসরায়েলি অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত