Ajker Patrika

ঠান্ডাজনিত রোগে কাতর শিশু

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৩৬
ঠান্ডাজনিত রোগে কাতর শিশু

শীতের শুরুতেই খুলনায় শিশুদের মধ্যে বেড়েছে জ্বর, সর্দি-কাশি, কোল্ড ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। খুলনা শিশু হাসপাতালে প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। বহির্বিভাগে বাড়ছে রোগীদের ভিড়।

খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শিশুদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে থেকে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। শিশু হাসপাতালসহ প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধের মজুত রাখা হয়েছে। ১১৪টি মেডিকেল টিমকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মাঠকর্মীরা জেলার সাধারণ মানুষদের বাড়িতে গিয়ে শীতের সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন নিয়ে।

গতকাল শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের ব্যবধানে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শিশু হাসপাতালের পাশাপাশি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালেও শিশু রোগীর চাপ রয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে বহির্বিভাগে ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে শিশু রোগী ভর্তির হার বেড়েছে। এসব রোগ থেকে বাঁচাতে শিশুদের ঠান্ডা থেকে দূরে ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

খুলনা শিশু হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. কামরুজ্জামান জানান, গত এক সপ্তাহে হাসপাতালটিতে রোগীর চাপ বেশ বেড়েছে। হাসপাতালে যেসব রোগী আসছে তাদের বেশির ভাগের বয়স ছয় মাস থেকে তিন বছর। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ২৬০ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এ ছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ জন করে রোগী আসছে। এক সপ্তাহ আগে হাসপাতালে ২৪০ জন রোগী ভর্তি ছিল। বহির্বিভাগে গড়ে ৩০০ জন রোগী আসত। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অধিকাংশ জ্বর, সর্দি-কাশি, কোল্ড ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত দেড় বছরের ফাহামিদ হাসান নামের এক শিশুর মা ইতি খাতুন বলেন, ছেলের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে নিয়ে সাতক্ষীরা থেকে খুলনা শিশু হাসপাতালে এসেছি। অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে ছেলেকে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করি। দুদিন ধরে এখানে আছি। আমাদের পাশাপাশি আরও অনেকেই তাঁদের বাচ্চাদের নিয়ে এখানে আছেন।

মো. কামরুজ্জামান আরও জানান, শীতের শুরুতে হঠাৎ ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় শিশুরা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শীতের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই শীতের শুরুতে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ে। অভিভাবকদের অসচেতনতায় শিশুরা ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। এ সময় বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের ঠান্ডা লাগানো যাবে না। আবার বেশি গরম পোশাক পরালে অনেক সময় শিশু ঘেমে গিয়ে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। এক কথায় শীতের সময় শিশুকে এমনভাবে রাখতে হবে যাতে তাঁর ঠান্ডা না লাগে।’

সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ‘শীতের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডাজনিত রোগ বাড়তে শুরু করে। এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হয় শিশু ও বয়স্ক মানুষ। তবে একটু সতর্ক হলে ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে মানুষ রক্ষা পেতে পারে। মানুষদের সতর্ক এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ইতিমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

সিভিল সার্জন আরও জানান, খুলনা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। শতাধিক মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সব হাসপাতালে রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি সবাইকে শীতের সময়টাতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি কেউ অসুস্থ হলে কাছাকাছি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা হাসপাতালে যোগাযোগের অনুরোধ জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

এপিএসের বেতন ১ বছরে বেড়েছে ১৮ বছরের সমান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত