Ajker Patrika

রশীদ করীমকে সুনীলের চিঠি

সম্পাদকীয়
আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪: ১৫
রশীদ করীমকে সুনীলের চিঠি

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কখনোই ভাবেননি যে ঢাকায় আসতে হলে এত কাঠখড় পোড়াতে হবে তাঁকে। আগে যখন এসেছেন, তখন এয়ারপোর্টে কেউ তাঁকে আটকে রাখেনি। ইমিগ্রেশন পার হয়েছেন অন্যরা যেভাবে পার হয়, সেভাবেই। কিন্তু ১৯৮৭ সালে এয়ারপোর্টে নেমে বিপদে পড়লেন তিনি।

সে সময় জেনারেল এরশাদের শাসনামল। সুনীল একজন বিখ্যাত সাহিত্যিক, তাঁর হাতে দেশভ্রমণের সব বৈধ কাগজপত্র আছে, কিন্তু ঢাকার এয়ারপোর্টে তাঁকে আটকে রাখা হলো পাক্কা ছয় ঘণ্টা। এ কথা অনেকেই জানেন, সুনীলের জন্ম বাংলাদেশেরই ফরিদপুরে। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে অন্য অনেকের মতোই তিনি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাহায্যের হাত। অথচ এয়ারপোর্টে তাঁকে যেন কেউ চেনেই না। অথবা চেনে বলেই তাঁকে যথেষ্ট হেনস্তা করা হচ্ছে। পরিহাসের ব্যাপার হলো, সে সময় পাকিস্তানের তাঁবেদার গোলাম আযম পাকিস্তানের নাগরিক হয়েও বহাল তবিয়তে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বসবাস করে যাচ্ছিলেন ঢাকায়। তাঁর এই বেআইনি অবস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। এরশাদও সেটা বহাল রেখেছিলেন। এরপর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কার্যক্রমের মাধ্যমে এগিয়েছিল সে ইতিহাস। সে কথা এখানে নয়।

সুনীল ছাড়া পেলেন ঢাকায় থাকা বন্ধুদের সহায়তায়। স্থপতি রবিউল হুসাইন ফোন করলেন মওদুদ আহমদকে। বিমানবন্দরে ছুটে গেলেন বেলাল চৌধুরী, রফিক আজাদ, রবিউল হুসাইন প্রমুখ। আমাদের সংকীর্ণতা আর হীনম্মন্যতার শিকল থেকে ছাড়িয়ে আনলেন সুনীলকে। ঢাকার বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হলেন সুনীল। আড্ডা দিলেন।

এরপরও অনেকবার ঢাকায় এসেছেন সুনীল। এয়ারপোর্টে হেনস্তার কথা কোথাও উল্লেখ করেননি। তবে ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের গদ্যশিল্পী রশীদ করীমকে চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘আমি ঢাকায় যাই, তুমি, শামসুর রাহমান, বেলাল, রফিক এই রকম কয়েকজনের সঙ্গে আড্ডা দিতে। বাংলাদেশের সঙ্গে এখনও আমার নিশ্চিত নাড়ির টান রয়েছে।…এখন শুনছি আমার ঢাকা যাওয়াটা অনেকে ভালো চোখে দেখেন না।
তা যদি হয়, তাহলে আর যাব না। তোমরা এসো কলকাতায়, এখানেই আড্ডা হবে।’

সূত্র: ইকবাল হাসান, দূরের মানুষ, কাছের মানুষ, পৃষ্ঠা ২৫-২৭

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত