Ajker Patrika

হায়দার আনোয়ার জুনো

সম্পাদকীয়
Thumbnail image
হায়দার আনোয়ার জুনো

হায়দার আনোয়ার জুনোর জন্ম ১৯৪৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর কলকাতায়। তাঁদের পৈতৃক বাড়ি নড়াইলের বরাশুলা গ্রামে। বাবা হাতেম আলী খান ছিলেন একজন প্রকৌশলী। প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ সৈয়দ নওশের আলী ছিলেন তাঁর নানা। কমিউনিস্ট নেতা হায়দার আকবর খান রনো ছিলেন তাঁর বড় ভাই। স্কুলে পড়াকালীন দুই ভাই বামপন্থী ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।

জুনো ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনে যুক্ত হয়ে কারাবরণ করেন। তখন তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পরে তিনি এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালে বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন গঠিত হলে তিনি এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে রাজনীতিকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন।

স্বাধীনতার পর জুনো লেনিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইউনাইডেট পিপলস পার্টির (ইউপিপির) সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক হন। এরপর তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন।

একাত্তর সালে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। নরসিংদীর শিবপুরে তাঁরা বিশেষ গেরিলা বাহিনী গঠন করেন। সেখানে বোমা তৈরির কাজটি তিনি নিজ হাতে করেছেন। তাঁরা ‘পূর্ব বাংলা বিপ্লবীদের সমন্বয় কমিটি’র হয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধ সংঘটিত করেছিলেন।

একসময় তিনি সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে পুরোপুরি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ছিলেন সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সৃজন’-এর সভাপতি। বৃহৎ আকারে সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার অভিপ্রায়ে বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন মিলে গঠিত হয় ‘গণ-সংস্কৃতি ফ্রন্ট’। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে তিনি এই ফ্রন্টেরও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি ‘বাংলাদেশ-কিউবা সংহতি কমিটি’র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি বাংলায় পদার্থবিজ্ঞানের ওপর বই লেখা ছাড়াও লিখেছেন ‘শিবপুরের রণাঙ্গন’, ‘আগুন ঝরা সেই দিনগুলি’। ‘সময়-দুঃসময়’ নামে একটি উপন্যাসও আছে তাঁর।

২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন হায়দার আনোয়ার জুনো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত