Ajker Patrika

ট্রেনের খবর

সম্পাদকীয়
ট্রেনের খবর

রাজধানীতে মেট্রোরেল চালু আর কক্সবাজারে রেলস্টেশন উদ্বোধনের খবর দেশবাসীকে পুলকিত না করে পারে না। যোগাযোগ সহজ, ভ্রমণসাশ্রয়ী—এই বিশ্বাস নিয়েই মানুষ রেল কর্তৃপক্ষের ওপর আস্থা রাখে, স্বস্তিদায়ক ভ্রমণের জন্য বেছে নেয় ট্রেনকে। অবশ্য জনগণ এ-ও জানে, ‘রেলে কলিশন হয়’। তবে কলিশন ছাড়াও যে রেলপথে দুর্ঘটনা হতে পারে, সে তথ্য হয়তো অনেকের কাছে ঘোলাটে।

তথ্যটা পরিষ্কার হয় আজকের পত্রিকার একটি খবর পড়লে। জানা যায়, কীভাবে একটি ট্রেনের বগি সাজানো হয়। বগিগুলো বসানো থাকে ট্রলির ওপর। ট্রলি স্থাপন করা হয় চাকার ফ্রেমে। এর মাঝে থাকে স্প্রিং এবং সূক্ষ্ম কিছু যন্ত্রাংশ। পুরো বগির ওজন বহন করে স্প্রিং।

ট্রেন চলাচল করলে ওই সব সূক্ষ্ম যন্ত্রাংশ, স্প্রিং নষ্ট হতে থাকে। চাকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে আগুনও লেগে যেতে পারে। বোঝাই যাচ্ছে ব্যাপারটা যেনতেন নয়। তাহলে কী করণীয়?

ট্রেন পরীক্ষকের মতে, এগুলো নিয়মিত সার্ভিসিং করতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ বছর পরপর স্প্রিং পরিবর্তন করতে হয়। ব্যস, এতটুকু দায়িত্ব রেল কর্তৃপক্ষ পালন করে দিলেই যাত্রীদের আতঙ্কিত হওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকে না। কিন্তু কী করছে আসলে কর্তৃপক্ষ?

নীলফামারী থেকে সৈয়দপুর হয়ে খুলনা যায় রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস। জনবল না থাকায় ঠিকঠাক সার্ভিসিং করা হচ্ছে না ট্রেন দুটির। বগিগুলোর স্প্রিং পরিবর্তন করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। স্প্রিং পরিবর্তন না করে স্প্রিংয়ের নিচে প্লেট ঢুকিয়ে প্যাকিং দিয়ে উচ্চতা বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই প্যাকিং খুলে যাচ্ছে। বগিগুলো ভার বহন করতে পারছে না। অতিরিক্ত ঝাঁকুনি হচ্ছে ট্রেনে। এ ছাড়া সূক্ষ্ম যন্ত্রাংশ ও চাকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ট্রেন লাইনচ্যুত হচ্ছে। পুরোনো স্প্রিং ও চাকা পরিবর্তন না করে ট্রেন দুটি চললে যে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, সেটা বুঝতে আর বাকি নেই।

ব্যবহারের অনুপযোগী ট্রেন দুটিতে প্রতিদিন আট থেকে নয় হাজার যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। কর্তৃপক্ষ কি ভেবে দেখেছে এই সংখ্যাটা যে নেহাত কম নয়? এত এত যাত্রীর সুরক্ষা দেওয়া নিশ্চয়ই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দায়িত্বের বাইরে নয়।

যাত্রীদের কাছে আছে অভিযোগের ঝুলি। ট্রেনের চেয়ার-জানালা ভাঙা, টয়লেটে থাকে না পানি, কাজ করে না এসি, শিডিউল বিপর্যয় তো নিয়মিত বিষয়। আবার যাত্রীদের ট্রেনে বসিয়ে রেখে বগি মেরামত করানোর কাজটা খুব হাস্যকর!

সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য রেলওয়ে মেন’ সিরিজটি ১৯৮৪ সালে হয়ে যাওয়া ভারতের ভোপাল ট্র্যাজেডির কথা মনে করিয়ে দেয়। ওই সময় রেলের কিছু বিবেকবান কর্মকর্তা তাঁদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছিলেন বলেই ভোপাল শহরে এখনো মানুষের বসতি আছে। ভোপাল জংশনের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় সেই কর্মকর্তারা যতটা নড়েচড়ে বসেছিলেন, বিপদের আশঙ্কা করে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন, সেই শিক্ষাটা রেল কর্তৃপক্ষ ও কর্মকর্তাদের হোক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত