Ajker Patrika

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক, অভিভাবক শ্রমিকদের সংহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ৪৯
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক, অভিভাবক শ্রমিকদের সংহতি

শিক্ষার্থীদের সারা দেশে গণপরিবহনে অর্ধেক ভাড়া ও নিরাপদ সড়কের দাবির আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, পরিবহন শ্রমিক ও অভিভাবকেরা। তাঁরা বলেছেন, এই আন্দোলন শুধু শিক্ষার্থীদের একার নয়, দেশের প্রতিটা মানুষ এর সঙ্গে মানসিকভাবে যুক্ত।

রাজধানীর রামপুরা ব্রিজে গতকাল শনিবার বিকেলে শিক্ষার্থীদের এক সমাবেশে যোগ দিয়ে এই একাত্মতা প্রকাশ করেন শিক্ষক, পরিবহন শ্রমিক ও অভিভাবকেরা। এ সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে যারা বাধা দেয়, যারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়; সাধারণ জনগণ তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়। কারণ, শিক্ষার্থীরা যেসব দাবিতে আন্দোলন করছে, তার প্রতিটিই যৌক্তিক এবং ন্যায্য দাবি।’ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী প্রতিদিন কথা বলেন; কিন্তু সড়ক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছু বলেন না। সরকার হাজার, লক্ষ, কোটি টাকা দিয়ে দিচ্ছে একটা গোষ্ঠীকে। বাসমালিকেরা যা বলে, সরকার তা-ই শোনে। বাসমালিকেরা কোনো দাবি করলে পূরণ করতে এক মুহূর্তও সময় লাগে না। গার্মেন্টস মালিকেরা কোনো দাবি করলে, তা পূরণে এক মুহূর্ত সময় লাগে না। অথচ জনগণ যখন তার ন্যায্য দাবি করে, তখন মাস যায়, বছর যায়; সেই দাবি পূরণ হয় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যে কোনো আন্দোলনেই একটা বিরতি আনতে হয় এবং সময় দিতে হয়। এ জন্য সরকারকে একটা নির্দিষ্ট সময় দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়া উচিত। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না-হলে আবারও তাদের রাজপথে নামতে হবে।’

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকা জেলা ট্যাক্সি, ট্যাক্সি কার, অটো টেম্পো, অটোরিকশাচালক-শ্রমিক ইউনিয়নের সহসাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক জায়গাতেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হয়, সেখানে চালক-শ্রমিকদের দোষারোপ করা হয়। কিন্তু রামপুরা বাড্ডার শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছে, সেখানে তারা চালক-শ্রমিকদের অধিকারের কথাও বলছে। এ জন্য আমরা শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’ তিনি বলেন, ‘বিআরটিএতে লাইসেন্স করতে গেলে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। রামপুরা, বাড্ডায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই সমস্যাগুলোর কথাও তুলে ধরছে। এ জন্য শ্রমজীবী, পেশাজীবী সবারই শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া উচিত।’

এ সময় রফিকুল ইসলাম পরিবহন শ্রমিকদের নয় দফা দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে চালক-শ্রমিকদের লাইসেন্সে ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করা; চালক-শ্রমিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র দেওয়া; কর্মঘণ্টা ঠিক করা; পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার মতো বেতন-মজুরির ব্যবস্থা করা; চালকদের জীবনবিমা ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা; সন্তানদের অর্ধেক বেতনে স্কুলে পড়ার সুযোগ দেওয়া।

সমাবেশে যোগ দেওয়া পরিবহন শ্রমিকেরা বলেন, রক্ত-মাংসের পরিবহন শ্রমিক-চালকদের কোনো বিমা দেওয়া হয় না। অথচ গাড়ির বিমা হয়। দিনরাত কাজ করে শ্রমিক-চালকেরা যে মজুরি পান, তা দিয়ে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা যায় না।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার করেছিল। একে একে প্রায় সব অঙ্গীকার পূরণ করলেও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত হয়নি। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, স্বাধীনতার আগে-পরেও আমরা হাফ ভাড়ায় চলেছি। কিন্তু এখন চলতে পারি না।’

শিক্ষার্থীদের পক্ষে খিলগাঁও মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া সমাবেশ শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি জানান, সরকারকে আপাতত ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে। এর মধ্যে দাবি না-মানলে রাজপথে নতুন করে আন্দোলন শুরু হবে। এতে শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত