Ajker Patrika

পাটগ্রামে মৃতপ্রায় ৬ নদী

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ১৯: ১৬
পাটগ্রামে মৃতপ্রায় ৬ নদী

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ছয়টি নদী মৃতপ্রায়। এ গুলোতে পানি নেই বললেও চলে। নদীগুলো পানি শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হওয়ার পথে।

পাটগ্রাম উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলো হলো ধরলা, তিস্তা, সানিয়াজান, শিংগীমারী, চেনাকাটা, শংলী নদী। স্থানীয়দের মতে, একসময়ের খরস্রোতা এসব নদী খনন করে রক্ষা করা না হলে অচিরেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের দিকে প্রবাহিত নদীগুলোতে ভারতের একের পর এক বাঁধ ও আন্তর্জাতিক নদীশাসন আইন অমান্য করে একতরফা নদীশাসন করায় দেশের এসব নদী হারিয়ে যেতে বসেছে। দীর্ঘদিন থেকে পানি প্রবাহ ঠিকমতো না থাকায় পলি ও বালু পড়ে অধিকাংশ নদী ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতে ও ভারতের ছেড়ে দেওয়া পাহাড়ি ঢলের পানি উপচে পড়ে নদী এলাকা প্লাবিত হয়।

গত বছরের ২০ অক্টোবর বর্ষা মৌসুমে দহগ্রাম ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত সানিয়াজান ও তিস্তা নদীর পানি আকস্মিক বৃদ্ধি পেয়ে কয়েকশ একর ধান খেত, দিঘির মাছ, রাস্তা, সেতুর ব্যাপক ক্ষতি হয়।

স্থানীয়রা জানান, পদ্মা নদীর ওপর ভারতের ফারাক্কা বাঁধ ও তিস্তা নদীর ওপর গজলডোবা ব্যারাজ নির্মাণ করে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় রংপুর-লালমনিরহাট অঞ্চলের বেশ কিছু নদীর মতো পাটগ্রাম উপজেলার ৬টি নদী মরা খালে পরিণত হওয়ার পথে। এই অবস্থা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের অধিকাংশ নদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বলে স্থানীয়দের আশঙ্কা।

গজলডোবা ব্যারাজের মাধ্যমে ভারত আন্তর্জাতিক নদী শাসন আইন অমান্য করে একচেটিয়াভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে পাটগ্রাম উপজেলার তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান, শিংগীমারী, চেনাকাটা, শংলী নদীর নাব্যতা হারিয়ে মাইলের পর মাইল বালু চর পড়ে সরু খালে পরিণত হয়েছে। এসব নদীতে মানুষ এখন ইরি-বোরো, ভুট্টা, তামাক, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে অবৈধ দখলদারেরা নদীর তীরের এলাকা দখল করে নিচ্ছে।

ভারত যদি আন্তর্জাতিক নদী শাসন মেনে নদী শাসন ও পানি নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করত তাহলে বাংলাদেশের দিকে প্রবাহিত নদীগুলোতে পানি প্রবাহ বাড়ত দাবি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘নদী হারিয়ে যাওয়ার বড় আরেকটি কারণ হলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনিতেই পানি প্রবাহের উৎস কমে যাওয়া। ভারতেও পানি প্রবাহ কম। যা পানি প্রবাহ আছে তাঁরা (ভারতীয় কর্তৃপক্ষ) আন্তঃনদী সংযোগের মাধ্যমে অন্য জায়গায় নিয়ে তাঁদের চাষাবাদে ব্যবহার করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত