Ajker Patrika

সাবিনাদের আবারও ‘বিদ্রোহ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৩, ১৪: ৪৫
Thumbnail image

নেপালের বিপক্ষে দুটি ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলে ছুটি কাটাতে বাড়িতে গেছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সদস্যরা। এশিয়ান গেমসকে সামনে রেখে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বাফুফে ভবনের ক্যাম্পে ফেরার কথা ফুটবলারদের। তবে নারী ফুটবলারদের ‘আলটিমেটামে’ এশিয়ান গেমসের প্রস্তুতি নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

ছুটিতে যাওয়ার আগে নিজেদের দাবিদাওয়ার কথা বাফুফের কাছে লিখিত আকারে দিয়ে গেছেন নারী ফুটবলাররা। সাবিনা খাতুনদের এসব চাওয়া অবশ্য পুরোনোই। ফুটবলারদের দাবিদাওয়ার মধ্যে আছে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, পুরুষ ফুটবলারদের সমান সুযোগ-সুবিধা, পুষ্টিকর খাবার, উন্নত সরঞ্জামসহ ছয় দফা দাবি। পুরোনো এসব চাওয়ার সঙ্গে নতুন যোগ হয়েছে বেশি বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলানোর দাবি। ছুটিতে যাওয়ার আগে নারী ফুটবলাররা জানিয়ে গেছেন, তাঁদের দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পে আর ফিরছেন না তাঁরা!

গত সেপ্টেম্বর সাফ জয়ের পর বেতন বৃদ্ধির দাবি নিয়ে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন সাবিনা খাতুনেরা। দাবি পূরণের আশ্বাসও দিয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি। তবে ১০ মাসে দাবি পূরণ না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন নারী ফুটবলাররা। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ ফুটবলারই ছুটিতে গেছেন ক্যাম্পে না ফেরার মানসিকতা নিয়ে। বাফুফে তাঁদের দাবি পূরণ না করলে দলীয়ভাবেই বিদ্রোহের ঘোষণা ফুটবলারদের।

এশিয়ান গেমসের জন্য নারী দলের কোচ সাইফুল বারী টিটুর নাম এখনো নিবন্ধন করানো সম্ভব হয়নি, অন্যদিকে নারী ফুটবলারদের ক্ষোভের আগুন। সব মিলিয়ে হযবরল অবস্থা দেশের নারী ফুটবলে।

এশিয়ান গেমসে নারী ফুটবল দলের অংশগ্রহণ নিয়ে পরিস্থিতি বেশ ঘোলাটে হতে পারে, আশঙ্কা বাফুফের এক কর্মকর্তার। এশিয়ান গেমসে অংশ নিতে চান নারী ফুটবলাররাও। ১০ মাস পর নেপালের বিপক্ষে দুই ম্যাচ খেলে জড়তা কেটে যাওয়ায় খুশি ফুটবলাররা। তবে চাইলেও নিজ ইচ্ছায় ক্যাম্পে ফেরা সম্ভব নয়, জানালেন এক ফুটবলার। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, ‘আমরা ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক। সামনে আমাদের এশিয়ান গেমসের ম্যাচ আছে। তবে আমি চাইলেই তো হবে না, চিঠির বিষয়টি আমাদের সবার দলীয় সিদ্ধান্ত। সবাই চাইলেই ক্যাম্পে যোগ দেব।’ আরেক ফুটবলার সোজা বলে দিলেন, ‘দাবি না মানলে আমরা ক্যাম্পে ফিরব না।’

বর্তমানে নারী ফুটবলাররা তিন ক্যাটাগরিতে মাসিক বেতন পেয়ে থাকেন। সিনিয়র ফুটবলার হিসেবে সাবিনা খাতুন মাসিক বেতন পান ২০ হাজার টাকার মতো। জাতীয় দলের বাকি ফুটবলারদের বেতন ১০ হাজার টাকা। বয়সভিত্তিক ফুটবলারদের বেতন আরও কম। ১০ হাজার টাকায় বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবনযাপন কঠিন, সে কথাও মনে করিয়ে দিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলার, ‘আমাদের দেওয়া হয় মাত্র ১০ হাজার টাকা। এই টাকায় আমাদের নিজেদেরও চলতে হয়, পরিবারকেও পাঠাতে হয়। নারী ফুটবলারদের নানা প্রয়োজনীয় জিনিসের দরকার হয়। এ টাকায় কী হয়?’ ঘোলাটে পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তিনি শুধু বললেন, ‘আমাদের এশিয়ান গেমসের প্রস্তুতি আছে। দেখি কী হয়।’

নারী ফুটবলারদের এই হুমকি সতর্কতার সঙ্গে সামলানোর চেষ্টা করছে বাফুফে। ফুটবলারদের দাবিদাওয়া নিয়ে বাফুফে নারী ফুটবল বিভাগের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ বললেন, ‘আমরা তাদের দাবি পেয়েছি। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি।’

এ বছরে আরও একবার ‘বিদ্রোহ’ করেছিলেন সাবিনা খাতুনেরা। বিসিবি ও বাফুফের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার ঘোষণা দেওয়া অর্থ না পাওয়ায় অলিম্পিক বাছাইয়ের অনুশীলন বন্ধ রেখেছিলেন ফুটবলাররা। গত মার্চে এই দলকে পরে অলিম্পিক বাছাইয়ে না পাঠিয়ে তোপের মুখে পড়েছিল বাফুফে। নারী ফুটবলাররা অনেকে মনে করেন, তাঁদের সেই বিদ্রোহের শাস্তি দিতেই অলিম্পিকে দল পাঠায়নি বাফুফে। এবার তারা কী করে, সেটাই দেখার।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণের ১৩০০ কোটির এক টাকাও দেননি হলিডে ইনের মালিক

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

গণ–সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন বিএনপি নেতা

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত