Ajker Patrika

আনারসের রাজ্যে কফি চাষ

আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
Thumbnail image

আনারসের রাজ্যখ্যাত টাঙ্গাইলের মধুপুরে ভিনদেশি ফসল কফি চাষে সফল হয়েছেন বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকপ্রাপ্ত ছানোয়ার হোসেন। তাঁর সফলতা দেখে কৃষি বিভাগ কফি চাষ সম্প্রসারণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। শৌখিন চাষিরাও এখন কফি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

ছানোয়ার হোসেন মধুপুর উপজেলার মহিষমারা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ১৯৯২ সালে স্নাতক পাস করে সিলেটে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হন। সেখান থেকে ফিরে সুনামগঞ্জ গারোবাজার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে শিক্ষকতা ছেড়ে কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেন। বর্তমানে তিনি কফি, পেয়ারা, বরই, মাল্টা, ড্রাগনসহ বিভিন্ন ফল চাষ করে সফল হয়েছেন। ছানোয়ার হোসেন ২০২৩ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক লাভ করেন।

ছানোয়ার হোসেন জানান, ২০১৭ সালে বান্দরবানের রাইখালী হর্টিকালচার সেন্টার থেকে ২০০ রোবাস্ট জাতের কফির চারা এনে নিজ গ্রাম মহিষমারায় চাষ শুরু করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন উপহার দেন অ্যারাবিকান জাতের ১০০ চারা। কৃষি বিভাগও কিছু চারা দিয়ে সহযোগিতা করে। টানা দুই বছর পরিচর্যার পর ২০১৯ সালে কফিগাছে ফুল আসে।

ছানোয়ার হোসেন আরও জানান, কফির গুটি ধরে। ছানোয়ারের চোখেমুখে ফুটে উঠে আনন্দের ঝিলিক। কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক পরিদর্শন করেন ছানোয়ারের কফিবাগান। তিনি মুগ্ধ হয়ে ছানোয়ার হোসেনকে ভিয়েতনামে পাঠিয়ে কফি চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতির ওপর প্রশিক্ষণ করিয়ে আনেন। সেই থেকে পুরো উদ্যমে চলে কফি চাষ। বর্তমানে তাঁর বাগানে ৫০০ কফিগাছ রয়েছে।

মহিষমারা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছানোয়ারের বাড়ির প্রবেশদ্বারে ড্রাগন ফলের বাগান। বাড়ির উত্তরে পেয়ারা আর পূর্বে কফির বাগান। গাছে কফির গুটি চোখে পড়ে। সবুজ চত্বরে গৌর বর্ণের কফির গুটি কয়েক দিন পরেই সংগ্রহ করে শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হবে।

ছানোয়ার হোসেন জানান, মার্চ মাসে কফিগাছে ফুল আসে। এপ্রিলে ফল ধরে। নভেম্বরে পেকে যায়। এগুলো শুকিয়ে খোসা পরিষ্কার করা কফি বিন বিক্রি হয় ১৫০ টাকা কেজি দরে। আর প্রক্রিয়াজাতকরণ করার পর বিক্রি হয় আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা দরে। গত বছর দেড় লাখ টাকার কফি বিক্রি হয়েছিল। এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

মধুপুরের বাসিন্দা আব্দুর রহমান, কলেজশিক্ষক শহিদুল ইসলাম কফি চাষ করার জন্য পরামর্শ নিতে এসেছেন ছানোয়ারের কাছে। তাঁরাও কফি চাষ করবেন বলে জানান।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, কফি ও কাজুবাদাম উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের কফি চাষে উদ্বুদ্ধ করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এতে কৃষকেরা কফি চাষে এগিয়ে আসছেন। কয়েকজন কফিবাগান করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত