Ajker Patrika

কাজী নূর-উজ্জামান

সম্পাদকীয়
কাজী নূর-উজ্জামান

মুক্তিযুদ্ধে কাজী নূর-উজ্জামান ছিলেন ৭ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি সরকার কর্তৃক বীর উত্তম উপাধি পেয়েছিলেন। কিন্তু ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রধান কৃতিত্ব গণমানুষের’—এই যুক্তিতে আজীবন অটল থেকে তিনি এই উপাধি গ্রহণ করেননি এবং কোথাও তা ব্যবহারও করেননি।

তাঁর জন্ম ১৯২৫ সালের ২৪ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার চাটদহ গ্রামে। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়ার সময় তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় নৌবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৬ সালে জওহরলাল নেহরুর আহ্বানে তিনি নৌবাহিনী থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।

এরপর দেরাদুনে রয়্যাল ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমি থেকে কমিশন লাভ করেন। দেশভাগের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে এসে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৯ সালে তিনি ইংল্যান্ড থেকে আর্টিলারি কোর্স সমাপ্ত করেন। ১৯৫৬ সালে মেজর পদে পদোন্নতি পান। আইয়ুব খান সামরিক আইন জারি করলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাদানুবাদে লিপ্ত হওয়ার কারণে তাঁকে প্রেষণে ইস্ট পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনে (ইপিআইডিসি) বদলি করা হয়েছিল। ১৯৫৮ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পাওয়ার কিছুদিন পর তিনি সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন।

তিনি মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে গঠন করেন ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক কমিটি। এ কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেন। তিনি ছিলেন সব গণ-আন্দোলনের প্রথম সারির সৈনিক। ড. আহমদ শরীফ প্রতিষ্ঠিত স্বদেশ চিন্তা সংঘের প্রতিষ্ঠার সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন।

একই সঙ্গে ছিলেন লেখকশিবির ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ফ্রন্টের সদস্য। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ১৯৯০ সালে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গণ-আদালতের তিনি ছিলেন অন্যতম বিচারক।

কাজী নূর-উজ্জামান রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে—স্বদেশ চিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ ও রাজনীতি, বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতি, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ: একজন সেক্টর কমান্ডারের স্মৃতিকথা প্রভৃতি। তিনি ‘একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’ গ্রন্থের অন্যতম সম্পাদক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত