Ajker Patrika

আগাছানাশকে ন­ষ্ট হলো ৩০ কৃষকের পেঁয়াজখেত

চারঘাট প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ২০: ১২
আগাছানাশকে ন­ষ্ট হলো ৩০ কৃষকের পেঁয়াজখেত

রাজশাহীর চারঘাটে আগাছানাশক প্রয়োগে ৩০ জন কৃষকের প্রায় ২৭ বিঘা জমির পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ক্ষতিপূরণের দাবিতে ও আগাছানাশক ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে স্থানীয় কৃষি অফিসে অভিযোগ জানিয়েছেন কৃষকেরা। কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কৃষকেরা এ বিষয়ে কোনো প্রতিকার পাননি।

উপজেলার মুক্তারপুর ও শ্রীখণ্ডী মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা পেঁয়াজ, রসুন, পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করেছেন। পেঁয়াজের আবাদ কিছু জমিতে বেশ ভালো হয়েছে। তবে কিছু জমিতে পেঁয়াজ রোপণের পরপরই জমিতে তা শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকেরা, বিশেষ করে যাঁরা জমি বর্গা নিয়ে ও ঋণ নিয়ে পেঁয়াজ চাষ করেছেন।

কৃষকেরা জানান, চলতি মৌসুমে জমি থেকে আমন ধান কেটে নেওয়ার পর তাঁরা পেঁয়াজ চাষের জন্য জমি প্রস্তুত শুরু করেন। এ সময় ধানের আগাছা দমনের জন্য খুদির বটতলা বাজারের শিমুল ট্রেডার্স নামের কীটনাশক ডিলারের দোকান থেকে বায়ার কোম্পানির কাউন্সিল আগাছানাশক কিনে জমিতে প্রয়োগ করেন তাঁরা। এর নির্দিষ্ট সময় পর জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করা হয়। কিন্তু সেই চারাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এতে মুক্তারপুর ও শ্রীখণ্ডী বিলের প্রায় ৩০ জন কৃষকের প্রায় ২৭ বিঘা জমির পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের জানান। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োগকৃত কীটনাশকগুলো দেখেন। কিন্তু এরপর কৃষকদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি তাঁরা।

মুক্তারপুর দফাদারপড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সালাউদ্দিন গাজী জানান, তিনি প্রায় দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। এর মধ্যে এক বিঘা জমিতে ওই ডিলারের আগাছানাশক প্রয়োগের পর সব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি জমিতেও অন্য ডিলারের আরেক কোম্পানির আগাছানাশক ব্যবহার করে পেঁয়াজের আবাদ ভালো হয়েছে। এক বিঘা জমির পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় এখন মাথায় হাত পড়েছে তাঁর।

একই গ্রামের মোতালেব হোসেন জানান, তিনি ২২ হাজার টাকা খরচ করে ১৭ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। কিন্তু ওই আগাছানাশক প্রয়োগ করে সব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। যাঁরা অন্য কীটনাশক ব্যবহার করেছেন, তাঁদের কোনো ক্ষতি হয়নি। তাঁর মতো আরও অনেক চাষির একই অবস্থা। এ অবস্থায় ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিমুল ট্রেডার্সের মালিক শিমুল আলী বলেন, ‘আমার দোকান থেকে ওই কৃষকেরা আগাছানাশক কিনেছিলেন। তাঁরা হয়তো সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রয়োগ করেননি, এ জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারপরও আমি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বজলুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর পেঁয়াজখেতগুলো পরিদর্শন করেছি। মাটি পরীক্ষা না করে কীটনাশকের সমস্যা ছিল কি না, বলা সম্ভব না। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা যেন ক্ষতিপূরণ পান সে জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত