Ajker Patrika

নওগাঁয় নবান্ন উৎসবে গ্রামীণ যাত্রাপালা

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৫৩
নওগাঁয় নবান্ন উৎসবে গ্রামীণ যাত্রাপালা

নওগাঁর নিয়ামতপুরে সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পর নবান্ন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী ও সংস্কৃতি। মিশে আছে হাজার বছরের ইতিহাস ও নানা অনুষঙ্গ।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলা সদরের বালাহৈর, টিকরামপুর, ধর্মপুর, অর্জুনপুর গ্রামে আমন ধান ওঠানোর পর আয়োজন করা হয় নবান্ন উৎসব। আর নবান্ন উৎসবের মূল আকর্ষণ থাকে গ্রামীণ যাত্রাপালা নিয়ে। যাত্রাপালা দেখার জন্য আত্মীয়স্বজনেরা বেড়াতে আসেন। সন্ধ্যার পর যাত্রাপালা দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসেন।

সন্ধ্যার পর থেকেই দোকানি হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন। যেন মেলায় পরিণত হয় চারপাশ। নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করার জন্য গ্রামের পুরুষ ও নারীরা খেজুর পাতার পাটি, বস্তা বিছিয়ে রাখেন।

যাত্রাপালায় অংশগ্রহণের জন্য গ্রামের তরুণেরা বেশ আগ্রহী। কয়েক দিন মহড়ায় অংশগ্রহণ করে নিজেদের তৈরি করে নেন। যাত্রাপালার বাদ্য-বাজনা বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সবাই এক জায়গায় জমায়েত হন। গভীর রাত ধরে চলে যাত্রাপালা।

বালাহৈর গ্রামের সম্ভু দাস বলেন, সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন তিনি যাত্রাপালা দেখার জন্য। এখন আগের মতো আর নবান্ন উৎসব ও যাত্রাপালা হয় না। তবে আয়োজন হচ্ছে বলে ভালো লাগছে।

একই গ্রামের হরিদাস বলেন, নবান্নে যাত্রাপালার কথা শুনলেই মন ভরে যেত। আগে যাত্রা দেখার জন্য প্রহর গুনতেন তিনি। কিন্তু আগের মতো যাত্রাদল না থাকায় এলাকার ছেলেরা আয়োজন করছে। কিছু শিল্পী নিয়ে এসে কোনো রকমে আয়জন করা হচ্ছে, যা দেখে মনে প্রশান্তি আসে না।

নিয়ামতপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান নঈম বলেন, দিনবদলের পালায় মানুষের কাছে অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে নবান্নের আনন্দ। আগে নতুন ধান গোলায় ওঠার সময় যেভাবে উৎসবের আমেজ বিরাজ করত, তা এখন হারিয়ে যাচ্ছে। ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য নবান্ন উৎসব ও গ্রামীণ যাত্রাপালা অল্প পরিসরে চলছে।

বজলুর রহমান নঈম আরও বলেন, নবান্ন উৎসবের মতো যাত্রাপালাও হারিয়ে যেতে বসেছে। সংস্কৃতি পাল্টে যাওয়ার কারণে এখন আর আগের মতো দেখা যায় না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত