অরূপ রায়, সাভার
ঈদ মানেই আনন্দ, কিন্তু ধসে পড়া রানা প্লাজার আহত শ্রমিকদের শারীরিক যন্ত্রণা, দারিদ্র্য আর ভয়াবহ সেই স্মৃতি ঈদ আনন্দকে ম্লান করে দেয়। তাঁদের জন্য ঈদের দিনটিও কষ্টের। সাভারের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আহত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
ধসে পড়া রানা প্লাজার আহত শ্রমিক নিলুফা বেগমের সঙ্গে গত রোববার কথা হয় সাভারের মজিদপুরে। স্বামী আর এক ছেলে নিয়ে ছিল নিলুফার সংসার। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় তাঁর সেই সুখের সংসার তছনছ হয়ে গেছে।
ঈদ কেমন কাটল জানতে চাইলে নিলুফা বলেন, ‘আমাগো আবার ঈদ। কোনোরকমে খাইয়া পইরা বাইচা রইচি। ভবনের নিচে চাপা পইড়া পায়ে ব্যথা পাইছিলাম। বিকল্প পাও ছাড়া হাঁটবার পারি না। অনেক সময় ব্যথায় কাতর হইয়া যাই। অসুস্থতার কারণে দুর্ঘটনার কয়েক বছর পর স্বামী চইলা যায়। ফুটপাতে বইসা পান-সিগারেট বেচি। সারা বছর যা খাই, ঈদের দিনেও তাই। নতুন কাপড় আর পুলাও-মাংসের কথা কল্পনাও করবার পারি না।’
ধসে পড়া রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় কোমরে ব্যথা পেয়েছিলেন তাসলিমা। তিনি রানা প্লাজার সাততলার পোশাক কারখানা নিউ ওয়েব স্টাইলে কাজ করতেন। সুস্থ হলেও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না তিনি। এ কারণে তাঁর আর কাজে ফেরা সম্ভব হয়নি।
তাসলিমা বেগম বলেন, ‘কারখানার মালিকগো খামখেয়ালির কারণে কত মায়ের বুক খালি হইচে। কত শ্রমিক আহত হইচে। অনেকে পঙ্গু হইয়া ঘরে পইড়া রইচে। তারপরেও আমরা ক্ষতিপূরণ পাইলাম না। আমরা ঈদে কী খাই, কী পরি, হেই খুঁজটাও কেউ নেয় না।’
তাসলিমার কথা শেষ হতে না হতেই পাশে বসে থাকা আহত আরেক শ্রমিক শিলা বেগম বলেন, ‘আমরা ভিক্ষা চাই না, ক্ষতিপূরণ চাই। আর খালি ক্ষতিপূরণ দিলেই হবে না, ভবনের জায়গায় বিল্ডিং বানাইয়া আমাগো পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাগো আজীবন চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যে গার্মেন্টস মালিকদের জন্য আমাগো এই দুর্দশা, তাগো এমন বিচার করতে হবে, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।’
রানা প্লাজা ধসে আহত আফরোজা বেগম কাজ করতেন সাততলার একটি পোশাক কারখানায়। ভবন ধসের প্রায় ১২ ঘণ্টা পর তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি মেরুদণ্ড আর ডান পায়ে আঘাত পেয়েছিলেন। ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার কথা মনে পড়লে আজও তিনি আতঙ্কবোধ করেন। এখনো রাতে দুঃস্বপ্নের ঘোরে চিৎকার করে ওঠেন।
ঈদ কেমন কাটল জানতে চাইলে আফরোজা বেগম বলেন, ‘রানা প্লাজার শ্রমিকগো আবার ঈদ আছে নাকি। গরুর মাংস ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। এক কেজি পুলাওর চাউল ১০০ টাকার উপরে। এত দাম দিয়া কি আমাগো মাংস-পুলাও খাওয়া সম্ভব! সরকার তো আমাগো এক কেজি ত্রাণও দেয় না।’
শারীরিক সমস্যার কারণে কোনো কারখানায় কাজ না পেয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোনোরকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছেন রানা প্লাজার আরেক শ্রমিক নিলুফার ইয়াসমিন। ঈদের দিন মোটা চালের ভাত, চিংড়ির শুঁটকি আর লাউশাক রান্না করেছিলেন তিনি। এই কষ্টের কথা জানাতেই তাঁর চোখ বেয়ে পানি ঝরতে থাকে।
ওড়নায় চোখের পানি মুছতে মুছতে ক্ষোভের সঙ্গে নিলুফার বলেন, ‘রানা প্লাজা ভাইঙা আমাগো কপাল পুড়ল আর তাগো কপাল খুলল। তাঁরা এমপি-মন্ত্রী হইল আর আমাগো ঘরে খাওয়ার থাকে না।’
অভাবের তাড়নায় সাভারে এসে ২০১২ সালে রানা প্লাজার একটি পোশাক কারখানায় কাজ নিয়েছিলেন রংপুরের এক তরুণী। ভবন ধসের দুই দিন পর অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তিনি মেরুদণ্ড, মাথা আর দুই পায়ের ঊরুতে আঘাত পেয়েছিলেন। এরপর চলে গেছে ১০ বছর। কিন্তু এই দীর্ঘদিনেও তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই তরুণী বলেন, ‘প্রতিবছর ২৪ এপ্রিল শ্রমিকনেতারা রানা প্লাজার সামনে আহত আর নিহত শ্রমিকদের স্বজনদের নিয়ে মিছিল-মিটিং করেন। বড় বড় বক্তব্য দেন। কিন্তু আমাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। আর তাঁরা রাজার হালে চলেন। আমরা আর এভাবে ব্যবহার হতে চাই না।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর পার হতে চলল। নিহত শ্রমিকদের স্বজন আর আহত শ্রমিকেরা এখনো ক্ষতিপূরণ পাননি। তাঁদের দিন কাটে অনেক কষ্টে। জনপ্রতিনিধি বা সরকারের কোনো প্রতিনিধি তাঁদের খোঁজ নেন না। ভিজিএফসহ সরকারের কোনো সহায়তাও পান না তাঁরা।
খায়রুল মামুন মিন্টু আরও বলেন, সরকারি খরচে আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ভবনমালিক সোহেল রানার পাশাপাশি ধসে পড়া রানা প্লাজার পোশাক কারখানার মালিকদেরও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
ঈদ মানেই আনন্দ, কিন্তু ধসে পড়া রানা প্লাজার আহত শ্রমিকদের শারীরিক যন্ত্রণা, দারিদ্র্য আর ভয়াবহ সেই স্মৃতি ঈদ আনন্দকে ম্লান করে দেয়। তাঁদের জন্য ঈদের দিনটিও কষ্টের। সাভারের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আহত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
ধসে পড়া রানা প্লাজার আহত শ্রমিক নিলুফা বেগমের সঙ্গে গত রোববার কথা হয় সাভারের মজিদপুরে। স্বামী আর এক ছেলে নিয়ে ছিল নিলুফার সংসার। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় তাঁর সেই সুখের সংসার তছনছ হয়ে গেছে।
ঈদ কেমন কাটল জানতে চাইলে নিলুফা বলেন, ‘আমাগো আবার ঈদ। কোনোরকমে খাইয়া পইরা বাইচা রইচি। ভবনের নিচে চাপা পইড়া পায়ে ব্যথা পাইছিলাম। বিকল্প পাও ছাড়া হাঁটবার পারি না। অনেক সময় ব্যথায় কাতর হইয়া যাই। অসুস্থতার কারণে দুর্ঘটনার কয়েক বছর পর স্বামী চইলা যায়। ফুটপাতে বইসা পান-সিগারেট বেচি। সারা বছর যা খাই, ঈদের দিনেও তাই। নতুন কাপড় আর পুলাও-মাংসের কথা কল্পনাও করবার পারি না।’
ধসে পড়া রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় কোমরে ব্যথা পেয়েছিলেন তাসলিমা। তিনি রানা প্লাজার সাততলার পোশাক কারখানা নিউ ওয়েব স্টাইলে কাজ করতেন। সুস্থ হলেও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না তিনি। এ কারণে তাঁর আর কাজে ফেরা সম্ভব হয়নি।
তাসলিমা বেগম বলেন, ‘কারখানার মালিকগো খামখেয়ালির কারণে কত মায়ের বুক খালি হইচে। কত শ্রমিক আহত হইচে। অনেকে পঙ্গু হইয়া ঘরে পইড়া রইচে। তারপরেও আমরা ক্ষতিপূরণ পাইলাম না। আমরা ঈদে কী খাই, কী পরি, হেই খুঁজটাও কেউ নেয় না।’
তাসলিমার কথা শেষ হতে না হতেই পাশে বসে থাকা আহত আরেক শ্রমিক শিলা বেগম বলেন, ‘আমরা ভিক্ষা চাই না, ক্ষতিপূরণ চাই। আর খালি ক্ষতিপূরণ দিলেই হবে না, ভবনের জায়গায় বিল্ডিং বানাইয়া আমাগো পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাগো আজীবন চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যে গার্মেন্টস মালিকদের জন্য আমাগো এই দুর্দশা, তাগো এমন বিচার করতে হবে, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।’
রানা প্লাজা ধসে আহত আফরোজা বেগম কাজ করতেন সাততলার একটি পোশাক কারখানায়। ভবন ধসের প্রায় ১২ ঘণ্টা পর তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি মেরুদণ্ড আর ডান পায়ে আঘাত পেয়েছিলেন। ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার কথা মনে পড়লে আজও তিনি আতঙ্কবোধ করেন। এখনো রাতে দুঃস্বপ্নের ঘোরে চিৎকার করে ওঠেন।
ঈদ কেমন কাটল জানতে চাইলে আফরোজা বেগম বলেন, ‘রানা প্লাজার শ্রমিকগো আবার ঈদ আছে নাকি। গরুর মাংস ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। এক কেজি পুলাওর চাউল ১০০ টাকার উপরে। এত দাম দিয়া কি আমাগো মাংস-পুলাও খাওয়া সম্ভব! সরকার তো আমাগো এক কেজি ত্রাণও দেয় না।’
শারীরিক সমস্যার কারণে কোনো কারখানায় কাজ না পেয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোনোরকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছেন রানা প্লাজার আরেক শ্রমিক নিলুফার ইয়াসমিন। ঈদের দিন মোটা চালের ভাত, চিংড়ির শুঁটকি আর লাউশাক রান্না করেছিলেন তিনি। এই কষ্টের কথা জানাতেই তাঁর চোখ বেয়ে পানি ঝরতে থাকে।
ওড়নায় চোখের পানি মুছতে মুছতে ক্ষোভের সঙ্গে নিলুফার বলেন, ‘রানা প্লাজা ভাইঙা আমাগো কপাল পুড়ল আর তাগো কপাল খুলল। তাঁরা এমপি-মন্ত্রী হইল আর আমাগো ঘরে খাওয়ার থাকে না।’
অভাবের তাড়নায় সাভারে এসে ২০১২ সালে রানা প্লাজার একটি পোশাক কারখানায় কাজ নিয়েছিলেন রংপুরের এক তরুণী। ভবন ধসের দুই দিন পর অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তিনি মেরুদণ্ড, মাথা আর দুই পায়ের ঊরুতে আঘাত পেয়েছিলেন। এরপর চলে গেছে ১০ বছর। কিন্তু এই দীর্ঘদিনেও তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই তরুণী বলেন, ‘প্রতিবছর ২৪ এপ্রিল শ্রমিকনেতারা রানা প্লাজার সামনে আহত আর নিহত শ্রমিকদের স্বজনদের নিয়ে মিছিল-মিটিং করেন। বড় বড় বক্তব্য দেন। কিন্তু আমাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। আর তাঁরা রাজার হালে চলেন। আমরা আর এভাবে ব্যবহার হতে চাই না।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর পার হতে চলল। নিহত শ্রমিকদের স্বজন আর আহত শ্রমিকেরা এখনো ক্ষতিপূরণ পাননি। তাঁদের দিন কাটে অনেক কষ্টে। জনপ্রতিনিধি বা সরকারের কোনো প্রতিনিধি তাঁদের খোঁজ নেন না। ভিজিএফসহ সরকারের কোনো সহায়তাও পান না তাঁরা।
খায়রুল মামুন মিন্টু আরও বলেন, সরকারি খরচে আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ভবনমালিক সোহেল রানার পাশাপাশি ধসে পড়া রানা প্লাজার পোশাক কারখানার মালিকদেরও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪