রাহুল শর্মা, ঢাকা

দেশের ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার গড়তে ভবন নির্মাণ করার কথা ২০ মাসের মধ্যে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ১৬ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি একটি ভবনেরও। অথচ এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগাম তুলে নিয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।
এই অবস্থায় আবার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমন চিত্র ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ১৬০ উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন’ শীর্ষক প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)।
দেশের ১৬০টি উপজেলায় আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ও স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিটি ল্যাব স্থাপন এবং মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকদের আইসিটি প্রশিক্ষণ-সংক্রান্ত উদ্যোগের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৮৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাকের ঋণ ৫৯২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা এবং সরকারের প্রকল্প সহায়তা ২৫২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
প্রকল্পের নথিতে দেখা যায়, পাঁচ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২৬ শতাংশ।
ভবন নির্মাণ বাবদ অগ্রিম অর্থ দেওয়া হলেও এখনো একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। ভবন নির্মাণসহ প্রকল্পের সব কাজের জন্য কোরিয়ার তিনিটি কোম্পানির গ্রুপ তাইহান কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি হয় ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ২০ মাসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৭ জুলাই নাগাদ ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা।
একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি
ব্যানবেইসের এক কর্মকর্তা জানান, ১৬০টি ভবনের মধ্যে একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি। অথচ অগ্রিম বাবদ ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে ১৪০ কোটি। এখন আবার প্রকল্প ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজের যা অবস্থা, তাতে নির্ধারিত সময়ে একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হবে না।
জানা যায়, ১৬০টি উপজেলার মধ্যে ৫২ উপজেলায় এখনো কাজ শুরুই হয়নি। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী সময় আছে আর মাত্র ৪ মাস। ১০৮টি উপজেলায় ভবন নির্মাণকাজেও রয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, সেপটিক ট্যাংক, পুরোনো ভবনসহ নানা জটিলতা। শুধু ১৯টি উপজেলায় একতলা এবং ১০টি উপজেলায় দোতলার ছাদ ঢালাই করা হয়েছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া, ঢাকার ধামরাই এবং গাজীপুরের কাপাসিয়াসহ কয়েকটি উপজেলায় খোঁজ নিয়েও প্রকল্পের এমন অবস্থার তথ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনী বলেন, ‘ভবন নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি, ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ সমাপ্ত করা যাবে।’
কাপাসিয়ায় কাজে ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি জ্যাকস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. নুরুন্নবী বলেন, ‘মূল ঠিকাদার কোরিয়ান কোম্পানি, আমরা সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করছি। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু হয়নি। কাজের যে গতি তাতে বলা যায় ডিসেম্বরে ভবন নির্মাণ শেষ হবে।’
ব্যানবেইস মহাপরিচালকের আশা
পদাধিকারবলে প্রকল্পের পরিচালক হলেন ব্যানবেইস মহাপরিচালক মো. মহিবুর রহমান। তিনি গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি যোগদান করেছি বেশি দিন হয়নি। তারপরও যতটুকু জেনেছি তাতে বলা যায়, করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি।’ দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে একাধিকবার কোরীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্রুতই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
তবে ভিন্ন কথা বলছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, এ প্রকল্পের শুরুতেই বেশ কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির অন্যতম কারণ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। এতে মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ ব্যক্তির নিকটাত্মীয়ের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত তা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পর্যন্ত গড়ায়। এ ছাড়া মামলাসংক্রান্ত জটিলতাও ছিল।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তা না হলে ভবন নির্মাণকাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লাগবে কেন? উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রকল্পে ই-লার্নিং সিস্টেম তৈরি এবং এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম সফটওয়্যার আধুনিকায়ন করার কথা ছিল। এখন তা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। কারণ একই কাজ অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে চলছে।’
শিক্ষাসচিবের অসন্তোষ
জানা যায়, ভবন নির্মাণকাজে ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাসচিব সোলেমান খান। গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের ৫ম স্টিয়ারিং কমিটির সভায় তিনি এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, সভায় সচিব বলেন, ‘প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ইতিমধ্যে ৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হলেও অদ্যাবধি একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়া মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। এ ছাড়া ই-লার্নিং সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট এবং ইএমআইএস আপ গ্রেডেশনসহ ভবন নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এরূপ কার্যক্রমের কোনো অগ্রগতি হয়নি।’
শিক্ষাসচিব দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে নতুন করে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর পাঁয়তারা
জানা যায়, শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল তিন বছর (জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত)। এরপর তিনবার বাড়ানো হয় মেয়াদ। সেই হিসাবে আগামী জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে এই মেয়াদ আরও দেড় বছর (২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যয় বাড়ানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে। কোরীয় কনসোর্টিয়াম ৩০ লাখ ১২ হাজার ২২৭ ডলার (৩১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৮ হাজার ৫১৯ টাকা) বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।
ব্যানবেইসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্টিয়ারিং কমিটি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। কারণ ৫ বছরের বেশি সময়েও প্রকল্পের অগ্রগতি খুবই সামান্য।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক। নানা জটিলতায় নির্মাণকাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে কাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লেগেছে। এ ছাড়া প্রকল্পে আরও কিছু জটিলতা ছিল। এগুলো নিরসনে ডিপিপি সংশোধনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই প্রকল্পের কার্যক্রমে গতি আসবে।’

দেশের ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার গড়তে ভবন নির্মাণ করার কথা ২০ মাসের মধ্যে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ১৬ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি একটি ভবনেরও। অথচ এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগাম তুলে নিয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।
এই অবস্থায় আবার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমন চিত্র ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ১৬০ উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন’ শীর্ষক প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)।
দেশের ১৬০টি উপজেলায় আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ও স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিটি ল্যাব স্থাপন এবং মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকদের আইসিটি প্রশিক্ষণ-সংক্রান্ত উদ্যোগের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৮৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাকের ঋণ ৫৯২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা এবং সরকারের প্রকল্প সহায়তা ২৫২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
প্রকল্পের নথিতে দেখা যায়, পাঁচ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২৬ শতাংশ।
ভবন নির্মাণ বাবদ অগ্রিম অর্থ দেওয়া হলেও এখনো একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। ভবন নির্মাণসহ প্রকল্পের সব কাজের জন্য কোরিয়ার তিনিটি কোম্পানির গ্রুপ তাইহান কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি হয় ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ২০ মাসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৭ জুলাই নাগাদ ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা।
একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি
ব্যানবেইসের এক কর্মকর্তা জানান, ১৬০টি ভবনের মধ্যে একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি। অথচ অগ্রিম বাবদ ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে ১৪০ কোটি। এখন আবার প্রকল্প ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজের যা অবস্থা, তাতে নির্ধারিত সময়ে একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হবে না।
জানা যায়, ১৬০টি উপজেলার মধ্যে ৫২ উপজেলায় এখনো কাজ শুরুই হয়নি। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী সময় আছে আর মাত্র ৪ মাস। ১০৮টি উপজেলায় ভবন নির্মাণকাজেও রয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, সেপটিক ট্যাংক, পুরোনো ভবনসহ নানা জটিলতা। শুধু ১৯টি উপজেলায় একতলা এবং ১০টি উপজেলায় দোতলার ছাদ ঢালাই করা হয়েছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া, ঢাকার ধামরাই এবং গাজীপুরের কাপাসিয়াসহ কয়েকটি উপজেলায় খোঁজ নিয়েও প্রকল্পের এমন অবস্থার তথ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনী বলেন, ‘ভবন নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি, ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ সমাপ্ত করা যাবে।’
কাপাসিয়ায় কাজে ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি জ্যাকস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. নুরুন্নবী বলেন, ‘মূল ঠিকাদার কোরিয়ান কোম্পানি, আমরা সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করছি। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু হয়নি। কাজের যে গতি তাতে বলা যায় ডিসেম্বরে ভবন নির্মাণ শেষ হবে।’
ব্যানবেইস মহাপরিচালকের আশা
পদাধিকারবলে প্রকল্পের পরিচালক হলেন ব্যানবেইস মহাপরিচালক মো. মহিবুর রহমান। তিনি গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি যোগদান করেছি বেশি দিন হয়নি। তারপরও যতটুকু জেনেছি তাতে বলা যায়, করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি।’ দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে একাধিকবার কোরীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্রুতই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
তবে ভিন্ন কথা বলছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, এ প্রকল্পের শুরুতেই বেশ কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির অন্যতম কারণ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। এতে মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ ব্যক্তির নিকটাত্মীয়ের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত তা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পর্যন্ত গড়ায়। এ ছাড়া মামলাসংক্রান্ত জটিলতাও ছিল।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তা না হলে ভবন নির্মাণকাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লাগবে কেন? উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রকল্পে ই-লার্নিং সিস্টেম তৈরি এবং এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম সফটওয়্যার আধুনিকায়ন করার কথা ছিল। এখন তা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। কারণ একই কাজ অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে চলছে।’
শিক্ষাসচিবের অসন্তোষ
জানা যায়, ভবন নির্মাণকাজে ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাসচিব সোলেমান খান। গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের ৫ম স্টিয়ারিং কমিটির সভায় তিনি এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, সভায় সচিব বলেন, ‘প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ইতিমধ্যে ৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হলেও অদ্যাবধি একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়া মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। এ ছাড়া ই-লার্নিং সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট এবং ইএমআইএস আপ গ্রেডেশনসহ ভবন নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এরূপ কার্যক্রমের কোনো অগ্রগতি হয়নি।’
শিক্ষাসচিব দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে নতুন করে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর পাঁয়তারা
জানা যায়, শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল তিন বছর (জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত)। এরপর তিনবার বাড়ানো হয় মেয়াদ। সেই হিসাবে আগামী জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে এই মেয়াদ আরও দেড় বছর (২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যয় বাড়ানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে। কোরীয় কনসোর্টিয়াম ৩০ লাখ ১২ হাজার ২২৭ ডলার (৩১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৮ হাজার ৫১৯ টাকা) বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।
ব্যানবেইসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্টিয়ারিং কমিটি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। কারণ ৫ বছরের বেশি সময়েও প্রকল্পের অগ্রগতি খুবই সামান্য।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক। নানা জটিলতায় নির্মাণকাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে কাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লেগেছে। এ ছাড়া প্রকল্পে আরও কিছু জটিলতা ছিল। এগুলো নিরসনে ডিপিপি সংশোধনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই প্রকল্পের কার্যক্রমে গতি আসবে।’
রাহুল শর্মা, ঢাকা

দেশের ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার গড়তে ভবন নির্মাণ করার কথা ২০ মাসের মধ্যে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ১৬ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি একটি ভবনেরও। অথচ এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগাম তুলে নিয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।
এই অবস্থায় আবার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমন চিত্র ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ১৬০ উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন’ শীর্ষক প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)।
দেশের ১৬০টি উপজেলায় আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ও স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিটি ল্যাব স্থাপন এবং মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকদের আইসিটি প্রশিক্ষণ-সংক্রান্ত উদ্যোগের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৮৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাকের ঋণ ৫৯২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা এবং সরকারের প্রকল্প সহায়তা ২৫২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
প্রকল্পের নথিতে দেখা যায়, পাঁচ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২৬ শতাংশ।
ভবন নির্মাণ বাবদ অগ্রিম অর্থ দেওয়া হলেও এখনো একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। ভবন নির্মাণসহ প্রকল্পের সব কাজের জন্য কোরিয়ার তিনিটি কোম্পানির গ্রুপ তাইহান কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি হয় ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ২০ মাসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৭ জুলাই নাগাদ ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা।
একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি
ব্যানবেইসের এক কর্মকর্তা জানান, ১৬০টি ভবনের মধ্যে একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি। অথচ অগ্রিম বাবদ ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে ১৪০ কোটি। এখন আবার প্রকল্প ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজের যা অবস্থা, তাতে নির্ধারিত সময়ে একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হবে না।
জানা যায়, ১৬০টি উপজেলার মধ্যে ৫২ উপজেলায় এখনো কাজ শুরুই হয়নি। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী সময় আছে আর মাত্র ৪ মাস। ১০৮টি উপজেলায় ভবন নির্মাণকাজেও রয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, সেপটিক ট্যাংক, পুরোনো ভবনসহ নানা জটিলতা। শুধু ১৯টি উপজেলায় একতলা এবং ১০টি উপজেলায় দোতলার ছাদ ঢালাই করা হয়েছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া, ঢাকার ধামরাই এবং গাজীপুরের কাপাসিয়াসহ কয়েকটি উপজেলায় খোঁজ নিয়েও প্রকল্পের এমন অবস্থার তথ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনী বলেন, ‘ভবন নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি, ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ সমাপ্ত করা যাবে।’
কাপাসিয়ায় কাজে ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি জ্যাকস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. নুরুন্নবী বলেন, ‘মূল ঠিকাদার কোরিয়ান কোম্পানি, আমরা সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করছি। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু হয়নি। কাজের যে গতি তাতে বলা যায় ডিসেম্বরে ভবন নির্মাণ শেষ হবে।’
ব্যানবেইস মহাপরিচালকের আশা
পদাধিকারবলে প্রকল্পের পরিচালক হলেন ব্যানবেইস মহাপরিচালক মো. মহিবুর রহমান। তিনি গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি যোগদান করেছি বেশি দিন হয়নি। তারপরও যতটুকু জেনেছি তাতে বলা যায়, করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি।’ দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে একাধিকবার কোরীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্রুতই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
তবে ভিন্ন কথা বলছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, এ প্রকল্পের শুরুতেই বেশ কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির অন্যতম কারণ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। এতে মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ ব্যক্তির নিকটাত্মীয়ের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত তা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পর্যন্ত গড়ায়। এ ছাড়া মামলাসংক্রান্ত জটিলতাও ছিল।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তা না হলে ভবন নির্মাণকাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লাগবে কেন? উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রকল্পে ই-লার্নিং সিস্টেম তৈরি এবং এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম সফটওয়্যার আধুনিকায়ন করার কথা ছিল। এখন তা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। কারণ একই কাজ অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে চলছে।’
শিক্ষাসচিবের অসন্তোষ
জানা যায়, ভবন নির্মাণকাজে ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাসচিব সোলেমান খান। গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের ৫ম স্টিয়ারিং কমিটির সভায় তিনি এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, সভায় সচিব বলেন, ‘প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ইতিমধ্যে ৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হলেও অদ্যাবধি একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়া মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। এ ছাড়া ই-লার্নিং সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট এবং ইএমআইএস আপ গ্রেডেশনসহ ভবন নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এরূপ কার্যক্রমের কোনো অগ্রগতি হয়নি।’
শিক্ষাসচিব দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে নতুন করে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর পাঁয়তারা
জানা যায়, শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল তিন বছর (জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত)। এরপর তিনবার বাড়ানো হয় মেয়াদ। সেই হিসাবে আগামী জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে এই মেয়াদ আরও দেড় বছর (২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যয় বাড়ানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে। কোরীয় কনসোর্টিয়াম ৩০ লাখ ১২ হাজার ২২৭ ডলার (৩১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৮ হাজার ৫১৯ টাকা) বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।
ব্যানবেইসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্টিয়ারিং কমিটি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। কারণ ৫ বছরের বেশি সময়েও প্রকল্পের অগ্রগতি খুবই সামান্য।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক। নানা জটিলতায় নির্মাণকাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে কাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লেগেছে। এ ছাড়া প্রকল্পে আরও কিছু জটিলতা ছিল। এগুলো নিরসনে ডিপিপি সংশোধনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই প্রকল্পের কার্যক্রমে গতি আসবে।’

দেশের ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার গড়তে ভবন নির্মাণ করার কথা ২০ মাসের মধ্যে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ১৬ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি একটি ভবনেরও। অথচ এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগাম তুলে নিয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।
এই অবস্থায় আবার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমন চিত্র ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ১৬০ উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন’ শীর্ষক প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)।
দেশের ১৬০টি উপজেলায় আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ও স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিটি ল্যাব স্থাপন এবং মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকদের আইসিটি প্রশিক্ষণ-সংক্রান্ত উদ্যোগের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৮৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাকের ঋণ ৫৯২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা এবং সরকারের প্রকল্প সহায়তা ২৫২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
প্রকল্পের নথিতে দেখা যায়, পাঁচ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২৬ শতাংশ।
ভবন নির্মাণ বাবদ অগ্রিম অর্থ দেওয়া হলেও এখনো একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। ভবন নির্মাণসহ প্রকল্পের সব কাজের জন্য কোরিয়ার তিনিটি কোম্পানির গ্রুপ তাইহান কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি হয় ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ২০ মাসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৭ জুলাই নাগাদ ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা।
একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি
ব্যানবেইসের এক কর্মকর্তা জানান, ১৬০টি ভবনের মধ্যে একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি। অথচ অগ্রিম বাবদ ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে ১৪০ কোটি। এখন আবার প্রকল্প ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজের যা অবস্থা, তাতে নির্ধারিত সময়ে একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হবে না।
জানা যায়, ১৬০টি উপজেলার মধ্যে ৫২ উপজেলায় এখনো কাজ শুরুই হয়নি। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী সময় আছে আর মাত্র ৪ মাস। ১০৮টি উপজেলায় ভবন নির্মাণকাজেও রয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, সেপটিক ট্যাংক, পুরোনো ভবনসহ নানা জটিলতা। শুধু ১৯টি উপজেলায় একতলা এবং ১০টি উপজেলায় দোতলার ছাদ ঢালাই করা হয়েছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া, ঢাকার ধামরাই এবং গাজীপুরের কাপাসিয়াসহ কয়েকটি উপজেলায় খোঁজ নিয়েও প্রকল্পের এমন অবস্থার তথ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনী বলেন, ‘ভবন নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি, ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ সমাপ্ত করা যাবে।’
কাপাসিয়ায় কাজে ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি জ্যাকস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. নুরুন্নবী বলেন, ‘মূল ঠিকাদার কোরিয়ান কোম্পানি, আমরা সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করছি। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু হয়নি। কাজের যে গতি তাতে বলা যায় ডিসেম্বরে ভবন নির্মাণ শেষ হবে।’
ব্যানবেইস মহাপরিচালকের আশা
পদাধিকারবলে প্রকল্পের পরিচালক হলেন ব্যানবেইস মহাপরিচালক মো. মহিবুর রহমান। তিনি গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি যোগদান করেছি বেশি দিন হয়নি। তারপরও যতটুকু জেনেছি তাতে বলা যায়, করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি।’ দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে একাধিকবার কোরীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্রুতই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
তবে ভিন্ন কথা বলছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, এ প্রকল্পের শুরুতেই বেশ কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির অন্যতম কারণ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। এতে মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ ব্যক্তির নিকটাত্মীয়ের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত তা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পর্যন্ত গড়ায়। এ ছাড়া মামলাসংক্রান্ত জটিলতাও ছিল।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তা না হলে ভবন নির্মাণকাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লাগবে কেন? উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রকল্পে ই-লার্নিং সিস্টেম তৈরি এবং এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম সফটওয়্যার আধুনিকায়ন করার কথা ছিল। এখন তা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। কারণ একই কাজ অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে চলছে।’
শিক্ষাসচিবের অসন্তোষ
জানা যায়, ভবন নির্মাণকাজে ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাসচিব সোলেমান খান। গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের ৫ম স্টিয়ারিং কমিটির সভায় তিনি এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, সভায় সচিব বলেন, ‘প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ইতিমধ্যে ৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হলেও অদ্যাবধি একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়া মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। এ ছাড়া ই-লার্নিং সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট এবং ইএমআইএস আপ গ্রেডেশনসহ ভবন নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এরূপ কার্যক্রমের কোনো অগ্রগতি হয়নি।’
শিক্ষাসচিব দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে নতুন করে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর পাঁয়তারা
জানা যায়, শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল তিন বছর (জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত)। এরপর তিনবার বাড়ানো হয় মেয়াদ। সেই হিসাবে আগামী জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে এই মেয়াদ আরও দেড় বছর (২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যয় বাড়ানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে। কোরীয় কনসোর্টিয়াম ৩০ লাখ ১২ হাজার ২২৭ ডলার (৩১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৮ হাজার ৫১৯ টাকা) বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।
ব্যানবেইসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্টিয়ারিং কমিটি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। কারণ ৫ বছরের বেশি সময়েও প্রকল্পের অগ্রগতি খুবই সামান্য।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক। নানা জটিলতায় নির্মাণকাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে কাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লেগেছে। এ ছাড়া প্রকল্পে আরও কিছু জটিলতা ছিল। এগুলো নিরসনে ডিপিপি সংশোধনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই প্রকল্পের কার্যক্রমে গতি আসবে।’

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

দেশের ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার গড়তে ভবন নির্মাণ করার কথা ২০ মাসের মধ্যে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ১৬ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি একটি ভবনেরও। অথচ এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগাম তুলে নিয়েছে
৩০ মার্চ ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

দেশের ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার গড়তে ভবন নির্মাণ করার কথা ২০ মাসের মধ্যে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ১৬ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি একটি ভবনেরও। অথচ এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগাম তুলে নিয়েছে
৩০ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

দেশের ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার গড়তে ভবন নির্মাণ করার কথা ২০ মাসের মধ্যে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ১৬ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি একটি ভবনেরও। অথচ এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগাম তুলে নিয়েছে
৩০ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

দেশের ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার গড়তে ভবন নির্মাণ করার কথা ২০ মাসের মধ্যে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ১৬ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি একটি ভবনেরও। অথচ এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগাম তুলে নিয়েছে
৩০ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫