Ajker Patrika

লক্ষ্যের মাত্র ২ শতাংশ অর্জন

সাইফুল ইসলাম সানি, সখীপুর
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২২, ১৪: ০১
লক্ষ্যের মাত্র ২ শতাংশ অর্জন

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় এবারও সরকারের আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এ মৌসুমে ৭৭২ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ দিন পর্যন্ত মাত্র ১৫ টন ধান সংগ্রহ করেছে খাদ্যগুদাম। সে হিসেবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে মাত্র ২ শতাংশ।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সখীপুর উপজেলায় চলতি আমনের মৌসুমে ধান ক্রয়ে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৭২ টন। প্রতি কেজি ২৭ টাকা ও প্রতি মণ ১ হাজার ৮০ টাকা দরে কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করার জন্য সরকারি নির্দেশনা ছিল। প্রত্যেক কৃষক সর্বোচ্চ তিন টন ধান গুদামে বিক্রি করতে পারবেন। গত বছরের ৭ নভেম্বর থেকে এই উপজেলায় খাদ্যগুদামে ন্যায্যমূল্যে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়। আর শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। শেষ দিন পর্যন্ত পাঁচজন কৃষকের কাছ থেকে মাত্র ১৫ টন ধান সংগ্রহ করা গেছে।

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও স্থানীয় হাটবাজারেই দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান দিচ্ছেন না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন ধান ক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে কৃষকেরা জানিয়েছেন, ব্যাংক চেকের মাধ্যমে দাম পরিশোধ, বারবার আর্দ্রতা পরিমাপ ও পরিবহন খরচসহ নানা ঝামেলার কারণেই তাঁরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ পান না। স্থানীয় বাজারেই এখন ধানের দাম ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। সেখানে সরকারি ক্রয়মূল্য প্রতি মণ ১ হাজার ৮০ টাকা। নিশ্চিত ক্ষতি দিয়ে কেউ ধান বিক্রি করবে না। তাই সরকারি ক্রয়মূল্য বাড়িয়ে কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ টাকা করলে সব ঝামেলা সত্ত্বেও ধান দেওয়া যেত। উপজেলার প্রতিমা বংকী গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাজরে সবকিছুর দাম বাড়তাছে। ধানের দাম আরও বাড়ব মনে কইরা অনেকেই ধান কিনে মজুত করতাছে। গুদামে যে দাম দেয়, ওই দামে ধান বেচলে আমাগো ক্ষতি হইয়া যায়।’

উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের কৃষক শাহজাহান মিয়া জানান, তিনি সরকারের কাছে তিন টন ধান বিক্রি করে ঠকেছেন। গুদামে ধান বিক্রিতে নানা ঝামেলা। ধানের আর্দ্রতা পরীক্ষা করে সরকারি নির্দেশনামতো হলে তারপর ধান কেনেন। এ ছাড়া পরিবহন ও শ্রমিক খরচ তো আছেই। আরও নানা ঝামেলা আছে। বাজারে নিয়ে ধান বিক্রি করলে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই সরকারি দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা যাচ্ছে। কৃষকদের স্বার্থের কথা ভেবে সরকারিভাবে ধানের দাম আরও বাড়ানো উচিত।
শোলাপ্রতিমা গ্রামের কৃষক হানিফ মিয়া বলেন, গুদামে ধানের দাম কম। আবার নিয়ে যেতেও খরচ হয়। আর ধান ব্যবসায়ীরা কৃষকের বাড়িতে এসে নগদ মূল্য দিয়ে ধান নিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আশরাফুল আলম ফাহিম বলেন, স্থানীয় হাটবাজারে দাম সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি থাকায় ধান সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এই বাজারদর অব্যাহত থাকলে সংগ্রহের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ পর্যবেক্ষণ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চিত্রা শিকারী বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে হাটবাজারগুলোতে কৃষকেরা বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পারছেন। ফলে কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত