Ajker Patrika

বরাদ্দ কম, ভিড় বেশি

চারঘাট প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৫১
বরাদ্দ কম, ভিড় বেশি

দরিদ্র মানুষের জন্য চালু করা সরকারের খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল-আটা বিক্রির কার্যক্রম শুরু হবে সকাল ১০টায়। যে দোকানে বিক্রি করা হবে পণ্য, তার সামনে ভোরের আলো ফোটার আগেই দেখা যায় শত শত নারী-পুরুষ। আছে শিশুরাও। গত মঙ্গলবার চারঘাট পৌরসভা সদরে দেখা গেল এ দৃশ্য।

কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ অনেক কম। ডিলার নিয়োগেও রয়েছে অসংগতি। তাই পণ্য পাওয়া নিশ্চিত করতে এত সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁরা। তবু কেউ পান, কেউ পান না।

চারঘাট পৌরসভার চারটি স্থানে ওএমএসের পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চলছে। তবে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও থেকে পণ্য কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন অধিকাংশ ক্রেতা। চাল-আটা না পেয়ে প্রতিদিনই হট্টগোল তৈরি হচ্ছে। পৌরসভার ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯—এই পাঁচ ওয়ার্ডের কাছাকাছি শুধু একজন ডিলার। অথচ ১, ২, ৩ ও ৪—এই চার ওয়ার্ডে তিনজন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ডিলার নিয়োগে অসংগতিই ভোগান্তির অন্যতম কারণ বলছেন উপকারভোগীরা।

গত মঙ্গলবার সরেজমিন পৌরসভার চারটি ডিলার কেন্দ্রে দেখা যায়, ওএমএসের কেন্দ্রগুলোতে কর্মহীন মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে চারঘাট সদরের ওএমএসের কেন্দ্রে। ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও দুপুরে খালি হাতে ফিরছেন কেউ কেউ।

উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে চাল ও ৩৫ টাকা করে আটা বিক্রি হচ্ছে। এমনিতেই পরিবারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। এ অবস্থায় ৩০ টাকা কেজির চাল ও ১৮ টাকা দরের আটা পেতে লাইন ধরেছেন।

কথা হয় পিরোজপুর এলাকার আঙ্গুরা বেগমের সঙ্গে। বয়স ৭০ ছাড়িয়েছে। ঠিকমতো হাঁটতেও পারেন না। সকাল ৬টার দিকে লাঠিতে ভর দিয়ে এসেছেন, কিন্তু এত ভিড় যে লাইনে জায়গা হয়নি। বেলা ১টা বাজলেও তাঁর কপালে চাল-আটার কোনোটাই জোটেনি।

মিয়াপুর এলাকার খাইরুল ইসলাম জানান, ভোর ৫টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। কারণ পরে এলে লাইনের প্রথম দিকে জায়গা পাওয়া যায় না। এত বেশি লোক লাইনে দাঁড়ান যে, অর্ধেকের বেশি মানুষকে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়। এ সময় রমেলা খাতুন, আবুল কাশেমসহ আরও অনেকেই বরাদ্দ ও কার্যক্রমের বিস্তৃতি বাড়ানোর দাবি তোলেন।

চারঘাট সদর এলাকার ওএমএস ডিলার জহুরুল ইসলাম জানান, চাহিদা খুব বেশি। বিক্রি শুরুর কয়েক ঘণ্টায়ই চাল-আটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। আটার বরাদ্দ ঠিক আছে। তবে আগে ৩০০ জনের দেড় টন চাল বরাদ্দ থাকলেও এখন কমিয়ে ২০০ জনের ১ টন করা হয়েছে। বরাদ্দ কম থাকায় লোকজনকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। চাপ সামাল দেওয়ার জন্য বরাদ্দ বাড়ানো ও ওয়ার্ড অনুযায়ী ডিলারের সমন্বয় করা জরুরি বলে মত দেন তিনি।

চারঘাট উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. মলিউজ্জামান বলেন, পৌরশহরে শুক্রবার ছাড়া চারজন ডিলারের মাধ্যমে চার টন চাল ও চার টন আটা বিক্রি করা হচ্ছে। তবে বরাদ্দের তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি। কার্যক্রম নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। ডিলার সমন্বয়ের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত