Ajker Patrika

২০৫০ সালের মধ্যে মানুষের আয়ু হবে ১,০০০ বছর: দাবি বিজ্ঞানীদের

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ২৭
২০৪৫ সালের মধ্যে মানুষের সঙ্গে মেশিনের প্রকৃত একীভূত ঘটবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। ছবি: আইডিওগ্রাম
২০৪৫ সালের মধ্যে মানুষের সঙ্গে মেশিনের প্রকৃত একীভূত ঘটবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। ছবি: আইডিওগ্রাম

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাক্ষেত্রে অগ্রণী কিছু ভবিষ্যৎদ্রষ্টা মনে করছেন, মানুষ এখন আর আগের মতো কেবল শতবর্ষ আয়ুর স্বপ্ন দেখছে না। বরং এমন এক সময় আসছে, যখন আমরা স্বাভাবিক আয়ুর চেয়ে ১০ গুণ বেশি সময়, অর্থাৎ হাজার বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারি।

এ ভাবনার পেছনে রয়েছেন খ্যাতিমান ফিউচারিস্ট রে কারজওয়াইল, ইয়ান পিয়ারসন ও অবারি ডি গ্রে। তাঁদের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ক্লাউড কম্পিউটিং ও রোবোটিকসের যুগান্তকারী অগ্রগতির ফলে মানুষ ‘প্রকৃতপক্ষেই অমরত্ব’ লাভ করতে যাচ্ছে।

কম্পিউটারবিজ্ঞানী ও লেখক রে কারজওয়াইল বলেন, ২০২৯ সাল নাগাদ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যাবে। এই অবস্থাকে বলা হয় ‘সিঙ্গুলারিটি’। আর ২০৪৫ সালের মধ্যে মানুষের সঙ্গে মেশিনের প্রকৃত একীভূত ঘটবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

এই একীভূতের মধ্যে থাকবে—ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস, ক্লাউডভিত্তিক সচেতনতা এবং ন্যানোবট, যা শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা নিরসনে কাজ করবে।

এভাবে মানুষের মন অন্তত অমর হয়ে উঠবে, এমনকি একটি সম্মিলিত মানব বুদ্ধিমত্তা তৈরি হবে, যা আজকের তুলনায় লক্ষ গুণ বেশি শক্তিশালী হবে।

তবে সমালোচকেরা প্রশ্ন তুলছেন—এই মৃত্যু প্রতিরোধ কি প্রযুক্তিপন্থী আশাবাদের দিবাস্বপ্ন।

২০২৩ সালে ইন্টারনেট ব্রাউজার নেটস্কেপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ধনকুবের বিনিয়োগকারী মার্ক অ্যান্ড্রিসেন বলেন, ‘আমাদের সভ্যতা প্রযুক্তির ওপর গড়ে উঠেছে, প্রযুক্তিই আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও অর্জনের গৌরব।’

ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সামাজিক প্রভাব নিয়ে গবেষণা করা দুই অধ্যাপক জানান, প্রযুক্তি সমাজের সব সমস্যার সমাধান দিতে পারবে না।

২০২৪ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে তাঁরা বলেন, দারিদ্র্যের মতো জটিল সমস্যার সমাধান বহুস্তরীয় হতে হবে, যেখানে প্রযুক্তি কেবল একটি অংশ। তাঁদের মতে, প্রযুক্তিকে সব সমস্যার একমাত্র সমাধান মনে করার রাজনৈতিক, পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক প্রভাব রয়েছে, এতে ক্ষমতাবানদের স্বার্থই প্রাধান্য পায়, সাধারণ মানুষের নয়।

ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ইয়ান পিয়ারসনও মনে করেন, কেবল ধনীরা প্রথমে এই ‘অমরত্ব’ অর্জন করতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে কিছু সৌভাগ্যবান ব্যক্তি জিন প্রকৌশল, রোবোটিকস ও ডিজিটাল চেতনাকে ভার্চুয়াল জগতে বা কৃত্রিম শরীরে আপলোড করার মাধ্যমে হাজার বছরের আয়ু লাভ করতে পারবেন।

তাঁর আশা, এই প্রযুক্তি ধীরে ধীরে মধ্যবিত্তদের কাছেও পৌঁছাবে। পাশাপাশি তিনি ক্যানসার, হৃদ্‌রোগসহ বহু প্রাণঘাতী রোগের উন্নত চিকিৎসা এবং কোষের ক্ষয় মেরামতের মাধ্যমে বার্ধক্য রোধেরও আশা দেখান।

বায়োমেডিকেল জেরোনটোলজিস্ট অবারি ডি গ্রে বার্ধক্যকে একটি চিকিৎসাযোগ্য রোগ হিসেবে দেখেন এবং ২০৫০ সালের মধ্যে বার্ধক্যকে সারানো সম্ভব হবে বলে বিশ্বাস করেন।

তবে এত বছর বাঁচার পর মানুষের মধ্যে জীবন নিয়ে তাড়া বা আগ্রহ কমে যাবে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বিরক্ত। তিনি বলেন, যারা ১৫ বা ২০ বছর বয়সী তরুণ, এমনিতেই ৫০ বছর পর মৃত্যুর কথা ভেবে জীবন চালায় না।

অতএব, দীর্ঘায়ু মানুষকে নিষ্ক্রিয় বা অনুৎসাহী করে তুলবে—এ ধারণা সঠিক নয় বলেই তাঁর মত।

তথ্যসূত্র: পপুলার মেকানিকস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত