Ajker Patrika

সারের কৃত্রিম সংকট

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ০৮
সারের কৃত্রিম সংকট

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কৃষকদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। ভরা মৌসুমে সার না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। এ বিষয়ে গত সোমবার সারের ডিলার ‘মেসার্স মোস্তাফিজুর রহমান’ নামের এক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।

রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কৃষক মশিউর রহমান, শাহিনুর রহমান, কলাবাড়ীর ফারুখ আহমেদ, এমদাদুল হক, বারবান্দা এলাকার আবুল কাশেম ও পাটাধোয়াপাড়ার রুহুল আমিন জানান, সারের ডিলারেরা খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে রাতের আঁধারে সার বিক্রি করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন। পরে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি বস্তা পটাশ সারের সরকার নির্ধারিত মূল্য ৭৫০ টাকা, কিন্তু নেওয়া হচ্ছে ৯০০ টাকা। ইউরিয়া ৮০০ টাকা, নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার টাকা। ডিএপি ৮০০ টাকা হলেও নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৩০০। টিএসপি ১ হাজার ১০০ টাকা, কিন্তু নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা নিয়মিত সারের বাজার তদারকি না করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার কর্তিমারী বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম চাওয়ায় খুচরা সার বিক্রেতা বাবলু মিয়ার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান কয়েকজন কৃষক। তাঁদের দাবি, সব সারের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। ইউরিয়া সার কিনতে চাইলে ওই খুচরা বিক্রেতা ইউরিয়ার সঙ্গে অন্যান্য সার নিতে বাধ্য করছেন। এ নিয়ে কৃষক-বিক্রেতার মধ্যে ক্ষোভ, তর্কবিতর্ক দেখা দেয়। খুচরা বিক্রেতা বাবলু মিয়ার দাবি, ‘কৃষি অফিস থেকে এ নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে। তাই তাঁরা এ নিয়ম মানতে কৃষকদের বাধ্য করছেন।’

ঝাউবাড়ি এলাকার কৃষক গোলাম হোসেন বলেন, ‘আমার জমিতে বোরন সার দেওয়ার দরকার না থাকলেও জোর করে ইউরিয়ার সঙ্গে তা নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। বোরন ছাড়া ইউরিয়াসহ অন্যান্য সার পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করায় ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা জিম্মি করছেন কৃষকদের।’

বিসিআইসি সার ডিলার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কৃত্রিম সংকট নয়, বরং বরাদ্দ কম থাকায় বাজারে সারের সংকট দেখা দিয়েছে।’ কৃষকেরা সরাসরি সার না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২৭ টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিল, তা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। কৃষকেরা সার পেয়েছেন কি না তা আমার জানা নাই।’ গত ১০ দিন ধরে এমন অবস্থা চলছে বলে তিনি জানান।

নিয়মিত সারের বাজার তদারকি না করার কথা অস্বীকার করে রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘উপজেলায় রবি মৌসুমে সারের চাহিদা ৭০০ টনের জায়গায় ২৪৫ টন বরাদ্দ পাওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি রেজুলেশন আকারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। উপজেলায় মোট ১২ জন সারের ডিলার রয়েছে। এ ছাড়াও প্রত্যেক ইউনিয়নে ৯ জন করে খুচরা বিক্রেতা রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত