Ajker Patrika

মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন কাসিমপুরী

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন কাসিমপুরী ছিলেন একজন প্রখ্যাত লোকসাহিত্য সংগ্রাহক ও গবেষক। তাঁর জন্ম ১৯০১ সালের ২২ অক্টোবর নেত্রকোনার কেন্দুয়ার মদনপুর ইউনিয়নের কাসিমপুর গ্রামে।

সিরাজুদ্দীন কাসিমপুরী নরেন্দ্রনগর মিডল ইংলিশ স্কুল থেকে মাইনর পরীক্ষা পাস করে আশুজিয়ার জগন্নাথ চক্রবর্তী ইনস্টিটিউশনে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর আর্থিক কারণে পাঠ অসমাপ্ত রেখে রঘুনাথপুর পাঠশালায় শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে নেত্রকোনা ‘গুরু ট্রেনিং স্কুল’ থেকে জিটি এবং ‘ঢাকা নর্মাল স্কুল’ থেকে টিসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

সিরাজুদ্দীন কাসিমপুরী লোকসাহিত্য সংগ্রহে উৎসাহিত হন ১৯৩৮ সালে। সে বছরই বাংলার লোকসাহিত্য বিশেষজ্ঞ আশুতোষ ভট্টাচার্যের উদ্যোগে কিশোরগঞ্জ শহরে ‘পূর্ব ময়মনসিংহ সাহিত্য সম্মিলনী’র একাদশ বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে সিরাজুদ্দীন কাসেমপুরী বাংলার লোকসাহিত্য সম্পর্কে একটি তথ্যপূর্ণ প্রবন্ধ পাঠ করে সুধীজনের দৃষ্টি অকর্ষণ করতে সক্ষম হন। এ সেমিনারে সভাপতি ছিলেন ভাষাচার্য ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও আশুতোষ ভট্টাচার্য উভয়েই তাঁকে লোকসাহিত্য সংগ্রহ করার কাজে আত্মনিয়োগ করতে অনুপ্রাণিত করেন।

তাঁদের উৎসাহে স্বপ্রণোদিত হয়ে তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি লোকসাহিত্য সংগ্রহ শুরু এবং সেসবের ওপর গবেষণা করতে থাকেন।পাশাপাশি তিনি ঢাকা, কলকাতা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখেন। প্রবন্ধ লিখে তিনি বিদগ্ধজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হন।

লোকসাহিত্যবিষয়ক তাঁর তিনটি মূল্যবান গ্রন্থ হলো: লোকসাহিত্যে ছড়া, লোকসাহিত্যে ধাঁধা ও প্রবাদ এবং বাংলাদেশের লোকসঙ্গীত পরিচিতি।

শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ‘তঘমা-ই-খিদমত’ উপাধি লাভ করেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তিনি এ খেতাব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান সরকার তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।

১৯৬৮ সালে নেত্রকোনা সাহিত্য সংসদ তাঁকে ‘লোকসাহিত্য বিশারদ’ উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে তিনি ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন।

১৯৭৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত