Ajker Patrika

বেড়িবাঁধ সংস্কারে বাধা বিদ্যুতের খুঁটি-তার

এস এস শোহান, বাগেরহাট
বেড়িবাঁধ সংস্কারে বাধা বিদ্যুতের খুঁটি-তার

বাগেরহাটে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ও বৈদ্যুতিক তারের কারণে ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধ সংস্কারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিঠি চালাচালি চললেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

বৃষ্টির মৌসুম শুরু হওয়ার আগে কাজ না হলে, আবারও পুরোনো ভোগান্তিতে পড়বে এলাকার মানুষ। বেড়িবাঁধ কাজে সৃষ্টি হবে দীর্ঘসূত্রতা। এসব বিষয় চিন্তা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার অপসারণ করে বাঁধ সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধের সংস্কারকাজ শুরু হওয়ার আগেই বাঁধের ওপর ও বাঁধের পাশে থাকা বেশ কিছু খুঁটি ও বৈদ্যুতিক তার অপসারণের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দেয় পাউবো বাগেরহাটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক। চিঠির উত্তরে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম প্রকৌশলী পারভেজ আলম পাউবোকে জানান, খুঁটি উত্তোলন, পুনঃস্থাপন ও অন্যান্য মালামাল বাবদ পাউবোকে ৯ লাখ ৬৫ হাজার ২৯৫ টাকা প্রদান করতে হবে। পরে ৭ ডিসেম্বর পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক আবারও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দেন। ওই চিঠিতে বলা হয় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার অপসারণ এবং প্রতিস্থাপনের জন্য এই প্রকল্পে কোনো টাকা বরাদ্দ নেই। এই খাতে টাকা বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেওয়া হবে। বরাদ্দ পেলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনুকূলে টাকা জমা দেওয়া হবে। এ ছাড়া চিঠিতে আরও বলা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অপরিকল্পিতভাবে বাঁধের ওপর খুঁটি স্থাপন করেছে। যার কারণে বাঁধ নির্মাণকাজে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় চরগ্রামের আসলাম হোসেন বলেন, ‘৩০ বছর ধরে আমাদের এই বেড়িবাঁধটি নষ্ট ছিল। যার কারণে জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে আমাদের জীবন চলতে। বাঁধ নির্মাণ শুরু হওয়ায়, আমরা খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি নানা কারণে বারবার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হোক।’

গোলাম রসুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘বেড়িবাঁধের কারণে আমাদের গাছ, ঘরবাড়ি ও জমি নষ্ট করছি। তারপরও পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত কাজ শেষ হোক।’

বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক (সদর-কারিগরি) মোল্লা আবু জিহাদ বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাহিদা অনুযায়ী বৈদ্যুতিক খুঁটি ও লাইন স্থানান্তরের জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ক্ষতিপূরণের জন্য চিঠি দিয়েছি। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সমাধান হলে খুঁটি ও লাইন স্থানান্তর করা হবে।’

পাউবো বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করায় বাঁধ সংস্কারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ জন্য আমরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দিয়েছি। তারপরও তারা কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। যার কারণে সময়মতো কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।’

দীর্ঘদিন পরে গত ২১ নভেম্বর বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধ সংস্কার শুরু করে পাউবো বাগেরহাট। নাজিরপুর উপপ্রকল্পের অধীনে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাতছালা থেকে মুনিগঞ্জ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করার কথা রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত