Ajker Patrika

কবরীর দাঁত

সম্পাদকীয়
আপডেট : ২২ জুন ২০২৩, ১৫: ৩৯
কবরীর দাঁত

সুভাষ দত্ত তাঁর চলচ্চিত্র ‘সুতরাং’-এর জন্য একজন নতুন নায়িকাকে বেছে নিয়েছিলেন। মীনা পাল নামের মেয়েটি সিনেমায় এসে হলেন কবরী এবং জয় করে নিলেন দর্শকদের মন। কিন্তু কেন এই অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েটিকেই বেছে নিলেন সুভাষ দত্ত, সে কথা বলা হবে একেবারে শেষে। কবরীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল সংগীত পরিচালক সত্য সাহার মাধ্যমে। কবরী নামটা দিয়েছিলেন সুভাস দত্ত। তখন মেয়েটির বয়স মাত্র তেরো।

সুতরাং সিনেমার মহড়া হতো নানা জায়গায়। কখনো হতো সুভাষ দত্তের বাড়িতে। সুভাষ দত্তের স্ত্রী খুব আদর করতেন ছোট্ট মেয়েটাকে। রান্না করে খাওয়াতেন। তাঁর রান্নার হাত ছিল অসাধারণ। 

একবার মহড়া করতে গিয়ে সুভাষ দত্তের বাড়িতে দুই-তিন দিন ছিলেন কবরী। সে বাড়ি ছিল পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে। সে সময় লক্ষ্মীবাজারে বানরের খুব উৎপাত ছিল। দুপুরবেলা হাঁড়ি-পাতিল ধুয়ে সবে বারান্দায় রেখেছেন সুভাষ দত্তের স্ত্রী সীমা দত্ত; কিন্তু হঠাৎ কী হতে কী হয়ে গেল, বানরেরা এসে হাঁড়ি-পাতিল ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে উঠল গাছে। সীমা দত্তের কাকুতি-মিনতিকে গ্রাহ্যই করল না তারা। কী করে হাঁড়ি-পাতিল ফিরে পাওয়া যাবে? কবরী দেখেন আর হাসেন। শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাওয়া গেল কলা দিয়ে। কলার বিনিময়ে আবার ফিরে এল হাঁড়ি-পাতিল।

সুভাষ দত্ত কবরীকে উচ্চারণও শেখাতেন। কবরীর মনে প্রশ্ন জাগল, অসাধারণ সুন্দরী সব নায়িকা থাকতে নায়িকা হিসেবে তাঁকে কেন বেছে নিলেন সুভাষ দত্ত? তিনি একদিন বলেই বসলেন, ‘আমার তো পটোলচেরা চোখ নেই। নাকটাও খাড়া নয়। আমাকে কেন নায়িকা হিসেবে পছন্দ করেছিলেন?’ 

সুভাষ দত্ত হেসে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘তোমার নতুন দাঁত উঠেছিল তো। তাতে তোমার হাসিটা চমৎকার ছিল। ওই ঢেউখেলানো দাঁতের হাসির জন্যই তোমাকে নিয়েছি।’ 

‘সুতরাং’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৬৪ সালে। ছবির পরিচালক সুভাষ দত্তই অভিনয় করেছিলেন নায়কের ভূমিকায়। 

সূত্র: মতিউর রহমানকে দেওয়া কবরীর সাক্ষাৎকার, আমি একেবারে একলা মানুষ, প্রথম আলো, ১৪ নভেম্বর, ২০১৯

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত