Ajker Patrika

ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার নামে বালু তুলে বিক্রি

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার নামে বালু তুলে বিক্রি

নীলফামারীর ডিমলায় জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের বসতভিটা উন্নয়নের নামে তিস্তা নদী থেকে বালু ও পাথর তুলে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেলফ-হেল্প অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রাম (শার্প) নামের এনজিওর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে ‘বোমা মেশিন’ দিয়ে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে নদী গভীর হয়ে তীরবর্তী বাড়িঘর ও ফসলি জমি ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে তীরবর্তী পূর্ব ও পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের হাজারো একর ফসলি জমি ও বাড়িঘর ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে কালিগঞ্জ বেড়িবাঁধসহ আশপাশের ছয়টি ইউনিয়নের ফসলি জমি, জনবসতি ও স্থাপনা। নদীর দুই পারে গ্রাম রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধ ও ব্লক স্থাপন করে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করছে।

তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, বসতভিটা উঁচুকরণের নামে এনজিও শার্প কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্ট এলাকায় তিস্তা নদীতে ১০-১২টি বোমা মেশিন বসিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, লাখ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব বালু ও পাথর। নদীতে গভীরতা সৃষ্টি করে বালু-পাথর উত্তোলনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া আগামী বর্ষা মৌসুমে দেখা দিতে পারে।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুস সাত্তার সরকার বুলু বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে তীরবর্তী বাড়িঘর ও ফসলি জমিতে ভাঙন এবং পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা চিন্তা না করে মুনাফার জন্য শার্প এনজিওর যোগসাজশে একটি প্রভাবশালী মহল ধ্বংসলীলায় মেতে উঠেছে। তিনি বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শার্পের তিনজন কর্মকর্তা তিন ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন।

সংস্থার টুনিরহাট শাখার প্রকৌশলী সৌধন্য দোলন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পের আওতায় বসতভিটা উঁচুকরণের কাজের স্বার্থে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। তবে আমরা চারটি মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছি। অবশিষ্ট মেশিনের দায়ভার আমাদের নয়। বিষয়টি প্রশাসন ও স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ সবাইকে অবগত করা আছে।’

মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের লিখিত অনুমতি আছে কি না, জানতে চাইলে সৌধন্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবশ্যই লিখিত অনুমতি আছে। জেলা প্রশাসক ও ইউএনওকে জানান, তাঁরাই বলে দেবেন।’

কিন্তু শাখার তত্ত্বাবধায়ক মামনুর রশিদ বালু উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, এর দায়ভার তাঁদের নয়। তাঁরা শুধু উপকারভোগীদের টাকা দিচ্ছেন।

অন্যদিকে, এনজিওটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক জাভেদ আহমেদ বলেন, ‘মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের জন্য লিখিত আবেদন করেছি, এখনো অনুমতি পাইনি।’

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, তিনি কাউকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেননি। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত