Ajker Patrika

পানির স্তর নেমে তীব্র সংকট

রাজন চন্দ, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২২, ১৫: ১২
পানির স্তর নেমে তীব্র সংকট

তাহিরপুর উপজেলায় তীব্র পানিসংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপগুলোয় পানি উঠছে না। ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামবাসী।

এদিকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের টিউবওয়েলগুলোতে পানি না ওঠায় অনেকটা বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা পুকুরের পানি ব্যবহার করছেন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের অধিদপ্তরের মতে, অসংখ্য সাব-মার্সিবল পাম্প স্থাপন, ফসলি জমিতে সেচ ও গভীর নলকূপগুলো এর জন্য দায়ী। মূলত পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অগভীর টিউবওয়েলগুলোতে পানি সংকট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামার ফলে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট, কামড়াবন্দ, মোল্লাপাড়া, দীঘিরপাড়, সুন্দরপাহাড়ী, জামবাগ, ঘাগড়া, পাঠানপাড়া, ননাই, উত্তর বড়দল ইউনিয়নের শিমুলতলা, পৈলনপুর, খাসতাল, গুটিলা, মানিগাঁওসহ উপজেলা সাত ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামেই বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকাতেও টিউবওয়েলে মিলছে না পানি। গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়েই পুকুরের ময়লা পানি ফুটিয়ে পান করার পাশাপাশি তা ব্যবহার করছেন দৈনন্দিন কাজে। অনেকেই আবার কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে ফসলি জমিতে সেচ ও গভীর নলকূপের পানি কাঁধে কিংবা মাথায় করে আবার অনেকেই ভাড়ায় ঠেলা গাড়িতে নিয়ে আসছেন বিশুদ্ধ পানি। দুই মাস ধরে অগভীর টিউবওয়েলগুলোতে পানি না ওঠায় সংকটে আছে এ উপজেলার মানুষ।

উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের বাসিন্দা মো. নবী হোসেন বলেন, ‘পানির সংকট এখন আমাদের গ্রামেই নয়; ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে। এর আগে এ রকম সংকট দেখা যায়নি। এ বছর গ্রামের প্রতিটি টিউবওয়েলই পানি না ওঠায় অকেজো হয়ে আছে। টিউবওয়েলের হাতল ধরে চাপাচাপি করলেও পানি আসে না। ফলে আমরা কষ্টে আছি। আমাদের গভীর নলকূপ স্থাপনের সামর্থ্য নেই।’

উপজেলার সীমান্তবর্তী মাহারাম গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, সীমান্তবর্তী ও টিলা হওয়ায় তাঁদের পানির অভাব সারা বছরই। কিন্তু শুকনো মৌসুমে পানির সংকট প্রকট হয়। রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাসখানেক ধরে কোনো টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এমনকি ফসলি জমিতে সেচ দেওয়ার যন্ত্রেও পানি ওঠে না। তাই জাদুকাটা নদীর পানি এনে খাইতাছি। এভাবে চলতে থাকলে আমরা নানা রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হব।’

উপজেলার খাসতাল গ্রামের শাহ আলম ও শাহজাহান জানান, এ বছরের মতো আর কখনো পানি সংকটে পড়েননি তাঁরা। তাই বাধ্য হয়েই এখন প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি খান তাঁরা।

এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আল আমিন জানান, সাধারণত শুকনো মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। তাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে টিউবওয়েলগুলোতে পানি পাওয়া যাচ্ছে না।

এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে স্থাপন করা ২৫০ ফুট গভীর নলকূপগুলো থেকেও পানি উঠছে না। সরকারিভাবে স্থাপন করা গভীর পাম্পগুলোতে পানি উঠছে।

‘টিউবওয়েলে পানি না আসার বিষয়টি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে সমাধানের জন্য কথা বলেছি। আমরা বিষয়টি ওপর মহলেও জানিয়েছে। বিশুদ্ধ পানিসংকট সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ বলেন প্রকৌশলী আল আমিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত