Ajker Patrika

কবে বাজবে স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
Thumbnail image

যেকোনো লেভেল ক্রসিংয়ের কাছাকাছি ট্রেন এলে উচ্চ শব্দে (১০০ ডেসিবল) বাজবে অ্যালার্ম। জ্বলবে লালবাতি। ট্রেনটি কোন দিক থেকে আসছে, নির্দেশ করবে তা-ও। এমনকি দুই পাশে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পড়ে যাবে প্রতিবন্ধক (ব্যারিয়ার)। রেললাইন পারাপার না হওয়ার জন্য স্ক্রিনে ভেসে উঠবে ‘স্টপ’। ট্রেন চলে যাওয়ার পর সবুজবাতি সংকেত দেবে ক্রসিং পারাপার হওয়ার জন্য।

২০২১ সালে পরীক্ষামূলক এমন ট্রাফিক সিস্টেম চালু করে সফল হয়েছিলেন ওই সময়ের রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) অসীম কুমার তালুকদার। যিনি বর্তমানে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করছেন। ‘আনম্যানড লেভেল ক্রসিং গেট অটোমেশন’ শীর্ষক পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবকের পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। 

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের খৈয়াছড়ায় লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেন-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে ১৩ জন নিহত হওয়ার পর সেই ট্রাফিক সিস্টেমটি এখন আবারও আলোচনায় এসেছে। ওই ঘটনার পর রেলের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি সব লেভেল ক্রসিংয়ে স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম বেজে ওঠার সিস্টেম স্থাপন করা প্রয়োজন বলে এক নম্বর পরামর্শে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছেন কমিটির সদস্যরা।

এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লেভেল ক্রসিংয়ে সিস্টেমটি খুব দরকার। এটি এমন একটি সিস্টেম, যেখানে দুই কিলোমিটার দূরে ট্রেন এলে উচ্চ শব্দে অ্যালার্ম বেজে উঠবে। এতে ক্রসিংয়ে রেললাইন পারাপারে সবাই সতর্ক হয়ে যাবেন। তবে লেভেল ক্রসিংটি শতভাগ নিরাপদ করতে হলে পথচারী ও গাড়ির চালকদের অবশ্যই সংকেত মানতে হবে।’

এটি উদ্ভাবনের পর রেলপথ মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ১০ জুন পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে সিস্টেমটি চালু করার জন্য আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য নির্দেশনা দেয়। এই সিস্টেমে লেভেল ক্রসিংগুলোতে কোনো গেটম্যানের দরকার হয় না।

রেলওয়েতে ১ হাজারের বেশি অননুমোদিত লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চলে ৮৫০ এবং পশ্চিমাঞ্চলে ১৮৬টি রয়েছে। এসব ক্রসিংয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, হচ্ছে প্রাণহানি। এ সিস্টেম ব্যবহার করলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পটি এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যেই রয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে, অথচ উন্নত দেশে ট্রাফিক সিস্টেমটি চালু রয়েছে। ফলে ওই সব দেশে ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা হয় না বললেই চলে।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘ডিজিটাল ট্রাফিক সিস্টেমের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে বাস্তবায়নের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী সুশীল কুমার হালদার বলেন, ‘ডিজিটাল এ ট্রাফিক সিস্টেমটি বাস্তবায়ন হলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে। তবে এর আগে নিশ্চিত করতে হবে লোকবল নিয়োগের বিষয়টি। সিস্টেমটি চালু হলে সেগুলো মেনটেইন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিতে হবে। তারপর ডিজিটাল এই সিস্টেম চালু করা যাবে। অন্যথায় হিতে-বিপরীত হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত