Ajker Patrika

কিষানি থেকে শ্রেষ্ঠ জয়িতা

প্রদীপ কুমার গোস্বামী, মিঠাপুকুর
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮: ১২
কিষানি থেকে শ্রেষ্ঠ জয়িতা

বাড়ির মাত্র ১০ শতক জমির ফাঁকা জায়গায় সবজি চাষ দিয়ে শুরু হয়েছিল যাত্রা। বর্তমানে জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতক। যার পুরোটা পরিণত হয়েছে পারিবারিক কৃষিখামারে। এই সফলতার কল্যাণে মিলেছে একের পর এক স্বীকৃতি। সর্বশেষ পাওয়া গেছে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা।

বলছিলাম নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার স্মৃতিবিজড়িত মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ ইউনিয়নের কিষানি সূর্য্য বেগমের কথা। তিনি চুহড় কৃষি ব্লকের আওতাধীন ইসলামপুর নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

সূর্য্য অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে ২০২০ সালের শ্রেষ্ঠ জয়িতা হয়েছেন। বসতবাড়ির আশপাশের পরিত্যক্ত জমিতে চাষাবাদ করে আর্থিকভাবে সফল এই নারী বিভাগের সেরা পাঁচ জয়িতার একজন হন। মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। সেই সঙ্গে তিনি সনদ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা পেয়েছেন।

সূর্য্যের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে কথা হয় গত শুক্রবার। স্বামী, চার ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার। আলাপচারিতায় তিনি জানান, ২০ বছর আগে ১০ শতক জমিতে শাকসবজি, ঘরের চালে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, শিম ও নলকূপের নালার মাথায় গর্ত করে মাছ চাষ এবং গর্তের ওপর কবুতর পালনসহ বহুমুখী কৃষি উৎপাদন শুরু করেন। বাড়িতে এক খণ্ড জমিও পতিত রাখেননি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় বাড়িকে পরিণত করেন খামারে। এভাবেই তাঁর এগিয়ে চলা।

বর্তমানে সূর্য্যের পরিবারের জমির পরিমাণ ৭৫ শতক। ২০ শতকে চালকল বসিয়েছিলেন। কিন্তু মহাসড়ক চার লেন করার জন্য ১৯ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণের টাকা এখনো পাননি বলে জানান তাঁর স্বামী আজিজুল ইসলাম।

জমির এক দিকে চার ছেলেকে নিয়ে সূর্য্য থাকেন। বাকি অংশে রয়েছে মাল্টা, কমলা, ড্রাগনসহ বিভিন্ন ফলের বাগান। বাগানের ফাঁকে ফাঁকে শাকসবজি চাষ করেন। বাগানের জৈব সারের চাহিদা পূরণে এক অংশে সার তৈরি করেন। বাড়ির আশপাশে প্রায় ১০০ শজনেগাছ লাগিয়েছেন। শজনে বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে পরিবারের খরচ চলে যায়। এ ছাড়া প্রতি বছর মাল্টা ও ড্রাগন ফল থেকে দেড় থেকে ২ লাখ টাকা আয় হয়।

সূর্য্যের কৃষিকাজে সার্বিকভাবে সহায়তা করেন স্বামী আজিজুল। তাঁদের বাড়িতে ২০০১ সালে এসেছিলেন তৎকালীন কৃষি প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাড়ি খামারে পরিণত করায় সূর্য্য ২০০৫ সালে জাতীয় কৃষি পুরস্কার (স্বর্ণ পদক) পান। তিনি ২০১২ সালে সরকারি খরচে ভিয়েতনাম সফর করেন। ২০১৮ সালে পান সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমানের চালু করা শেফালী বেগম স্মৃতি পদক। তিনি বিভাগীয় পর্যায়ের আগে উপজেলা ও জেলা পর্যায়েও জয়িতা হয়েছেন।

সূর্য্য জানান, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় কৃষি উৎপাদনে কিছুটা ভাটা পড়েছে। চিকিৎসা করাতে প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন একটু সুস্থ আছেন। তাঁর স্বামী আজিজুল জানান, তিনি স্ত্রীর সাফল্যে গর্ববোধ করেন।

কৃষি উৎপাদনে নারীদের অংশ গ্রহণ বাড়াতে একটি শিখন খামার গড়ে তোলার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন সূর্য্য। এ জন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত