Ajker Patrika

চাল আমদানির প্রভাব ধানে

মো. শফিকুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২২, ১৪: ২১
চাল আমদানির প্রভাব ধানে

চাল আমদানির প্রভাব পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর তীরের বিওসি ঘাটের ধানের হাটে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে হাটে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে প্রায় ১০০ টাকা।

পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই হাটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধানের বেচা কেনা কমেছে প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ। চাল আমদানি অব্যাহত থাকলে চালের বাজারদর আরও কমবে এমন শঙ্কা থেকে ধান কেনা কমিয়ে দিয়েছেন চালকল মালিকেরা। এর ফলে প্রভাব পড়েছে চালের বাজারেও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর তীরে বিওসি ঘাটে ধানের মৌসুমে দৈনিক অন্তত ১ লাখ মণ ধান বেচাকেনা হয়।

চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে অভ্যন্তরীণভাবে সংগ্রহের পাশাপাশি বিদেশ থেকে চাল আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। ২৫ শতাংশ কর আরোপ করে ৩৮০টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১০ লাখ টন চাল আমদানি করা হবে। গত ২১ জুলাই থেকে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। আমদানি করা চাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাজারে প্রবেশ করলে দর আরও কমে যাওয়ার শঙ্কা থেকে মোকাম থেকে ধান কেনা কমিয়ে দিয়েছেন চালকল মালিকেরা। হাটে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ মন ধান বেচাকেনা হলেও এখন দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ হাজার মণ ধান বেচাকেনা হচ্ছে।

মিল মালিকেরা বলছেন, প্রয়োজন ছাড়া তাঁরা খুব বেশি ধান কিনছেন না এখন। তাঁদের দাবি আমদানি করা চাল বাজারে আসার পর তাঁরা আবার ধান কিনবেন। মোকামে এখন বিআর-২৯ ধান প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১১২০ টাকায়। মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯২০ টাকা দরে। অথচ দিন দশেক আগেও বিআর-২৯ ধান প্রতিমণ ১১৫০ থেকে ১১৬০ টাকায় এবং মোটা ধান বিক্রি হয়েছে ৯৫০ থেকে ৯৭০ টাকা দামে।

এদিকে, ধানের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে কমেছে চালের দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে ১০০ টাকা কমে আশুগঞ্জের চালকলগুলো থেকে বিআর-২৮ চাল প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৪৫০ টাকায় এবং বিআর-২৯ বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০ টাকা দরে।

ধান ব্যাপারী খুরশেদ মিয়া বলেন, ‘ভারতীয় চাল আমদানির কারণে ধানের বেচাকেনা কমেছে। লোকসানের আশঙ্কায় চালকল মালিকেরা ধান নিচ্ছেন কম। এতে করে ধানের দাম কমে গেছে। আর দাম কমার কারণে ব্যাপারীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।

আশুগঞ্জের চাল ব্যবসায়ী হাছান ইমরান বলেন, ‘ভারত থেকে যখনই চাল আমদানি হয়, তখনই দেশের বাজারে চালের দাম কমে যায়। এ জন্য এবার সরকার যখন ভারত থেকে চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে তখন থেকেই ব্যবসায়ীরা ধান-চাল কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। যদি অবাধে চাল আসে ভারত থেকে তাহলে দেশীয় চালের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

জেলা হাসকিং মালিক সমিতি সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. উবায়দুল্লাহ মিয়া বলেন, আমদানি করা চাল নিয়ে তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। ফলে প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত কোনো ধান তাঁরা কিনছেন না।

জেলা অটো ড্রায়ার মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল করিম খান সাজু বলেন, ‘মিল চালু রাখার জন্য যতটুকু প্রয়োজন, মিল মালিকেরা এখন ততটুকুই ধান কিনছেন। এর ফলে মোকামে ধানের বেচা-কেনা কমে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত