Ajker Patrika

‘বেতন ছাড় করতে’ অধ্যক্ষের গোপন নির্বাচন

কালীগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮: ২৮
‘বেতন ছাড় করতে’ অধ্যক্ষের গোপন নির্বাচন

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসায় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন করেছে।

জানা গেছে, ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী প্রায় অর্ধকোটি টাকার বেতন ছাড় করানোর জন্য অনিয়মতান্ত্রিকভাবে এ নির্বাচন সম্পন্ন করেছে।

কোনো প্রকার তফশীল বিজ্ঞপ্তি ছাড়া নিয়ম বহির্ভূত ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। এ নির্বাচন সম্পর্কে দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক শিক্ষক কেউ কিছুই জানেন না।

অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী নিজের স্বার্থের জন্য রেজুলেশন খাতায় কয়েক জনের কাছ থেকে ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর করে নেওয়া ছাড়া আর কাউকে জানতে দেওয়া হয়নি। অত্র ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা । তাঁর অফিসে বসে তাঁর ঘনিষ্ঠ তিনজন কে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত দেখিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন।

ঘটনাটি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসায়। অত্র মাদ্রাসার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম। অথচ তিনি বললেন এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আবার তিনি নির্বাচন দেখিয়ে পনেরো সদস্যের একটি ম্যানেজিং কমিটির কাগজে তাঁর সুপারিশ নিয়ে অধ্যক্ষ অনুমোদনের জন্য ঢাকা ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরারব পাঠিয়েছেন।

জানা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং তারিখে দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য নির্বাচন চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র মাদ্রাসার সভাপতি বরাবর আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত ৪ অক্টোবর ২০২১ ইং তারিখে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেন।

এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় সরেজমিনে দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গেলে অভিভাবক সদস্য সোহাগ, মিজানুর রহমান, মেনন, নুর মোহাম্মাদ, শেখ আব্দুল হান্নান, দাতা সদস্য আবু তালেব, প্রাক্তন সভাপতি নুরুল হক সরদার, ছাড়াও অত্র মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক নুরুল আমিন, আসাদুল ইসলাম, নুর ইসলাম, মোবারক, সাজিদ, আমজাদ হোসেন, পিয়ন, সবুর, সাকের সহ মাদ্রাসা সংলগ্ন বাজারের ব্যবসায়ী আলিম আল রাজি, তাপস, সুমন, আরিফুল, আব্দুর রহিমসহ সবাই সাংবাদিকদের জানান, মাদ্রাসা বন্ধ। শুধু পরীক্ষার জন্য কয়েক দিন খোলা ছিল। নির্বাচন সমন্ধে তাঁরা কিছুই জানেন না। মাদ্রাসায় কোনো নির্বাচন হয়নি।

২০২০ সালের মার্চ মাসের শুধু মাত্র বেতনের জন্য আদালতের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শুধু মাত্র বেতন বিলে বিলে সই করার নির্দেশনা আছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, এর মধ্যে বেতন ছাড় করানোর জন্য পকেট কমিটি করে পার পাওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য আব্দুল কাদের হেলালীর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘ আপনাদের সমস্ত বিষয়ে জানার কি দরকার। কে আপনাদের জানতে বলেছে। আমি নিয়ম মাফিক নির্বাচন করেছি। ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক শিক্ষকেরা জানে কি না ব্যাপারে কোনো সদউত্তর দিতে পারেননি।’

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং অফিসার শফিকুল ইসলামের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কাগজ পত্র আছে বললেও শুধু রেজাল্ট শিট ছাড়া কোনো কিছুই দেখাতে পারেনি।

ঘটনার আরও সত্যতা জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি খন্দকার রবিউল ইসলামের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বলেছি।’ আদৌও নির্বাচন হয়েছে কি না এমন কোনো উত্তর মেলেনি। তিনি বলেন, ‘আমি জানি মৎস্য কর্মকর্তা একজন ভালো লোক। তিনি এমন কাজ করতে পারে আমার ভাবতে অবাক লাগছে। বিষয়টি আমি দেখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নতুন বেতনকাঠামো আসছে, পে কমিশন গঠন

ব্যাংকে চোখ বেঁধে গ্রাহককে হাতুড়িপেটা, পায়ের নখ তোলার চেষ্টা

‘সোজা কথা, যারে ভালো লাগবে তারে কোপামু’

শুল্ক ছাড়া যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানির সুযোগ পেল ভারত

সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়াতে পারে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া—শক্তিতে কে বেশি এগিয়ে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত