চিররঞ্জন সরকার

অনেক প্রতীক্ষার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন শেষ হয়েছে বড় ধরনের সহিংসতা ছাড়াই। আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এবারের নির্বাচনকে যথেষ্ট ভালো বলতে হবে। মোটাদাগে নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হয়েছে। এবার প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনার একটা গ্রহণযোগ্য ভালো নির্বাচনই উপহার দিয়েছে।
একশ্রেণির মানুষ এই নির্বাচনকে যতই ‘তামাশার নির্বাচন’, ‘প্রহসনের নির্বাচন’, ‘একতরফা নির্বাচন’ ইত্যাদি অভিধা দিক না কেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য এই নির্বাচন অনিবার্য ছিল। যারা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, সেটা তাদের নিজস্ব বিবেচনা।কিন্তু নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতা পরিবর্তনের অন্য কোনো পথ খোলা নেই।
হ্যাঁ, আওয়ামী লীগ হয়তো দেশের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর ব্যাপারে খুব বেশি আন্তরিক ছিল না। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব কৌশল বিবেচনায় নিলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বড় বেশি দোষ দেওয়া যায় না। কারণ, কোনো রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যই হচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়া, ক্ষমতায় গিয়ে দলের নীতি-কর্মসূচি-আদর্শ ইত্যাদি বাস্তবায়ন করা। বিএনপির দাবি মেনে যদি আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিত, তাহলে তাদের নিশ্চিত বিজয় অর্জন সম্ভব হতো না। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ চাইবে, বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করে ফেলার এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ক্ষমতায় থাকার।
আওয়ামী লীগ সে কাজটিই করেছে। এতে বিএনপির সমর্থকেরা নাখোশ হতে পারেন, কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে এ জন্য খুব বেশি দোষারোপ করার কোনো কারণ আছে বলে মনে হয় না। কারণ রাজনীতি শেষ বিচারে কৌশলেরই খেলা। এই কৌশলের খেলায় আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সুযোগ থাকলে এই কৌশলই প্রয়োগ করত।
২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য হেন কোনো কৌশল নেই যা প্রয়োগ করেনি। তারা আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যা করতেও সচেষ্ট হয়েছে। খালেদা জিয়া ও তাঁর পুত্র তারেক রহমান সবকিছু জেনেও এই নৃশংস ঘটনাকে আড়াল করতে চেয়েছেন। শেখ হাসিনার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে গ্রেনেড বের হয়েছে বলেও তাঁরা মন্তব্য করেছেন। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়েও তাঁরা সীমাহীন চালাকির খেলা খেলেছেন।
প্রথমে সংবিধান সংশোধন করে পছন্দের ব্যক্তি বিচারপতি কে এম হাসান যেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেন, সে জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসর গ্রহণের বয়স বাড়ানো হয়। এর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সোচ্চার হলে সব ধরনের নিয়মনীতি অগ্রাহ্য করে বিএনপি দলীয় রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বানিয়ে পুরো ব্যবস্থার বারোটা বাজাতে এককভাবে অবদান রেখেছে।
ক্ষমতায় থাকার উদগ্র আকাঙ্ক্ষা এবং বিভিন্ন গণবিরোধী উদ্যোগের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ তীব্র গণ-আন্দোলন গড়ে তুললে সেই সময় রাজনৈতিক সংঘাত দেখা দেয়। সেই সংঘাতের জের ধরে দেশে ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের নেতৃত্বে সেনানিয়ন্ত্রিত বিশেষ সরকার ক্ষমতাসীন হয়। সেই সময় রাজনীতিতে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ বাস্তবায়নেরও চেষ্টা করা হয়। দেশের প্রধান দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে তখন জেলে অন্তরীণ রাখা হয়।
শেষ পর্যন্ত ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের সরকার রাজনৈতিক বিক্ষোভের চাপে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ থেকে সরে আসে। দুই নেত্রীকে মুক্তি দিয়ে অবশেষে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সব দলের অংশগ্রহণে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হন। এরপর থেকে দেশে চলছে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নিজস্ব কৌশল প্রয়োগের রাজনীতি। এই রাজনীতি ভালো না খারাপ, সেই মূল্যায়নে না গিয়েও বলা যায়, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ১৫ বছরে আওয়ামী লীগকে কাবু করার মতো কোনো কর্মসূচি এখনো দিতে পারেনি; বরং আওয়ামী লীগ নানা কৌশলে বিএনপির রাজনীতিকে প্রায় ছন্নছাড়া বানিয়ে ফেলেছে। আদালতের দণ্ড নিয়ে বিএনপিপ্রধান খালেদা জিয়া অন্তরীণ অবস্থায় নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছেন। পক্ষান্তরে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান একাধিক মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ নিয়ে ফেরার আসামি হিসেবে লন্ডনে আছেন।
১৫ বছরে বিএনপি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনেক ‘শক্ত’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। জ্বালাও-পোড়াও, হরতাল-অবরোধ অসহযোগ, গণকারফিউসহ নানা কর্মসূচি দিয়েছে। কিন্তু তারা আওয়ামী লীগকে ‘ধাক্কা’ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি করতে পারেনি; বরং আওয়ামী লীগের কৌশলের কাছে দলটি ক্রমেই ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে।
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনেক সমালোচনা আছে। এর অনেকগুলো নিঃসন্দেহে গুরুতর। কিন্তু দল হিসেবে বিএনপি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি যে আচরণ করেছে, তার তুলনায় আওয়ামী লীগের সব কৌশলই তুচ্ছ। আওয়ামী লীগ আর যা কিছুই করুক না কেন, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেনি। কখনো গ্রেনেড কিংবা বোমা মেরে খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমানকে খতম করার জন্য কাউকে লেলিয়ে দেয়নি। বিএনপির আজকের পরিণতির জন্য তাদের শীর্ষ নেতৃত্বই দায়ী। এ জন্য শুধু আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করা যায় না।
যা-ই হোক, দ্বাদশ নির্বাচনের দিকে মনোনিবেশ করা যাক। এবারের জাতীয় নির্বাচনটি নানা দিক থেকেই বিশিষ্ট। এবারের নির্বাচনে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে সদিচ্ছা থাকলে দলীয় সরকারের অধীনেও একটা ভালো নির্বাচন করা যায়। নানা রকম প্রতিকূলতার কারণে এবার ভোটার উপস্থিতির পরিমাণ হয়তো কিছুটা কম হয়েছে, কিন্তু নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে, এটা জোর দিয়েই বলা যায়। কিছু অনিয়ম ও সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের খুব বেশি সমালোচনা নেই। যেটুকু যা অনিয়ম হয়েছে, ১২ কোটি ভোটারের দেশে, তা খুবই সামান্য।
দ্বাদশ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এক ঢিলে অনেকগুলো পাখি শিকার করেছে। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পৃথক প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিয়ে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করেছে। আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভরশীল সমমনা দলগুলোকে সমঝোতার ভিত্তিতে কিছু আসন বরাদ্দ করলেও নির্বাচনে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে লড়ে জিতে আসার চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়ে তাদের শক্তিমত্তার পরীক্ষা নিয়েছে। এই শক্তি পরীক্ষায় জোটের শরিকেরা ডাহা ফেল করেছেন। ইনু-বাদশার মতো নেতারা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন। যেসব নেতা আওয়ামী লীগের ‘বদান্যতার’ আশায় নির্বাচনে ভিড়েছিলেন, সেই শমশের মুবিন চৌধুরী, তৈমূর আলম খন্দকার, কাদের সিদ্দিকী, মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের মতো নেতারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কাছে গো-হারা হেরেছেন।
সবচেয়ে উচিত শিক্ষা পেয়েছে জাতীয় পার্টি। স্বৈরশাসক এরশাদ-সৃষ্ট এই সুবিধাবাদী দলটি এবার মাত্র কয়েকটি আসনে বিজয়ী হয়ে নিজেদের করুণ অস্তিত্ব নতুন করে বুঝে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। বড় বড় বুলি উচ্চারণে দক্ষ এ দলটি এবার বিরোধী দলের আসন লাভের সুযোগটিও হারিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সুবিধা গ্রহণ করে ভিন্ন একটা সাইনবোর্ড নিয়ে টিকে থাকা যে সম্ভব নয়, এটা এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীনেরা শরিকদের ভালোভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। ১৫ বছর ধরে যাঁরা আওয়ামী লীগের অনুগ্রহে এমপি ছিলেন, তাঁরা যে নিজ নির্বাচনী আসনে সাধারণ মানুষের সমর্থন অর্জন করতে পারেননি, এবারের নির্বাচনে তা স্পষ্ট হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ আরও বেশি সংহত হয়েছে। তাঁরা এটাও বুঝেছেন যে কেন্দ্রীয়ভাবে যাঁদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়, তা সব ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। তাই তো দলীয় নৌকা প্রতীক নিয়েও অনেকে জিততে পারেননি। জিতেছেন ভিন্ন প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ভবিষ্যতে জনপ্রিয়তা যাচাই করে প্রার্থী মনোনয়ন দিলে দল ভালো করবে, এটাও আওয়ামী লীগের জন্য একটা শিক্ষা।
এবারের নির্বাচনে বিদেশিদের পক্ষ থেকে একটা বড় চাপ ছিল। এই চাপ শিগগিরই কাটবে বলে মনে হয় না। হয়তো নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞাও আসবে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতির দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুনভাবে এগোতে হবে। হ্যাঁ, বিদেশি শক্তির কাছে মাথা বিকিয়ে দেওয়া নয়, কিন্তু তাদের চটিয়ে দেশের কল্যাণ সব সময় সম্ভব নয়।
এখানে প্রয়োজন কূটনৈতিক দূরদৃষ্টির। বিরোধ-বিসংবাদ, হিংসা-হানাহানির পথ পরিহার করতে হবে। দুর্নীতি, হুন্ডি, বিদেশে অর্থ পাচারের মতো গুরুতর অনিয়মগুলো দূর করার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, বিএনপির পাপের কারণে ক্ষমতাসীনদের সব কৌশলই হয়তো মানুষ মেনে নিচ্ছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের পাপ যদি বিএনপির পাপের বোঝাকেও ছাড়িয়ে যায়, তাহলে মানুষের বিদ্রোহ করা ছাড়া অন্য কোনো পথ থাকবে না। সেই বিদ্রোহের ফল ক্ষমতাসীনদের জন্য মোটেও শুভ হবে না।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট

অনেক প্রতীক্ষার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন শেষ হয়েছে বড় ধরনের সহিংসতা ছাড়াই। আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এবারের নির্বাচনকে যথেষ্ট ভালো বলতে হবে। মোটাদাগে নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হয়েছে। এবার প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনার একটা গ্রহণযোগ্য ভালো নির্বাচনই উপহার দিয়েছে।
একশ্রেণির মানুষ এই নির্বাচনকে যতই ‘তামাশার নির্বাচন’, ‘প্রহসনের নির্বাচন’, ‘একতরফা নির্বাচন’ ইত্যাদি অভিধা দিক না কেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য এই নির্বাচন অনিবার্য ছিল। যারা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, সেটা তাদের নিজস্ব বিবেচনা।কিন্তু নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতা পরিবর্তনের অন্য কোনো পথ খোলা নেই।
হ্যাঁ, আওয়ামী লীগ হয়তো দেশের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর ব্যাপারে খুব বেশি আন্তরিক ছিল না। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব কৌশল বিবেচনায় নিলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বড় বেশি দোষ দেওয়া যায় না। কারণ, কোনো রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যই হচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়া, ক্ষমতায় গিয়ে দলের নীতি-কর্মসূচি-আদর্শ ইত্যাদি বাস্তবায়ন করা। বিএনপির দাবি মেনে যদি আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিত, তাহলে তাদের নিশ্চিত বিজয় অর্জন সম্ভব হতো না। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ চাইবে, বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করে ফেলার এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ক্ষমতায় থাকার।
আওয়ামী লীগ সে কাজটিই করেছে। এতে বিএনপির সমর্থকেরা নাখোশ হতে পারেন, কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে এ জন্য খুব বেশি দোষারোপ করার কোনো কারণ আছে বলে মনে হয় না। কারণ রাজনীতি শেষ বিচারে কৌশলেরই খেলা। এই কৌশলের খেলায় আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সুযোগ থাকলে এই কৌশলই প্রয়োগ করত।
২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য হেন কোনো কৌশল নেই যা প্রয়োগ করেনি। তারা আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যা করতেও সচেষ্ট হয়েছে। খালেদা জিয়া ও তাঁর পুত্র তারেক রহমান সবকিছু জেনেও এই নৃশংস ঘটনাকে আড়াল করতে চেয়েছেন। শেখ হাসিনার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে গ্রেনেড বের হয়েছে বলেও তাঁরা মন্তব্য করেছেন। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়েও তাঁরা সীমাহীন চালাকির খেলা খেলেছেন।
প্রথমে সংবিধান সংশোধন করে পছন্দের ব্যক্তি বিচারপতি কে এম হাসান যেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেন, সে জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসর গ্রহণের বয়স বাড়ানো হয়। এর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সোচ্চার হলে সব ধরনের নিয়মনীতি অগ্রাহ্য করে বিএনপি দলীয় রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বানিয়ে পুরো ব্যবস্থার বারোটা বাজাতে এককভাবে অবদান রেখেছে।
ক্ষমতায় থাকার উদগ্র আকাঙ্ক্ষা এবং বিভিন্ন গণবিরোধী উদ্যোগের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ তীব্র গণ-আন্দোলন গড়ে তুললে সেই সময় রাজনৈতিক সংঘাত দেখা দেয়। সেই সংঘাতের জের ধরে দেশে ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের নেতৃত্বে সেনানিয়ন্ত্রিত বিশেষ সরকার ক্ষমতাসীন হয়। সেই সময় রাজনীতিতে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ বাস্তবায়নেরও চেষ্টা করা হয়। দেশের প্রধান দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে তখন জেলে অন্তরীণ রাখা হয়।
শেষ পর্যন্ত ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের সরকার রাজনৈতিক বিক্ষোভের চাপে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ থেকে সরে আসে। দুই নেত্রীকে মুক্তি দিয়ে অবশেষে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সব দলের অংশগ্রহণে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হন। এরপর থেকে দেশে চলছে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নিজস্ব কৌশল প্রয়োগের রাজনীতি। এই রাজনীতি ভালো না খারাপ, সেই মূল্যায়নে না গিয়েও বলা যায়, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ১৫ বছরে আওয়ামী লীগকে কাবু করার মতো কোনো কর্মসূচি এখনো দিতে পারেনি; বরং আওয়ামী লীগ নানা কৌশলে বিএনপির রাজনীতিকে প্রায় ছন্নছাড়া বানিয়ে ফেলেছে। আদালতের দণ্ড নিয়ে বিএনপিপ্রধান খালেদা জিয়া অন্তরীণ অবস্থায় নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছেন। পক্ষান্তরে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান একাধিক মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ নিয়ে ফেরার আসামি হিসেবে লন্ডনে আছেন।
১৫ বছরে বিএনপি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনেক ‘শক্ত’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। জ্বালাও-পোড়াও, হরতাল-অবরোধ অসহযোগ, গণকারফিউসহ নানা কর্মসূচি দিয়েছে। কিন্তু তারা আওয়ামী লীগকে ‘ধাক্কা’ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি করতে পারেনি; বরং আওয়ামী লীগের কৌশলের কাছে দলটি ক্রমেই ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে।
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনেক সমালোচনা আছে। এর অনেকগুলো নিঃসন্দেহে গুরুতর। কিন্তু দল হিসেবে বিএনপি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি যে আচরণ করেছে, তার তুলনায় আওয়ামী লীগের সব কৌশলই তুচ্ছ। আওয়ামী লীগ আর যা কিছুই করুক না কেন, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেনি। কখনো গ্রেনেড কিংবা বোমা মেরে খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমানকে খতম করার জন্য কাউকে লেলিয়ে দেয়নি। বিএনপির আজকের পরিণতির জন্য তাদের শীর্ষ নেতৃত্বই দায়ী। এ জন্য শুধু আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করা যায় না।
যা-ই হোক, দ্বাদশ নির্বাচনের দিকে মনোনিবেশ করা যাক। এবারের জাতীয় নির্বাচনটি নানা দিক থেকেই বিশিষ্ট। এবারের নির্বাচনে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে সদিচ্ছা থাকলে দলীয় সরকারের অধীনেও একটা ভালো নির্বাচন করা যায়। নানা রকম প্রতিকূলতার কারণে এবার ভোটার উপস্থিতির পরিমাণ হয়তো কিছুটা কম হয়েছে, কিন্তু নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে, এটা জোর দিয়েই বলা যায়। কিছু অনিয়ম ও সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের খুব বেশি সমালোচনা নেই। যেটুকু যা অনিয়ম হয়েছে, ১২ কোটি ভোটারের দেশে, তা খুবই সামান্য।
দ্বাদশ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এক ঢিলে অনেকগুলো পাখি শিকার করেছে। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পৃথক প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিয়ে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করেছে। আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভরশীল সমমনা দলগুলোকে সমঝোতার ভিত্তিতে কিছু আসন বরাদ্দ করলেও নির্বাচনে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে লড়ে জিতে আসার চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়ে তাদের শক্তিমত্তার পরীক্ষা নিয়েছে। এই শক্তি পরীক্ষায় জোটের শরিকেরা ডাহা ফেল করেছেন। ইনু-বাদশার মতো নেতারা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন। যেসব নেতা আওয়ামী লীগের ‘বদান্যতার’ আশায় নির্বাচনে ভিড়েছিলেন, সেই শমশের মুবিন চৌধুরী, তৈমূর আলম খন্দকার, কাদের সিদ্দিকী, মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের মতো নেতারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কাছে গো-হারা হেরেছেন।
সবচেয়ে উচিত শিক্ষা পেয়েছে জাতীয় পার্টি। স্বৈরশাসক এরশাদ-সৃষ্ট এই সুবিধাবাদী দলটি এবার মাত্র কয়েকটি আসনে বিজয়ী হয়ে নিজেদের করুণ অস্তিত্ব নতুন করে বুঝে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। বড় বড় বুলি উচ্চারণে দক্ষ এ দলটি এবার বিরোধী দলের আসন লাভের সুযোগটিও হারিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সুবিধা গ্রহণ করে ভিন্ন একটা সাইনবোর্ড নিয়ে টিকে থাকা যে সম্ভব নয়, এটা এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীনেরা শরিকদের ভালোভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। ১৫ বছর ধরে যাঁরা আওয়ামী লীগের অনুগ্রহে এমপি ছিলেন, তাঁরা যে নিজ নির্বাচনী আসনে সাধারণ মানুষের সমর্থন অর্জন করতে পারেননি, এবারের নির্বাচনে তা স্পষ্ট হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ আরও বেশি সংহত হয়েছে। তাঁরা এটাও বুঝেছেন যে কেন্দ্রীয়ভাবে যাঁদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়, তা সব ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। তাই তো দলীয় নৌকা প্রতীক নিয়েও অনেকে জিততে পারেননি। জিতেছেন ভিন্ন প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ভবিষ্যতে জনপ্রিয়তা যাচাই করে প্রার্থী মনোনয়ন দিলে দল ভালো করবে, এটাও আওয়ামী লীগের জন্য একটা শিক্ষা।
এবারের নির্বাচনে বিদেশিদের পক্ষ থেকে একটা বড় চাপ ছিল। এই চাপ শিগগিরই কাটবে বলে মনে হয় না। হয়তো নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞাও আসবে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতির দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুনভাবে এগোতে হবে। হ্যাঁ, বিদেশি শক্তির কাছে মাথা বিকিয়ে দেওয়া নয়, কিন্তু তাদের চটিয়ে দেশের কল্যাণ সব সময় সম্ভব নয়।
এখানে প্রয়োজন কূটনৈতিক দূরদৃষ্টির। বিরোধ-বিসংবাদ, হিংসা-হানাহানির পথ পরিহার করতে হবে। দুর্নীতি, হুন্ডি, বিদেশে অর্থ পাচারের মতো গুরুতর অনিয়মগুলো দূর করার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, বিএনপির পাপের কারণে ক্ষমতাসীনদের সব কৌশলই হয়তো মানুষ মেনে নিচ্ছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের পাপ যদি বিএনপির পাপের বোঝাকেও ছাড়িয়ে যায়, তাহলে মানুষের বিদ্রোহ করা ছাড়া অন্য কোনো পথ থাকবে না। সেই বিদ্রোহের ফল ক্ষমতাসীনদের জন্য মোটেও শুভ হবে না।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

অনেক প্রতীক্ষার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন শেষ হয়েছে বড় ধরনের সহিংসতা ছাড়াই। আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এবারের নির্বাচনকে যথেষ্ট ভালো বলতে হবে। মোটাদাগে নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হয়েছে। এবার প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনার একটা গ্রহণযোগ্য ভালো নির্বাচনই উপহার দিয়েছে।
০৯ জানুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

অনেক প্রতীক্ষার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন শেষ হয়েছে বড় ধরনের সহিংসতা ছাড়াই। আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এবারের নির্বাচনকে যথেষ্ট ভালো বলতে হবে। মোটাদাগে নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হয়েছে। এবার প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনার একটা গ্রহণযোগ্য ভালো নির্বাচনই উপহার দিয়েছে।
০৯ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

অনেক প্রতীক্ষার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন শেষ হয়েছে বড় ধরনের সহিংসতা ছাড়াই। আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এবারের নির্বাচনকে যথেষ্ট ভালো বলতে হবে। মোটাদাগে নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হয়েছে। এবার প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনার একটা গ্রহণযোগ্য ভালো নির্বাচনই উপহার দিয়েছে।
০৯ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

অনেক প্রতীক্ষার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন শেষ হয়েছে বড় ধরনের সহিংসতা ছাড়াই। আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এবারের নির্বাচনকে যথেষ্ট ভালো বলতে হবে। মোটাদাগে নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হয়েছে। এবার প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনার একটা গ্রহণযোগ্য ভালো নির্বাচনই উপহার দিয়েছে।
০৯ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫