
গোলাম রহমান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি। পেশাদার কর্মজীবনে ছিলেন বাণিজ্যসচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব। তিনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এবং পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ছিলেন। সম্প্রতি ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ ও চিনির দাম বৃদ্ধির কারণ ও প্রতিকার এবং ভোক্তা অধিকার আইন নিয়ে তিনি আজকের পত্রিকার মাসুদ রানার সঙ্গে কথা বলেছেন।
আজকের পত্রিকা: সরবরাহে ঘাটতি নেই, আন্তর্জাতিক বাজারেও দাম বাড়েনি। তারপরও সম্প্রতি ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ ও চিনির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ কী?
গোলাম রহমান: অর্থনীতির সূত্রমতে, সরবরাহ এবং চাহিদার ভিত্তিতে পণ্যমূল্যের দাম নির্ধারিত হয়। কোনো পণ্যের সরবরাহ কম থাকলে অথবা চাহিদা অধিক হলে দাম বাড়ে। আবার উৎপাদন ব্যয় অধিক অথবা আমদানিমূল্য বৃদ্ধি পেলে তার বিরূপ প্রভাব পণ্যমূল্যে পড়ে। তা ছাড়া কোনো পণ্যের সরবরাহ যদি এক বা হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ীর হাতে থাকে, সে ক্ষেত্রে সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে তাদের পক্ষে মূল্য বৃদ্ধি ও অতিমুনাফা অর্জন সম্ভব। অধিক হারে আমদানি শুল্ক, ভ্যাট বা অন্য কোনো করারোপের কারণেও মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। আমদানিনির্ভর পণ্যের ক্ষেত্রে টাকা-ডলারের বিনিময় হার মূল্য নির্ধারণে বিশেষ প্রভাব ফেলে।
চিনি, ভোজ্যতেলসহ বিবিধ আমদানি করা পণ্যের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। এক বছর বা তার কিছু বেশি সময়ে ডলারের মূল্য ৮৪-৮৫ থেকে ১০৫-১১০ টাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পণ্যের আমদানি মূল্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। রোজা উপলক্ষে সরকার ভোজ্যতেল ও চিনির ওপর আরোপিত কর-ভ্যাট আরোপের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিয়েছিল এবং এখন তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। করছাড় প্রত্যাহারের অজুহাতে সরবরাহকারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে চিনি ও ভোজ্যতেলের মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে। কিন্তু দেশের বাজারে তার প্রভাব দেখছি না। বছর দুই-তিন আগে সয়াবিন তেলের প্রতি টনের দাম ছিল ৮৫০ ডলার বা কাছাকাছি, এখন কমবেশি ১ হাজার ১৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ডলারের বিনিময় হার বিবেচনায় নিয়ে আগে প্রতি কেজির আমদানি মূল্য ছিল ৭০-৭৫ টাকা আর এখন ১১০-১১৫ টাকা। সে সময়ে দেশে ভোজ্যতেলের খুচরা বিক্রয়মূল্য ছিল ১১০ টাকা আর এখন ১৯৯ টাকা। আমদানি ও বিক্রয়মূল্যের পার্থক্য কেজিপ্রতি ৪০-৪৫ থেকে ৭০-৮০ টাকায় উন্নীত হয়েছে। স্পষ্টতই ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা অর্জনের প্রবণতা থেকেও মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি পেতে পারে।ব্যবসায়ীদের লোভস্ফীতি মুনাফাস্ফীতিকে উসকে দিচ্ছে।
চিনির ক্ষেত্রে আমদানি মূল্য বৃদ্ধি এবং অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা দেশের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ। কৃষকপর্যায়ে যুক্তিসংগত মূল্য নিশ্চিত করা এবং দেশে উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সরকারের ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা থেকে সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়ছে বলে অনেকেরই ধারণা।
আজকের পত্রিকা: কখনোই নির্ধারিত দামে খুচরা বাজারে পণ্য বিক্রি করা হয় না। এ রকম কেন হয়?
গোলাম রহমান: মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম বেঁধে দিয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। উৎপাদনমূল্য অথবা আমদানিমূল্য অধিক হলে এবং বাজারে চাহিদা থাকলে কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রিতে উৎসাহিত হবেন বলে মনে হয় না। এই প্রেক্ষাপটে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি এবং বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টিতে অধিক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে কৃত্রিম সরবরাহে সংকট সৃষ্টি অথবা অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা রোধকল্পে বাজারে সরকারি উদ্যোগে নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। সেই সঙ্গে বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
আজকের পত্রিকা: ভোজ্যতেল ও চিনির বাজার মিলমালিকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে বলে দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের। আপনি কী মনে করেন?
গোলাম রহমান: ভোজ্যতেল ও চিনির ব্যবসা হাতে গোনা কয়েকটি মিলার বা রিফাইনারের হাতে। বাজারে তাদের প্রভাব ও কর্তৃত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই।
আজকের পত্রিকা: দাম বাড়ানোর জন্য কাউকে অভিযুক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার কোনো ব্যবস্থা আমাদের দেশে না থাকায় বাজারে স্বেচ্ছাচারিতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। আপনি কী মনে করেন?
গোলাম রহমান: বাংলাদেশে মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা জোরেশোরে শুরু হয় বিগত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে। এর মূল কথা ব্যবসায়ীরা ‘প্রফিট মোটিভ’-এ অনুপ্রাণিত হয়ে অর্থনীতিতে মুখ্য চালকের ভূমিকা পালন করবেন। সরকার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে সহায়ক ভূমিকা পালন এবং ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোক্তাস্বার্থ রক্ষা করবে। কিন্তু প্রথম দিকে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ও ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণের তেমন কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির স্থলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসা গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তারাই এখন বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
গত এক দশক বা তার কিছু বেশি সময়ে ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু আইন প্রণয়ন এবং প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯; প্রতিযোগিতা কমিশন আইন-২০১২; নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব আইন বাস্তবায়নের জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার কথা বলা যেতে পারে। আইন বাস্তবায়নে সক্ষমতার ঘাটতির কারণে এসব আইনের সুফল এখনো তেমন দৃশ্যমান নয়। তা ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে অনেকে মনে করেন।
প্রসঙ্গক্রমে বলা প্রয়োজন যে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে কোভিড মহামারি-পরবর্তী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। বাণিজ্যনীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতায় লাগাম টানা দুরূহ। সার্বিক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং মুদ্রানীতি মুখ্য ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতির ব্যবহারে জোরালো কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়।
আজকের পত্রিকা: ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কতটা অবগত?
গোলাম রহমান: দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে সার্বিকভাবে অধিকার সচেতনতার অভাব আছে। ভোক্তা অধিকার আইন ব্যতিক্রম নয়। তবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রচার-প্রচারণা এবং অভিযোগের সংখ্যা বৃদ্ধি থেকে স্পষ্ট যে আইনটি সম্পর্কে দিন দিন মানুষের সচেতনতা বাড়ছে। আজকের পত্রিকাসহ সব গণমাধ্যম উদ্যোগী হলে সচেতনতা আরও বাড়বে এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
আজকের পত্রিকা: ভোক্তা অধিকার আইনে কোনো ত্রুটি আছে কি?
গোলাম রহমান: সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন আইনের সীমাবদ্ধতা ও ত্রুটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ভোক্তা অধিকার আইনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এরই মধ্যে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে, যা সরকারের বিচার-বিবেচনায় আছে।
আজকের পত্রিকা: আইনটি কার্যকর করতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
গোলাম রহমান: পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনটির বহুল প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে সঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার।অধিদপ্তরের জনবল অত্যন্ত সীমিত। প্রতি জেলায় মাত্র একজন কর্মকর্তা এবং একজন কর্মচারী দিয়ে এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একজন কর্মকর্তা একই সঙ্গে একাধিক জেলার দায়িত্ব পালন করছেন। এটা সন্তোষজনক ব্যবস্থা নয়। অধিদপ্তরের কার্যক্রম অবিলম্বে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারণ সুবিবেচিত হবে বলে মনে করি। ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ আইনের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে তাঁদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করা গেলে এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে ভোক্তাবান্ধব এ আইনটির সুফল সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব।

গোলাম রহমান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি। পেশাদার কর্মজীবনে ছিলেন বাণিজ্যসচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব। তিনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এবং পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ছিলেন। সম্প্রতি ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ ও চিনির দাম বৃদ্ধির কারণ ও প্রতিকার এবং ভোক্তা অধিকার আইন নিয়ে তিনি আজকের পত্রিকার মাসুদ রানার সঙ্গে কথা বলেছেন।
আজকের পত্রিকা: সরবরাহে ঘাটতি নেই, আন্তর্জাতিক বাজারেও দাম বাড়েনি। তারপরও সম্প্রতি ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ ও চিনির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ কী?
গোলাম রহমান: অর্থনীতির সূত্রমতে, সরবরাহ এবং চাহিদার ভিত্তিতে পণ্যমূল্যের দাম নির্ধারিত হয়। কোনো পণ্যের সরবরাহ কম থাকলে অথবা চাহিদা অধিক হলে দাম বাড়ে। আবার উৎপাদন ব্যয় অধিক অথবা আমদানিমূল্য বৃদ্ধি পেলে তার বিরূপ প্রভাব পণ্যমূল্যে পড়ে। তা ছাড়া কোনো পণ্যের সরবরাহ যদি এক বা হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ীর হাতে থাকে, সে ক্ষেত্রে সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে তাদের পক্ষে মূল্য বৃদ্ধি ও অতিমুনাফা অর্জন সম্ভব। অধিক হারে আমদানি শুল্ক, ভ্যাট বা অন্য কোনো করারোপের কারণেও মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। আমদানিনির্ভর পণ্যের ক্ষেত্রে টাকা-ডলারের বিনিময় হার মূল্য নির্ধারণে বিশেষ প্রভাব ফেলে।
চিনি, ভোজ্যতেলসহ বিবিধ আমদানি করা পণ্যের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। এক বছর বা তার কিছু বেশি সময়ে ডলারের মূল্য ৮৪-৮৫ থেকে ১০৫-১১০ টাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পণ্যের আমদানি মূল্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। রোজা উপলক্ষে সরকার ভোজ্যতেল ও চিনির ওপর আরোপিত কর-ভ্যাট আরোপের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিয়েছিল এবং এখন তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। করছাড় প্রত্যাহারের অজুহাতে সরবরাহকারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে চিনি ও ভোজ্যতেলের মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে। কিন্তু দেশের বাজারে তার প্রভাব দেখছি না। বছর দুই-তিন আগে সয়াবিন তেলের প্রতি টনের দাম ছিল ৮৫০ ডলার বা কাছাকাছি, এখন কমবেশি ১ হাজার ১৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ডলারের বিনিময় হার বিবেচনায় নিয়ে আগে প্রতি কেজির আমদানি মূল্য ছিল ৭০-৭৫ টাকা আর এখন ১১০-১১৫ টাকা। সে সময়ে দেশে ভোজ্যতেলের খুচরা বিক্রয়মূল্য ছিল ১১০ টাকা আর এখন ১৯৯ টাকা। আমদানি ও বিক্রয়মূল্যের পার্থক্য কেজিপ্রতি ৪০-৪৫ থেকে ৭০-৮০ টাকায় উন্নীত হয়েছে। স্পষ্টতই ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা অর্জনের প্রবণতা থেকেও মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি পেতে পারে।ব্যবসায়ীদের লোভস্ফীতি মুনাফাস্ফীতিকে উসকে দিচ্ছে।
চিনির ক্ষেত্রে আমদানি মূল্য বৃদ্ধি এবং অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা দেশের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ। কৃষকপর্যায়ে যুক্তিসংগত মূল্য নিশ্চিত করা এবং দেশে উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সরকারের ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা থেকে সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়ছে বলে অনেকেরই ধারণা।
আজকের পত্রিকা: কখনোই নির্ধারিত দামে খুচরা বাজারে পণ্য বিক্রি করা হয় না। এ রকম কেন হয়?
গোলাম রহমান: মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম বেঁধে দিয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। উৎপাদনমূল্য অথবা আমদানিমূল্য অধিক হলে এবং বাজারে চাহিদা থাকলে কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রিতে উৎসাহিত হবেন বলে মনে হয় না। এই প্রেক্ষাপটে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি এবং বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টিতে অধিক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে কৃত্রিম সরবরাহে সংকট সৃষ্টি অথবা অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা রোধকল্পে বাজারে সরকারি উদ্যোগে নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। সেই সঙ্গে বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
আজকের পত্রিকা: ভোজ্যতেল ও চিনির বাজার মিলমালিকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে বলে দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের। আপনি কী মনে করেন?
গোলাম রহমান: ভোজ্যতেল ও চিনির ব্যবসা হাতে গোনা কয়েকটি মিলার বা রিফাইনারের হাতে। বাজারে তাদের প্রভাব ও কর্তৃত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই।
আজকের পত্রিকা: দাম বাড়ানোর জন্য কাউকে অভিযুক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার কোনো ব্যবস্থা আমাদের দেশে না থাকায় বাজারে স্বেচ্ছাচারিতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। আপনি কী মনে করেন?
গোলাম রহমান: বাংলাদেশে মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা জোরেশোরে শুরু হয় বিগত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে। এর মূল কথা ব্যবসায়ীরা ‘প্রফিট মোটিভ’-এ অনুপ্রাণিত হয়ে অর্থনীতিতে মুখ্য চালকের ভূমিকা পালন করবেন। সরকার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে সহায়ক ভূমিকা পালন এবং ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোক্তাস্বার্থ রক্ষা করবে। কিন্তু প্রথম দিকে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ও ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণের তেমন কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির স্থলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসা গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তারাই এখন বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
গত এক দশক বা তার কিছু বেশি সময়ে ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু আইন প্রণয়ন এবং প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯; প্রতিযোগিতা কমিশন আইন-২০১২; নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব আইন বাস্তবায়নের জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার কথা বলা যেতে পারে। আইন বাস্তবায়নে সক্ষমতার ঘাটতির কারণে এসব আইনের সুফল এখনো তেমন দৃশ্যমান নয়। তা ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে অনেকে মনে করেন।
প্রসঙ্গক্রমে বলা প্রয়োজন যে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে কোভিড মহামারি-পরবর্তী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। বাণিজ্যনীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতায় লাগাম টানা দুরূহ। সার্বিক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং মুদ্রানীতি মুখ্য ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতির ব্যবহারে জোরালো কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়।
আজকের পত্রিকা: ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কতটা অবগত?
গোলাম রহমান: দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে সার্বিকভাবে অধিকার সচেতনতার অভাব আছে। ভোক্তা অধিকার আইন ব্যতিক্রম নয়। তবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রচার-প্রচারণা এবং অভিযোগের সংখ্যা বৃদ্ধি থেকে স্পষ্ট যে আইনটি সম্পর্কে দিন দিন মানুষের সচেতনতা বাড়ছে। আজকের পত্রিকাসহ সব গণমাধ্যম উদ্যোগী হলে সচেতনতা আরও বাড়বে এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
আজকের পত্রিকা: ভোক্তা অধিকার আইনে কোনো ত্রুটি আছে কি?
গোলাম রহমান: সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন আইনের সীমাবদ্ধতা ও ত্রুটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ভোক্তা অধিকার আইনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এরই মধ্যে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে, যা সরকারের বিচার-বিবেচনায় আছে।
আজকের পত্রিকা: আইনটি কার্যকর করতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
গোলাম রহমান: পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনটির বহুল প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে সঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার।অধিদপ্তরের জনবল অত্যন্ত সীমিত। প্রতি জেলায় মাত্র একজন কর্মকর্তা এবং একজন কর্মচারী দিয়ে এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একজন কর্মকর্তা একই সঙ্গে একাধিক জেলার দায়িত্ব পালন করছেন। এটা সন্তোষজনক ব্যবস্থা নয়। অধিদপ্তরের কার্যক্রম অবিলম্বে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারণ সুবিবেচিত হবে বলে মনে করি। ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ আইনের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে তাঁদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করা গেলে এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে ভোক্তাবান্ধব এ আইনটির সুফল সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব।

গোলাম রহমান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি। পেশাদার কর্মজীবনে ছিলেন বাণিজ্যসচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব। তিনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এবং পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ছিলেন। সম্প্রতি ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ ও চিনির দাম বৃদ্ধির কারণ ও প্রতিকার এবং ভোক্তা অধিকার আইন নিয়ে তিনি আজকের পত্রিকার মাসুদ রানার সঙ্গে কথা বলেছেন।
আজকের পত্রিকা: সরবরাহে ঘাটতি নেই, আন্তর্জাতিক বাজারেও দাম বাড়েনি। তারপরও সম্প্রতি ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ ও চিনির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ কী?
গোলাম রহমান: অর্থনীতির সূত্রমতে, সরবরাহ এবং চাহিদার ভিত্তিতে পণ্যমূল্যের দাম নির্ধারিত হয়। কোনো পণ্যের সরবরাহ কম থাকলে অথবা চাহিদা অধিক হলে দাম বাড়ে। আবার উৎপাদন ব্যয় অধিক অথবা আমদানিমূল্য বৃদ্ধি পেলে তার বিরূপ প্রভাব পণ্যমূল্যে পড়ে। তা ছাড়া কোনো পণ্যের সরবরাহ যদি এক বা হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ীর হাতে থাকে, সে ক্ষেত্রে সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে তাদের পক্ষে মূল্য বৃদ্ধি ও অতিমুনাফা অর্জন সম্ভব। অধিক হারে আমদানি শুল্ক, ভ্যাট বা অন্য কোনো করারোপের কারণেও মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। আমদানিনির্ভর পণ্যের ক্ষেত্রে টাকা-ডলারের বিনিময় হার মূল্য নির্ধারণে বিশেষ প্রভাব ফেলে।
চিনি, ভোজ্যতেলসহ বিবিধ আমদানি করা পণ্যের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। এক বছর বা তার কিছু বেশি সময়ে ডলারের মূল্য ৮৪-৮৫ থেকে ১০৫-১১০ টাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পণ্যের আমদানি মূল্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। রোজা উপলক্ষে সরকার ভোজ্যতেল ও চিনির ওপর আরোপিত কর-ভ্যাট আরোপের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিয়েছিল এবং এখন তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। করছাড় প্রত্যাহারের অজুহাতে সরবরাহকারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে চিনি ও ভোজ্যতেলের মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে। কিন্তু দেশের বাজারে তার প্রভাব দেখছি না। বছর দুই-তিন আগে সয়াবিন তেলের প্রতি টনের দাম ছিল ৮৫০ ডলার বা কাছাকাছি, এখন কমবেশি ১ হাজার ১৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ডলারের বিনিময় হার বিবেচনায় নিয়ে আগে প্রতি কেজির আমদানি মূল্য ছিল ৭০-৭৫ টাকা আর এখন ১১০-১১৫ টাকা। সে সময়ে দেশে ভোজ্যতেলের খুচরা বিক্রয়মূল্য ছিল ১১০ টাকা আর এখন ১৯৯ টাকা। আমদানি ও বিক্রয়মূল্যের পার্থক্য কেজিপ্রতি ৪০-৪৫ থেকে ৭০-৮০ টাকায় উন্নীত হয়েছে। স্পষ্টতই ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা অর্জনের প্রবণতা থেকেও মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি পেতে পারে।ব্যবসায়ীদের লোভস্ফীতি মুনাফাস্ফীতিকে উসকে দিচ্ছে।
চিনির ক্ষেত্রে আমদানি মূল্য বৃদ্ধি এবং অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা দেশের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ। কৃষকপর্যায়ে যুক্তিসংগত মূল্য নিশ্চিত করা এবং দেশে উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সরকারের ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা থেকে সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়ছে বলে অনেকেরই ধারণা।
আজকের পত্রিকা: কখনোই নির্ধারিত দামে খুচরা বাজারে পণ্য বিক্রি করা হয় না। এ রকম কেন হয়?
গোলাম রহমান: মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম বেঁধে দিয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। উৎপাদনমূল্য অথবা আমদানিমূল্য অধিক হলে এবং বাজারে চাহিদা থাকলে কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রিতে উৎসাহিত হবেন বলে মনে হয় না। এই প্রেক্ষাপটে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি এবং বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টিতে অধিক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে কৃত্রিম সরবরাহে সংকট সৃষ্টি অথবা অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা রোধকল্পে বাজারে সরকারি উদ্যোগে নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। সেই সঙ্গে বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
আজকের পত্রিকা: ভোজ্যতেল ও চিনির বাজার মিলমালিকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে বলে দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের। আপনি কী মনে করেন?
গোলাম রহমান: ভোজ্যতেল ও চিনির ব্যবসা হাতে গোনা কয়েকটি মিলার বা রিফাইনারের হাতে। বাজারে তাদের প্রভাব ও কর্তৃত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই।
আজকের পত্রিকা: দাম বাড়ানোর জন্য কাউকে অভিযুক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার কোনো ব্যবস্থা আমাদের দেশে না থাকায় বাজারে স্বেচ্ছাচারিতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। আপনি কী মনে করেন?
গোলাম রহমান: বাংলাদেশে মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা জোরেশোরে শুরু হয় বিগত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে। এর মূল কথা ব্যবসায়ীরা ‘প্রফিট মোটিভ’-এ অনুপ্রাণিত হয়ে অর্থনীতিতে মুখ্য চালকের ভূমিকা পালন করবেন। সরকার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে সহায়ক ভূমিকা পালন এবং ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোক্তাস্বার্থ রক্ষা করবে। কিন্তু প্রথম দিকে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ও ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণের তেমন কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির স্থলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসা গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তারাই এখন বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
গত এক দশক বা তার কিছু বেশি সময়ে ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু আইন প্রণয়ন এবং প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯; প্রতিযোগিতা কমিশন আইন-২০১২; নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব আইন বাস্তবায়নের জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার কথা বলা যেতে পারে। আইন বাস্তবায়নে সক্ষমতার ঘাটতির কারণে এসব আইনের সুফল এখনো তেমন দৃশ্যমান নয়। তা ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে অনেকে মনে করেন।
প্রসঙ্গক্রমে বলা প্রয়োজন যে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে কোভিড মহামারি-পরবর্তী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। বাণিজ্যনীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতায় লাগাম টানা দুরূহ। সার্বিক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং মুদ্রানীতি মুখ্য ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতির ব্যবহারে জোরালো কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়।
আজকের পত্রিকা: ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কতটা অবগত?
গোলাম রহমান: দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে সার্বিকভাবে অধিকার সচেতনতার অভাব আছে। ভোক্তা অধিকার আইন ব্যতিক্রম নয়। তবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রচার-প্রচারণা এবং অভিযোগের সংখ্যা বৃদ্ধি থেকে স্পষ্ট যে আইনটি সম্পর্কে দিন দিন মানুষের সচেতনতা বাড়ছে। আজকের পত্রিকাসহ সব গণমাধ্যম উদ্যোগী হলে সচেতনতা আরও বাড়বে এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
আজকের পত্রিকা: ভোক্তা অধিকার আইনে কোনো ত্রুটি আছে কি?
গোলাম রহমান: সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন আইনের সীমাবদ্ধতা ও ত্রুটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ভোক্তা অধিকার আইনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এরই মধ্যে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে, যা সরকারের বিচার-বিবেচনায় আছে।
আজকের পত্রিকা: আইনটি কার্যকর করতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
গোলাম রহমান: পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনটির বহুল প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে সঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার।অধিদপ্তরের জনবল অত্যন্ত সীমিত। প্রতি জেলায় মাত্র একজন কর্মকর্তা এবং একজন কর্মচারী দিয়ে এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একজন কর্মকর্তা একই সঙ্গে একাধিক জেলার দায়িত্ব পালন করছেন। এটা সন্তোষজনক ব্যবস্থা নয়। অধিদপ্তরের কার্যক্রম অবিলম্বে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারণ সুবিবেচিত হবে বলে মনে করি। ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ আইনের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে তাঁদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করা গেলে এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে ভোক্তাবান্ধব এ আইনটির সুফল সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব।

গোলাম রহমান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি। পেশাদার কর্মজীবনে ছিলেন বাণিজ্যসচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব। তিনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এবং পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ছিলেন। সম্প্রতি ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ ও চিনির দাম বৃদ্ধির কারণ ও প্রতিকার এবং ভোক্তা অধিকার আইন নিয়ে তিনি আজকের পত্রিকার মাসুদ রানার সঙ্গে কথা বলেছেন।
আজকের পত্রিকা: সরবরাহে ঘাটতি নেই, আন্তর্জাতিক বাজারেও দাম বাড়েনি। তারপরও সম্প্রতি ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ ও চিনির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ কী?
গোলাম রহমান: অর্থনীতির সূত্রমতে, সরবরাহ এবং চাহিদার ভিত্তিতে পণ্যমূল্যের দাম নির্ধারিত হয়। কোনো পণ্যের সরবরাহ কম থাকলে অথবা চাহিদা অধিক হলে দাম বাড়ে। আবার উৎপাদন ব্যয় অধিক অথবা আমদানিমূল্য বৃদ্ধি পেলে তার বিরূপ প্রভাব পণ্যমূল্যে পড়ে। তা ছাড়া কোনো পণ্যের সরবরাহ যদি এক বা হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ীর হাতে থাকে, সে ক্ষেত্রে সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে তাদের পক্ষে মূল্য বৃদ্ধি ও অতিমুনাফা অর্জন সম্ভব। অধিক হারে আমদানি শুল্ক, ভ্যাট বা অন্য কোনো করারোপের কারণেও মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। আমদানিনির্ভর পণ্যের ক্ষেত্রে টাকা-ডলারের বিনিময় হার মূল্য নির্ধারণে বিশেষ প্রভাব ফেলে।
চিনি, ভোজ্যতেলসহ বিবিধ আমদানি করা পণ্যের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। এক বছর বা তার কিছু বেশি সময়ে ডলারের মূল্য ৮৪-৮৫ থেকে ১০৫-১১০ টাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পণ্যের আমদানি মূল্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। রোজা উপলক্ষে সরকার ভোজ্যতেল ও চিনির ওপর আরোপিত কর-ভ্যাট আরোপের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিয়েছিল এবং এখন তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। করছাড় প্রত্যাহারের অজুহাতে সরবরাহকারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে চিনি ও ভোজ্যতেলের মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে। কিন্তু দেশের বাজারে তার প্রভাব দেখছি না। বছর দুই-তিন আগে সয়াবিন তেলের প্রতি টনের দাম ছিল ৮৫০ ডলার বা কাছাকাছি, এখন কমবেশি ১ হাজার ১৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ডলারের বিনিময় হার বিবেচনায় নিয়ে আগে প্রতি কেজির আমদানি মূল্য ছিল ৭০-৭৫ টাকা আর এখন ১১০-১১৫ টাকা। সে সময়ে দেশে ভোজ্যতেলের খুচরা বিক্রয়মূল্য ছিল ১১০ টাকা আর এখন ১৯৯ টাকা। আমদানি ও বিক্রয়মূল্যের পার্থক্য কেজিপ্রতি ৪০-৪৫ থেকে ৭০-৮০ টাকায় উন্নীত হয়েছে। স্পষ্টতই ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা অর্জনের প্রবণতা থেকেও মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি পেতে পারে।ব্যবসায়ীদের লোভস্ফীতি মুনাফাস্ফীতিকে উসকে দিচ্ছে।
চিনির ক্ষেত্রে আমদানি মূল্য বৃদ্ধি এবং অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা দেশের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ। কৃষকপর্যায়ে যুক্তিসংগত মূল্য নিশ্চিত করা এবং দেশে উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সরকারের ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা থেকে সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়ছে বলে অনেকেরই ধারণা।
আজকের পত্রিকা: কখনোই নির্ধারিত দামে খুচরা বাজারে পণ্য বিক্রি করা হয় না। এ রকম কেন হয়?
গোলাম রহমান: মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম বেঁধে দিয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। উৎপাদনমূল্য অথবা আমদানিমূল্য অধিক হলে এবং বাজারে চাহিদা থাকলে কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রিতে উৎসাহিত হবেন বলে মনে হয় না। এই প্রেক্ষাপটে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি এবং বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টিতে অধিক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে কৃত্রিম সরবরাহে সংকট সৃষ্টি অথবা অতিমুনাফা অর্জনের প্রবণতা রোধকল্পে বাজারে সরকারি উদ্যোগে নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। সেই সঙ্গে বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
আজকের পত্রিকা: ভোজ্যতেল ও চিনির বাজার মিলমালিকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে বলে দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের। আপনি কী মনে করেন?
গোলাম রহমান: ভোজ্যতেল ও চিনির ব্যবসা হাতে গোনা কয়েকটি মিলার বা রিফাইনারের হাতে। বাজারে তাদের প্রভাব ও কর্তৃত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই।
আজকের পত্রিকা: দাম বাড়ানোর জন্য কাউকে অভিযুক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার কোনো ব্যবস্থা আমাদের দেশে না থাকায় বাজারে স্বেচ্ছাচারিতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। আপনি কী মনে করেন?
গোলাম রহমান: বাংলাদেশে মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা জোরেশোরে শুরু হয় বিগত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে। এর মূল কথা ব্যবসায়ীরা ‘প্রফিট মোটিভ’-এ অনুপ্রাণিত হয়ে অর্থনীতিতে মুখ্য চালকের ভূমিকা পালন করবেন। সরকার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে সহায়ক ভূমিকা পালন এবং ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোক্তাস্বার্থ রক্ষা করবে। কিন্তু প্রথম দিকে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ও ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণের তেমন কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির স্থলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসা গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তারাই এখন বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
গত এক দশক বা তার কিছু বেশি সময়ে ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু আইন প্রণয়ন এবং প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯; প্রতিযোগিতা কমিশন আইন-২০১২; নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব আইন বাস্তবায়নের জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার কথা বলা যেতে পারে। আইন বাস্তবায়নে সক্ষমতার ঘাটতির কারণে এসব আইনের সুফল এখনো তেমন দৃশ্যমান নয়। তা ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে অনেকে মনে করেন।
প্রসঙ্গক্রমে বলা প্রয়োজন যে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে কোভিড মহামারি-পরবর্তী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। বাণিজ্যনীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতায় লাগাম টানা দুরূহ। সার্বিক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং মুদ্রানীতি মুখ্য ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতির ব্যবহারে জোরালো কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়।
আজকের পত্রিকা: ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কতটা অবগত?
গোলাম রহমান: দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে সার্বিকভাবে অধিকার সচেতনতার অভাব আছে। ভোক্তা অধিকার আইন ব্যতিক্রম নয়। তবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রচার-প্রচারণা এবং অভিযোগের সংখ্যা বৃদ্ধি থেকে স্পষ্ট যে আইনটি সম্পর্কে দিন দিন মানুষের সচেতনতা বাড়ছে। আজকের পত্রিকাসহ সব গণমাধ্যম উদ্যোগী হলে সচেতনতা আরও বাড়বে এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
আজকের পত্রিকা: ভোক্তা অধিকার আইনে কোনো ত্রুটি আছে কি?
গোলাম রহমান: সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন আইনের সীমাবদ্ধতা ও ত্রুটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ভোক্তা অধিকার আইনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এরই মধ্যে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে, যা সরকারের বিচার-বিবেচনায় আছে।
আজকের পত্রিকা: আইনটি কার্যকর করতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
গোলাম রহমান: পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনটির বহুল প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে সঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার।অধিদপ্তরের জনবল অত্যন্ত সীমিত। প্রতি জেলায় মাত্র একজন কর্মকর্তা এবং একজন কর্মচারী দিয়ে এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একজন কর্মকর্তা একই সঙ্গে একাধিক জেলার দায়িত্ব পালন করছেন। এটা সন্তোষজনক ব্যবস্থা নয়। অধিদপ্তরের কার্যক্রম অবিলম্বে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারণ সুবিবেচিত হবে বলে মনে করি। ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ আইনের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে তাঁদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করা গেলে এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে ভোক্তাবান্ধব এ আইনটির সুফল সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গোলাম রহমান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি। পেশাদার কর্মজীবনে ছিলেন বাণিজ্যসচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব। তিনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এবং পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ছিলেন।
১৪ মে ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গোলাম রহমান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি। পেশাদার কর্মজীবনে ছিলেন বাণিজ্যসচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব। তিনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এবং পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ছিলেন।
১৪ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গোলাম রহমান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি। পেশাদার কর্মজীবনে ছিলেন বাণিজ্যসচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব। তিনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এবং পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ছিলেন।
১৪ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গোলাম রহমান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি। পেশাদার কর্মজীবনে ছিলেন বাণিজ্যসচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব। তিনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এবং পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ছিলেন।
১৪ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫