Ajker Patrika

বাবার লাশ ফেলে রেখে জমি নিয়ে মারামারি

দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ৩১
বাবার লাশ ফেলে রেখে   জমি নিয়ে মারামারি

আবু আহমেদ ছিলেন শিক্ষক। ৯০ বছর বয়সে গত মঙ্গলবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু লাশ দ্রুত দাফনের পরিবর্তে তাঁর সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারিতে লিপ্ত হন সন্তানেরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে মৃত্যুর ১৪ ঘণ্টা পর দাফন করা হয় তাঁর লাশ। ফেনীর দাগনভূঞা পৌর এলাকায় ঘটেছে এ ঘটনা।

আবু আহমেদ ছিলেন ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি বসবাস করতেন দাগনভূঞা পৌর শহরের আমান উল্যাহপুর গ্রামের হাসপাতাল সড়কের জননী ম্যানশনে। গ্রামের বাড়ি উপজেলার উদরাজপুর গ্রামে। মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে তিনি মারা যান।

পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবু আহমেদের প্রথম স্ত্রী আরাফাতের নেছা মারা যান ১৯৮৪ সালে। এরপর তিনি বিয়ে করেন ফিরোজা বেগমকে। প্রথম স্ত্রীর গর্ভে চার ছেলে ও দুই মেয়ে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে তিন ছেলের জন্ম হয়। আবু আহমদের ১৫০ শতক জায়গা রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ৩০ কোটি টাকা। তাঁর মৃত্যুর পর লাশ দাফনে বাধা দেন প্রথম স্ত্রীর সন্তানেরা। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা দীর্ঘদিন বিদেশে থাকায় সৎমা ও তাঁর সন্তানেরা বাবার সম্পত্তি লিখে নিয়েছেন। সম্পত্তির ভাগ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা বাবার লাশ দাফন করতে দেবেন না। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে দুই স্ত্রীর সন্তানদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তখন ঘটনাস্থল থেকে একজন জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেন। খবর পেয়ে দাগনভূঞা থানার ওসি মো. হাসান ইমাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তি ও নিহত আবু আহমেদের সন্তানদের নিয়ে বৈঠকে বসে সম্পত্তির বিষয়টি পরবর্তী সময়ে সমাধানের আশ্বাস দেন ওসি। এরপর মৃত্যুর ১৪ ঘণ্টা পরে পারিবারিক কবরস্থানে আবু আহমেদের দাফন হয়।

আবু আহমদের প্রথম স্ত্রীর ছেলে নেছার আহমদের অভিযোগ, ‘বাবার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে আমার সৎমা ও সৎভাইয়েরা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বাবার মূল্যবান জায়গাগুলো রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। আমরা চাই, বাবার সব সম্পত্তি সমানভাবে ভাগ হোক।’

তবে দ্বিতীয় স্ত্রী নেয়ামত উল্লাহ বলেন, ‘আমার বাবা জীবিত থাকাকালীন অসুস্থ ছিলেন। আমরা তাঁর সেবাযত্ন ও চিকিৎসা চালিয়েছি। সেই অনুপাতে আমার বাবা আমাদের কিছু সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দেন। তা ছাড়া বাকি সম্পত্তি আমারা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেব।’

ওসি হাসান ইমাম জানান, লাশ দাফন হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সবাইকে নিয়ে বৈঠকের মাধ্যমে সম্পত্তির বিষয়টি সামাধান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত