Ajker Patrika

নীরবে চমকে দিচ্ছে উগান্ডার ক্রিকেট

বোরহান জাবেদ, ঢাকা
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৪৯
নীরবে চমকে দিচ্ছে উগান্ডার ক্রিকেট

বিশ্বজুড়ে যেন টি-টোয়েন্টির মেলা চলছে! সদ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হতে না-হতে আরও দুটি সিরিজ হয়ে গেল। অবশ্য এই সংস্করণ দিয়েই ক্রিকেটকে বিশ্বায়নের লক্ষ্য আইসিসির। না হলে কি আর ২০১৮ সালের এপ্রিলে সহযোগী সদস্য হওয়া সব দেশকে টি-টোয়েন্টি মর্যাদা দেয় আইসিসি? একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে। ওয়ানডে আর টেস্ট খেলার সুযোগ না পাওয়া দেশগুলো অন্তত নিয়মিত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাচ্ছে।

আর এই সুযোগেই দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে উগান্ডা একটি রেকর্ডে ক্রিকেটের বেশির ভাগ পরাশক্তিকে পেছনে ফেলেছে! বাংলাদেশে ‘উগান্ডা’ নামটা একটু অন্যভাবে ব্যবহার হলেও টি-টোয়েন্টিতে তাদের সাফল্য নিয়ে হাসি-রসিকতার সুযোগ নেই! ২০১৯ সালে বতসোয়ানার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পা রাখে উগান্ডা। ভোরের সূর্য অনেক সময় যেমন দিনের সঠিক পূর্বাভাস দেয় না, উগান্ডারও তেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে তো বটেই, পরের চার ম্যাচেও জয় ‘সূর্যে’র দেখা না পাওয়া দলটি এখন এক পঞ্জিকাবর্ষে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি জয়ের তালিকায় আছে তিনে। যদি শুধু দল হিসেবে বলা হয়, তাদের ওপরে শুধুই পাকিস্তান। ২০১৮ সালে ১৯ ম্যাচে ১৭ জয় নিয়ে তালিকার শীর্ষে পাকিস্তান। দ্বিতীয় নামটাও তারাই, এ বছর ২৬ ম্যাচে তাদের জয় ১৭টি। ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ থাকায় পরিসংখ্যানটা আরও সমৃদ্ধ করে এ বছরকে শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকছে পাকিস্তানের সামনে। একটি জয় কম নিয়ে ২২ ম্যাচে ১৬ জয়ে উগান্ডা আছে তিনে। আর এই বছরে সর্বোচ্চ জয়ের তালিকায় তারা আছে দুইয়ে।

শুনলে অবাক হতে পারেন, উগান্ডা ক্রিকেটের যাত্রা শুরু ১৯১৪ সালে! দেশটির ক্রিকেট ইতিহাস ১০৭ বছরের হলেও কখনোই তারা পাদপ্রদীপের আলোয় আসতে পারেনি। আসবে কী করে? দীর্ঘ সময় আফ্রিকার বিভিন্ন দলের সঙ্গে জোড়াতালি দিয়ে খেলতে হয়েছে তাদের। ১৯৯৮ সালে প্রথমবার আইসিসির সহযোগী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে উগান্ডার। আত্মপ্রকাশ পর্যন্তই! সে অর্থে ক্রিকেটের অগ্রযাত্রায় শামিল হতে পারেনি দলটি। তাদের কাছে তাই উল্লিখিত রেকর্ডে আইসিসির পূর্ণ সদস্যদের পেছনে ফেলে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ জয়ের তালিকায় সেরা তিনে নিজেদের নাম তোলাটা গায়ে চিমটি কেটে স্বপ্ন কি না ভাবার মতো! ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোও যে সেরা দশে নেই! একটু অবাক না হয়ে কি উপায় আছে? অবশ্য নেভিল কার্ডাস বহু বছর আগে বলে গিয়েছিলেন, ‘পরিসংখ্যান একটা আস্ত গাধা।’

গত শনিবার আফ্রিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচে ২০০৩ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্ট কেনিয়াকে হারিয়েছে উগান্ডা। বাছাইপর্বে এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচের ৭টিতে জয়। টি-টোয়েন্টি মর্যাদা পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত ২৯ ম্যাচে ১৯টিতেই জিতেছে উগান্ডা। জাতীয় দলের মতো উন্নতির ধারায় আছে উগান্ডা অনূর্ধ্ব-১৯ দলও। ২০০৬ সালের পর প্রথমবার যুব বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নিয়েছে তারা। কার্ডাসের ‘পরিসংখ্যান একটা আস্ত গাধা’ কথাটা গায়ে নিতে বয়েই গেছে উগান্ডার!

সাবেক প্রোটিয়া অলরাউন্ডার আলবি মরকেল তো আর এমনিই বলেননি, ‘ভবিষ্যৎ নয়, উগান্ডা আফ্রিকার ক্রিকেটের বর্তমান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত