সম্পাদকীয়
যাঁরা গভীর রাতের মধ্য দিয়ে ছুটে যাওয়া ট্রেনের সওয়ারি হয়েছেন, তাঁরাই জানেন, সেই যাত্রার মধ্যে কখনো কখনো এমন দীর্ঘ মুহূর্ত আসে, যখন ভীষণ মসৃণভাবে কামরাগুলো একে অন্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে থাকে, কোনো ঝাঁকুনিই আর লাগে না। ট্রেনের চলনটাই যেন হঠাৎ খুব স্নিগ্ধ, শান্ত হয়ে ওঠে, যেন সবটাই একটা গানের তালে চলছে। মনে হয় যেন কামরাগুলো আর রেললাইনের ওপর দিয়ে দৌড়াচ্ছে না, বরং ভেসে যাচ্ছে মহাকাশে। অন্তত আমি যখন বসেছিলাম, এ রকমই লাগছিল। বুড়ো বাবাকে দেখতে কী যে ইচ্ছে করছিল! ট্রেনের সেই গতি এতই পলকা এবং প্রায় শব্দহীন, মনেই হচ্ছিল না আমি এই গ্রহে রয়েছি। আর তাই বোধ হয় দিবাস্বপ্ন দেখা শুরু হলো আমার। বাবার সঙ্গে স্বর্গে পৌঁছে দেখা হলে কেমন হতো! আমি শুনেছি অনেকের সঙ্গেই এমন হয়ে থাকে। তাহলে আমার সঙ্গে কেন হবে না? ট্রেন এগিয়ে চলে, অনেক দূরের যাত্রা, কিন্তু আমার চিন্তার দৌড় আরও অনেক দূরে পৌঁছে যায়। বারান্দার রকিং চেয়ারটাতে নির্ঘাত বসে রয়েছেন বাবা। বাগান ভেসে যাচ্ছে রোদ্দুরে। তাঁর সামনে ফুল আর পাখিরা খেলা করছে। ‘ফরসাইট সাগা’ পড়ছেন মন দিয়ে, কিন্তু আমাকে দেখতে পেয়ে উঠে এগিয়ে এলেন। বললেন, ‘শুভদিন খুকি, তোমায় দেখে এত ভালো লাগছে!’ অথবা হয়তো বললেন, ‘এখানে কেন এসেছ, কেমন আছো আমার বাচ্চা মেয়ে?’ যেমনটা নাকি তিনি প্রায়ই বলতেন।
তারপর আবার নিজের রকিং চেয়ারে বসে ফের ভাবতে বসতেন, কেন আমি হাজির হলাম। ‘তুমি ঠিক বলছ, কোনো বিপদ-আপদ হয়নি?’ বলতাম, ‘না বাবা, সব ঠিক আছে।’ আসল খবরটা তাঁর সামনে ভাঙার আগে আরও এদিক-ওদিক কথা চালিয়ে সময় নিতাম! একটু ঘুরিয়ে বলতাম, ‘বাবা, তোমার কাছে একটা পরামর্শ নিতে এসেছি। এমন একটা ব্যাপার ঘটেছে, যার জন্য আমি খুবই ঋণগ্রস্ত হয়ে গিয়েছি।’ বাবা বলতেন, ‘এ ব্যাপারে তো আর কিছু সাহায্য করতে পারব না তোমায়। এখানে সবই রয়েছে কেবল টাকা ছাড়া।’
‘ওহ্ বাবা, টাকার ঋণ নয়!’
‘কিন্তু তাহলে তো আরও খারাপ’, বাবা বলতেন, ‘তোমার গোড়া থেকেই সঠিক পথে থাকা উচিত ছিল খুকি।’
‘এ ব্যাপারে তোমার সাহায্য তো আমাকে চাইতেই হবে বাবা। কারণ, এটা তোমারই দোষ একদম গোড়া থেকে! তোমার মনে আছে, আমরা যখন নেহাতই বাচ্চা, তুমি পিয়ানো বাজিয়ে গান গাইতে। প্রতি শীতে অন্তত দুবার আমাদের পড়তে দিতে অ্যান্ডারসন, টেগনার অ্যান্ড রুনেবার্গ। সেই তখনই ঋণের শুরু হয় আমার। বাবা, কী করে আমি আজ ফেরত দেব সেই ঋণ, যা রূপকথা আর নায়কদের বীরগাথা পড়াতে শেখানোর বিনিময়ে তৈরি হয়েছে? যে মাটিতে আমাদের বসবাস, তার গৌরব আর ভয়াবহতা তুমি শিখিয়েছ। তার জন্য আমি ঋণী।’
সেলমা ল্যাগারলফ ১৯০৯ সালে নোবেল পুরস্কার পান।
যাঁরা গভীর রাতের মধ্য দিয়ে ছুটে যাওয়া ট্রেনের সওয়ারি হয়েছেন, তাঁরাই জানেন, সেই যাত্রার মধ্যে কখনো কখনো এমন দীর্ঘ মুহূর্ত আসে, যখন ভীষণ মসৃণভাবে কামরাগুলো একে অন্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে থাকে, কোনো ঝাঁকুনিই আর লাগে না। ট্রেনের চলনটাই যেন হঠাৎ খুব স্নিগ্ধ, শান্ত হয়ে ওঠে, যেন সবটাই একটা গানের তালে চলছে। মনে হয় যেন কামরাগুলো আর রেললাইনের ওপর দিয়ে দৌড়াচ্ছে না, বরং ভেসে যাচ্ছে মহাকাশে। অন্তত আমি যখন বসেছিলাম, এ রকমই লাগছিল। বুড়ো বাবাকে দেখতে কী যে ইচ্ছে করছিল! ট্রেনের সেই গতি এতই পলকা এবং প্রায় শব্দহীন, মনেই হচ্ছিল না আমি এই গ্রহে রয়েছি। আর তাই বোধ হয় দিবাস্বপ্ন দেখা শুরু হলো আমার। বাবার সঙ্গে স্বর্গে পৌঁছে দেখা হলে কেমন হতো! আমি শুনেছি অনেকের সঙ্গেই এমন হয়ে থাকে। তাহলে আমার সঙ্গে কেন হবে না? ট্রেন এগিয়ে চলে, অনেক দূরের যাত্রা, কিন্তু আমার চিন্তার দৌড় আরও অনেক দূরে পৌঁছে যায়। বারান্দার রকিং চেয়ারটাতে নির্ঘাত বসে রয়েছেন বাবা। বাগান ভেসে যাচ্ছে রোদ্দুরে। তাঁর সামনে ফুল আর পাখিরা খেলা করছে। ‘ফরসাইট সাগা’ পড়ছেন মন দিয়ে, কিন্তু আমাকে দেখতে পেয়ে উঠে এগিয়ে এলেন। বললেন, ‘শুভদিন খুকি, তোমায় দেখে এত ভালো লাগছে!’ অথবা হয়তো বললেন, ‘এখানে কেন এসেছ, কেমন আছো আমার বাচ্চা মেয়ে?’ যেমনটা নাকি তিনি প্রায়ই বলতেন।
তারপর আবার নিজের রকিং চেয়ারে বসে ফের ভাবতে বসতেন, কেন আমি হাজির হলাম। ‘তুমি ঠিক বলছ, কোনো বিপদ-আপদ হয়নি?’ বলতাম, ‘না বাবা, সব ঠিক আছে।’ আসল খবরটা তাঁর সামনে ভাঙার আগে আরও এদিক-ওদিক কথা চালিয়ে সময় নিতাম! একটু ঘুরিয়ে বলতাম, ‘বাবা, তোমার কাছে একটা পরামর্শ নিতে এসেছি। এমন একটা ব্যাপার ঘটেছে, যার জন্য আমি খুবই ঋণগ্রস্ত হয়ে গিয়েছি।’ বাবা বলতেন, ‘এ ব্যাপারে তো আর কিছু সাহায্য করতে পারব না তোমায়। এখানে সবই রয়েছে কেবল টাকা ছাড়া।’
‘ওহ্ বাবা, টাকার ঋণ নয়!’
‘কিন্তু তাহলে তো আরও খারাপ’, বাবা বলতেন, ‘তোমার গোড়া থেকেই সঠিক পথে থাকা উচিত ছিল খুকি।’
‘এ ব্যাপারে তোমার সাহায্য তো আমাকে চাইতেই হবে বাবা। কারণ, এটা তোমারই দোষ একদম গোড়া থেকে! তোমার মনে আছে, আমরা যখন নেহাতই বাচ্চা, তুমি পিয়ানো বাজিয়ে গান গাইতে। প্রতি শীতে অন্তত দুবার আমাদের পড়তে দিতে অ্যান্ডারসন, টেগনার অ্যান্ড রুনেবার্গ। সেই তখনই ঋণের শুরু হয় আমার। বাবা, কী করে আমি আজ ফেরত দেব সেই ঋণ, যা রূপকথা আর নায়কদের বীরগাথা পড়াতে শেখানোর বিনিময়ে তৈরি হয়েছে? যে মাটিতে আমাদের বসবাস, তার গৌরব আর ভয়াবহতা তুমি শিখিয়েছ। তার জন্য আমি ঋণী।’
সেলমা ল্যাগারলফ ১৯০৯ সালে নোবেল পুরস্কার পান।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৮ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৮ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৮ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫