Ajker Patrika

২২ কিলোমিটার ন্যাড়া সড়ক

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৪৩
২২ কিলোমিটার ন্যাড়া সড়ক

নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত সড়কে গত চার বছর ধরে কার্পেটিং তুলে ফেলা হয়েছে। এতে সড়কজুড়ে উঁচু-নিচু ঢাল ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে ট্রাক ও মোটরসাইকেল। গত শনিবার আবাদপুকুর পল্লী বিদ্যুত অফিসের সামনে থেকে।

নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার রাস্তা গত চার বছর ধরে কার্পেটিং তুলে ফেলা হয়েছে। ফলে রাস্তায় ছোট-বড় গর্ত এবং খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় লাখো মানুষের চলাচলে ভোগান্তির কারণ হয়েছে। দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত মোট ২২ কিলোমিটার সড়কে যানবাহন চলাচলে চাপ বাড়ে। ফলে এলাকার জনমানুষের জীবন-মান উন্নয়নে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে সড়কটি এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সড়কটি রাণীনগর-আবাদপুকুর থেকে কালীগঞ্জ হয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ২৬টি কালভার্ট ও ৪টি সেতু পুনর্নির্মাণ এবং রাস্তাটি টেকসই, মজবুত, প্রশস্ত ও পাকাকরণের লক্ষ্যে ২০১৮ সালে সংশ্লিষ্ট বিভাগ দরপত্র আহ্বান করে। এরপর রাস্তার সমস্ত কার্পেটিং তুলে কোনো রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়।

গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পরে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করেন। এরপর অতিরিক্ত সময়েও কাজ শেষ করতে না পারায় চলতি বছরের গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার দেয়। এতে আগের ঠিকাদার নতুন করে দেওয়া টেন্ডারের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা দায়ের করেন। এরপর আর কাজ শুরু হয়নি।

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় রাস্তার মধ্যে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষার সময় এলে পুরো রাস্তা কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। আবার খরায় ধুলা-বালিতে অন্ধকার হয়ে যায়। রাস্তার কোথাও কোথাও উঁচু-নিচু হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত কম-বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। 
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মানিক বলেন, ভাঙা রাস্তায় চলাচলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে হচ্ছে। এ ছাড়া কাদা ও খানাখন্দের কারণে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

ওই রাস্তায় চলাচলকারী যাত্রী নজরুল ইসলাম বলেন, রাস্তার যে অবস্থা একবার চলাচল করলে শরীরে প্রচুর ব্যথা হয়। এ ছাড়া এই রাস্তায় অন্তঃসত্ত্বা নারী বা জটিল কোনো রোগী পরিবহন করা বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে। ফলে তাঁরা এসব দুর্ভোগ এড়াতে মূল রাস্তায় না গিয়ে বিকল্প পথে প্রায় সাত থেকে আট কিলোমিটার ঘুরে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

গোলাম মোস্তফা নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, সপ্তাহে চার দিন তাঁকে রাণীনগরে যেতে হয়। রাস্তার এ দুরবস্থার কারণে প্রতিনিয়তই কোনো না-কোনো সমস্যায় পড়তে হয়। যার কারণে তিনি সঠিক সময়ে পণ্য পরিবহন করতে পারেন না। এতে মালামাল পরিবহনে একদিকে যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, অন্যদিকে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। তিনি এই রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, নতুন করে টেন্ডার দেওয়ার পর আগের ঠিকাদার মামলা করেছিলেন। ফলে সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যে গত ২৯ নভেম্বর ওই মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে রাস্তার কাজ শুরু করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত