Ajker Patrika

আ.লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচারে এমপি

 নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
Thumbnail image

রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবালের পক্ষে প্রচারে আচরণবিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। আচরণবিধি ভাঙার কারণে ইতিমধ্যে সিটি মেয়র এবং দুজন সংসদ সদস্যকে (এমপি) সতর্ক করে চিঠি দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

সবশেষ গতকাল শনিবার রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন আচরণবিধি ভেঙে প্রার্থী এবং ভোটারদের সঙ্গে ভূরিভোজে অংশ নিয়েছেন। রাজশাহী নগরীর চৈতির বাগানে এই ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়। এতে এমপি আয়েনের নির্বাচনী এলাকা পবা উপজেলার ভোটারদের অংশ নিতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী এমপিরা এই নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। এরপরও চেয়ারম্যান প্রার্থী মীর ইকবালকে নিয়ে এই ভূরিভোজের আয়োজন করার কারণে গতকাল সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা চিঠি দিয়ে এমপি আয়েনকে সতর্ক করেছেন। এদিকে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর মোহনপুর উপজেলায় প্রার্থী মীর ইকবালকে নিয়ে তিনি একটি সভায় গিয়ে ভোট চেয়েছিলেন।

আয়েন ছাড়াও মীর ইকবালের পক্ষে আচরণবিধি না মেনে প্রচার চালিয়েছেন রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের এমপি মনসুর রহমান এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তাঁদেরও চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাজশাহী নগরীর কুমারপাড়ায় নগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে মেয়র লিটন নির্বাচনী সভায় অংশ নেন। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁকে সতর্ক করে মেয়রের দপ্তরে চিঠি পাঠান রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে এমপি মনসুর রহমান তাঁর নির্বাচনী এলাকা দুর্গাপুরে প্রার্থীর সঙ্গে এক নির্বাচনী সভায় অংশ নেন। এর আগে, গত শুক্রবার পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে এক নির্বাচনী সভায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এমপি মনসুর রহমান। পরে তাঁকেও চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়।

আর সেদিনই আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আখতারুজ্জামান আক্তারের প্রচারে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে এমপি মনসুরের নির্বাচনী এলাকায়। দুর্গাপুর পৌরসভার কার্যালয়ে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে বাধা দেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন।

এ বিষয়ে আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ভোটের সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করছেন এমপিরা। সম্মানিত ব্যক্তিরা যদি অসম্মানের কাজ করেন, তাহলে এর দায় তো তাঁদেরই। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট চাই।’

আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে সতর্ক করে পাঠানো চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন এমপি মনসুর রহমান। চিঠি পাওয়ার পর সশরীরে কোথাও যাচ্ছেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।

তবে এমপি আয়েন উদ্দিন মোবাইল ফোন না ধরার কারণে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী মীর ইকবাল বলেছেন, তিনি প্রচারে গেলে দলীয় প্রার্থী হিসেবে এমপিরা আসছেন। তিনি কাউকে ডাকছেন না।

অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, এমপি আয়েন উদ্দিন এবং এমপি মনসুর রহমানকে সতর্ক করে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর কেউ আচরণবিধি মানছেন না দেখলে তাঁকেও চিঠি দেওয়া হবে।

১৭ অক্টোবর রাজশাহী জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল ছাড়াও তিনজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন। এর মধ্যে আখতারুজ্জামান আক্তার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। অন্য দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ইকবাল ও আফজাল হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত