Ajker Patrika

হোটেল-মোটেল থিম পার্ক পাচ্ছে প্রণোদনা, পর্যটন খাতের বড় অংশই থাকছে বঞ্চিত

সাইফুল মাসুম, ঢাকা
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২১, ২০: ৪১
হোটেল-মোটেল থিম পার্ক পাচ্ছে প্রণোদনা, পর্যটন খাতের বড় অংশই থাকছে বঞ্চিত

করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর মধ্যে পর্যটন খাতকে অন্যতম খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আজ মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) পর্যটন খাতের হোটেল–মোটেল, থিম পার্কের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ৪ শতাংশ সুদে এক হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হোটেল মোটেল থিম পার্ক সুবিধা পেলেও, পর্যটন সেক্টরের বড়ই অংশই এই প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হবে। 

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হোটেল মোটেল পর্যটনের উপ খাতগুলোর একটি। ট্যুর অপারেটর হচ্ছে পর্যটনের ব্যবসায়ী। শুধু হোটেল মোটেল থিম পার্কে দিলে তো পর্যটনের অন্য খাতগুলোর কোন কাজে আসবে না। আমরা দাবি জানিয়েছি, পর্যটন ট্যুর অপারেটরদের সরাসরি ঋণ সুবিধা দেওয়া হোক। সাহায্য, রেশন, প্রণোদনা দিলেই ট্যুর অপারেটরা উপকৃত হবে। যে কোন দেশের পর্যটন শিল্পে প্রধান স্টেক হোল্ডার হচ্ছে ট্যুর অপারেটর। বিশেষ করে ট্যুর অপারেটরেরা যাতে সুবিধা পায় সেই বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।’ 

প্রণোদনা থেকে পর্যটনের বড় অংশ বাদ পড়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ টুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাগর বলেন, ‘এখানে মার্ক করে দিয়েছে কারা প্রণোদনা পাবে। এর বাইরে ট্যুর অপারেটর ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর গাইডসহ পর্যটনের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যারা আছে তাদের বিষয়ে কিছু বলা নেই। তারাই করোনাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বিশাল অংশকে বাদ দিয়ে পর্যটনের একটা অংশকে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের প্রস্তাব পর্যটনের সকল সেক্টরকে প্রণোদনার আওতায় আনা হোক।’ 

তবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নাম উল্লেখ না করলেও পর্যটন খাতের সব সেক্টর এই প্রণোদনার সুবিধা পাবে। আজ কেবল ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, দেখা যাক কী হয়। তবে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত সবাই যেন এই সুবিধা পায় সেটা আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবো।’ 

এদিকে সরকারের এই প্রণোদনা ঘোষণাকে স্বাগতম জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিহা)। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মহাসিন হক হিমেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছর সেবা খাতের আওতায় হোটেল মোটেল জন্যও প্রণোদনা ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যাংক থেকে হোটেল মোটেল কেউই ঋণ পায়নি। এই বছর প্রণোদনা ঘোষণা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। এখন এটার বাস্তবায়ন কীভাবে হবে জানি না। বিষয়টা আমরা আবেদন করার পর বুঝতে পারবো। এক হাজার না, পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েও লাভ নেই। যদি আমরা প্রণোদনার এক পয়সাও না পেয়ে থাকি।’ 

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) তথ্যমতে, ২০২০ সালে করোনার কারণে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের ক্ষতির পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। শুধু টোয়াব সদস্যদের ক্ষতি হয়েছে পাঁচ হাজার সাত শত কোটি টাকা। আর চলতি বছরের মার্চ থেকে সবকিছু স্থবির হওয়ায় পর্যটন খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ছে। চলমান পরিস্থিতি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকলে টোয়াব সদস্যদের ক্ষতির পরিমান প্রায় নয় হাজার কোটি টাকার বেশি হতে পারে। বাংলাদেশ টুরিজম অ্যান্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশন জানিয়েছেন, করোনায় পর্যটন খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকার অধিক ক্ষতি হয়েছে। আর এই খাতের প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক কর্মচারী কর্মহীন হয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত