Ajker Patrika

গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের ক্ষোভ

বিনোদন প্রতিবেদক
গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের ক্ষোভ

হতাশা ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করলেন নন্দিত গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের কণ্ঠে। শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। গানের রয়্যালটি ও কপিরাইট স্বত্ব নিয়ে জটিলতার শেষ কোথায় কেউ কি জানে না! এ নিয়ে প্রতিনিয়ত ক্ষোভের কথা জানাচ্ছেন বরেণ্য শিল্পী ও কলাকুশলীরা। মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান তথ্য মন্ত্রণালয় বরাবর একটি আবেদন জানান। যেখানে তিনি তুলে ধরেন বাংলাদেশ বেতারের গীতিকার রয়্যালটির অনিয়ম প্রসঙ্গে। উদাহরণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন নিজের প্রয়াত বড় ভাই আরেক নন্দিত গীতিকবি ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও তার পরিবারের করুণ পরিণতির কথা।

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান লেখেন, ‘আমার অগ্রজ, প্রয়াত কবি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বাংলাদেশ বেতারের একজন বিশিষ্ট গীতিকার ছিলেন। এখনও তাঁর রচিত অনেক গানই বেতার ও টেলিভিশন থেকে প্রচার হয়। তাঁর মৃত্যুর পর গানের রয়্যালটি স্ত্রী রাশিদা জামান প্রাপ্য হবে বলে তিনি তার রয়্যালটি ফরমেই উল্লেখ করে যান। বেতারে আমার দীর্ঘ ২৫ বছরের চাকরি জীবনে দেখে এসেছি, প্রতি তিন মাস অন্তর রয়্যালটি চেক প্রাপকের ঠিকানায় ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু এখন প্রাপককেই তাঁর প্রাপ্য রয়্যালটির জন্যে বেতারে গিয়ে ধর্ণা দিতে হয়। এটি খুবই দুঃখজনক।’

ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের স্ত্রী রাশিদা জামানের প্রসঙ্গে লেখেন, ‘তাঁর বর্তমান বয়স ৮৪ বছর। বছরের পর বছর তিনি কোনও রয়্যালটি চেক পান না। এই বয়সে, তার পক্ষে বেতার ভবনে গিয়ে ধর্ণা দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে কি তিনি তাঁর স্বামীর রচিত গানের রয়্যালটি থেকে বঞ্চিতই রয়ে যাবেন? এমন অবস্থা শুধু তাঁর নয়, অসংখ্য উত্তরাধিকারীর।’

শুধু উত্তরাধিকারদেরই এই অবস্থা, তা নয়। মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান নিজের রয়্যালটি প্রাপ্তি প্রসঙ্গেও একই হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। লেখেন, ‘একই পরিস্থিতি অনেক জীবিত গীতিকারের বেলাতেও ঘটছে। যেমন আমি। আমার বর্তমান বয়স ৭৮ বছর। ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত আমি বাংলাদেশ বেতারে চাকরিরত ছিলাম। ১৯৯৩ সালে বেতারের অনেক তোষণমূলক প্রচারণার সঙ্গে একমত হতে না পারায় চাকরি থেকে স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণে বাধ্য হই। এরপর বেতারের বিভিন্ন বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য পাণ্ডুলিপিসহ গান রচনা করে এসেছি। অন্যান্য বহু অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও পরিচালনা করে এসেছি। করোনার প্রাদুর্ভাবের পর আমার আর বেতার ভবনে যাওয়া সম্ভব হয়নি। আমার প্রচুর সংখ্যক গান বেতারে প্রচারিত হলেও একমাত্র বাণিজ্যিক কার্যক্রম ছাড়া বাংলাদেশ বেতার ঢাকার আর কোনও রয়্যালটি চেক আমি পাইনি। এমনিতেই বেতারের রয়্যালটির হার খুবই লজ্জাজনক। তার ওপরে যদি তা নিয়মিত  না পাওয়া যায়, তা হলে ক্রমান্বয়ে বেতারের জন্য উন্নত মানের গানের রচয়িতার সংকট দেখা দেবেই। বর্তমানেই অনেক তরুণ গীতিকবি, তাদের রচিত গান নিয়ে নিজস্ব অ্যালবাম তৈরি করছেন, কিন্তু বেতারের জন্যে গান রচনা করছেন না।’

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান নিজের ও তার ভাইয়ের উত্তরাধিকারের বর্তমান পরিস্থিতি উল্লেখ করে বিনীত অনুরোধ জানান তথ্যমন্ত্রী তথা সরকারের প্রতি। তাঁর আবেদন, ‘এসব বিষয়ে সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনা করে আপনি সানুগ্রহভাবে এমন আদেশ প্রদান করুন, যাতে বাংলাদেশ বেতার রয়্যালটি প্রদানের দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পন্ন করার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত