Ajker Patrika

সামিয়ার ক্যানসার জয়ের গল্প

সামিয়া আফরিন। ছবি: সংগৃহীত
সামিয়া আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

তিন বছর আগে উপস্থাপক ও অভিনেত্রী সামিয়া আফরিন জানতে পারেন, তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে ক্যানসার। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁকে জানানো হলো, ক্যানসারের চতুর্থ স্টেজে রয়েছেন তিনি। একেবারে কাছের মানুষদের ছাড়া ক্যানসারের বিষয়টি কাউকে জানাননি সামিয়া। নিতে চাননি কারও সহানুভূতি। দুই বছরের চিকিৎসা শেষে এখন তিনি সুস্থ। ২২ মার্চ ক্যানসারের রোগীদের চিকিৎসায় সহায়তার জন্য রাজধানীর বনানীতে সামিয়ার পরিচালিত উজ্জ্বলা ফাউন্ডেশন আয়োজন করে পোশাক প্রদর্শনীর। সেখানে নিজের ক্যানসার জয়ের গল্প শোনান সামিয়া।

সামিয়া বলেন, ‘২০২২ সালের এপ্রিলের দিকে আমি শারীরিকভাবে অস্বস্তি বোধ করছিলাম। তখন ঢাকার একটি হাসপাতালে পরীক্ষা করানোর পর আমাকে জানানো হলো যে শরীরে ক্যানসারের জীবাণুবাহী একটা টিউমার রয়েছে। প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিল না। এ কারণে কালক্ষেপণ না করে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে দেশের বাইরে চলে যাই। যখন ব্যাগ গোছাই, তখনো জানি না, কত দিন থাকতে হবে। কত দিনের প্রস্তুতি নিয়ে যাব। কত টাকা সঙ্গে নিয়ে যাব, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। সেখানেও যখন একই রিপোর্ট এল, জানাল যে আমি ক্যানসারের চতুর্থ স্টেজে আছি। কালক্ষেপণ না করে চিকিৎসা শুরু করলাম। যখন ওরা ট্রিটমেন্ট প্রসিডিউর জানাল, সেটি ছিল আরও ভীতিকর। কারণ, এটি খুব কষ্টকর ও ব্যয়বহুল প্রসেস।’

সামিয়ার ক্যানসারের খবরে পরিবারের সদস্যরা ভেঙে পড়েছিলেন। তবে সামিয়া ছিলেন মানসিকভাবে শক্ত। সামিয়া বলেন, ‘আমার পরিবারের সবাই খুব ভেঙে পড়েছিল। ব্যতিক্রম ছিলাম আমি। সবাইকে বুঝিয়েছি, এটা ভেঙে পড়ার মতো কিছু না। এটা একটা সমস্যা, যা আমাকে ফেস করতে হবে। আমার মানসিক শক্তি ছিল বলে হয়তো পেরেছি।’

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শুরুর সময় দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সামিয়া বলেন, ‘কেমোথেরাপি অনেক কষ্টের। যখন কেমো নেওয়া শুরু করেছিলাম, সে সময় ১০ কদম হেঁটে যেতে পারতাম না। হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতে হয়েছে। শরীর কাঁপত। প্রথম ছয় মাস এসব সহ্য করতে হয়েছে, এরপর ধীরে ধীরে ঠিক হয়। ভাগ্য ভালো, আমার কোনো অস্ত্রোপচার করতে হয়নি। যে টিউমার হয়েছিল, সেটা মেডিসিনের মাধ্যমে ডিসলভ হয়েছে। সেটা ছিল আমার জন্য মিরাকল। কোথাও কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়া ক্যানসারের টিউমার সাধারণত ডিসলভ হয় না।’

তাৎক্ষণিক চিকিৎসার সঙ্গে শরীরচর্চা, খাদ্যাভ্যাস ও ঘুমের অভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান সামিয়া। আরও জানালেন, অনেকে টাকার অভাবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা করাতে পারে না। তাই উজ্জ্বলা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এখন থেকে ক্যানসারের রোগীদের পাশে থাকতে চান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত