Ajker Patrika

এই বলিউড কুইন ভাবতেন এফবিআই তাঁকে হত্যা করতে চায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পারভীন বাবি। ছবি: সংগৃহীত
পারভীন বাবি। ছবি: সংগৃহীত

বলিউড অভিনেত্রী পারভীন বাবি সত্তরের দশক ও আশির দশকের শুরুতে ছিলেন গ্ল্যামার, প্রতিভা এবং ফ্যাশন আইকন। অমিতাভ বচ্চনসহ প্রথম সারির তারকাদের বিপরীতে তাঁর অভিনয় দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল।

কিন্তু এই ঝলমলে ক্যারিয়ারের অন্তরালে ছিল এক গভীর একাকিত্ব এবং ‘প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়া’ নামের মানসিক স্বাস্থ্য সংগ্রামের করুণ পরিণতি। মৃত্যুর এত বছর পরও তাঁর জীবন ও শেষ দিনগুলো নিয়ে আলোচনা থামেনি।

সম্প্রতি অভিনেত্রী পূজা বেদি এক ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণায় পারভীন বাবির সেই অস্থির সময়ের চিত্র তুলে ধরেছেন। পূজা বেদির বাবা কবির বেদির সঙ্গে এক সময় পারভীন বাবির গভীর সম্পর্ক ছিল। সিদ্ধার্থ কান্নানের সঙ্গে আলাপচারিতায় পূজা সেই সময়ের কথা বলেন, যখন পারভীন বাবি বিশ্বাস করতেন যে, আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

পূজা বেদি জানান, বহু বছর পর পারভীন বাবি যখন ভারতে ফিরে আসেন, তখন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের কারণে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে তিনি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। পূজা তাঁকে দেখতে তাঁর বাড়িতে গেলে যে দৃশ্য দেখেন, তা ছিল অতীতের গ্ল্যামারাস ইমেজের সম্পূর্ণ বিপরীত।

পূজা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘তিনি দরজা খুললেন, তাঁকে ভীষণ অন্যরকম দেখাচ্ছিল। ওজন অনেক বেড়ে গিয়েছিল, আর চুল ছিল এলোমেলো।’ যদিও পারভীন পূজাকে দেখে খুবই উচ্ছ্বসিত হন, জড়িয়ে ধরেন, কিন্তু কথোপকথনের মাঝে হঠাৎই তাঁর মনের ভেতরের আতঙ্ক যেন বেরিয়ে আসত।

পূজা যখন লক্ষ্য করেন যে পারভীন বাবি তাঁকে কোনো খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করছেন না, তখন এর কারণ জিজ্ঞেস করেন। পারভীন বাবি পূজাকে বলেন, ‘আমি দুঃখিত যে তোমাকে কিছু খেতে দিতে পারছি না। কারণ আমি শুধু ডিম খাই।’

কেন তিনি শুধু ডিম খাচ্ছেন—এই প্রশ্নের জবাবে পারভীন বাবি বলেন, ‘এটা এমন একটি জিনিস, যার মধ্যে তারা (সিক্রেট সার্ভিস বা এফবিআই) ভেজাল দিতে পারবে না।’ এই কথা শুনে পূজা বুঝতে পারেন, পারভীন বাবি গভীর মানসিক উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন।

পূজা বেদি আরও জানান, পারভীন বাবি এত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করতেন, বাইরের সবাই তাঁর ক্ষতি করার জন্য ওত পেতে আছে।

পূজা স্মরণ করেন, ‘তিনি আমাকে বলেছিলেন, বাজার থেকে মেকআপ কেনেন না, কারণ কেউ না কেউ তাতে ভেজাল বা বিষ মিশিয়ে দেয়। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করি, কে জানবে আপনি কখন কী কিনতে যাচ্ছেন? তিনি জবাবে বলেন, তারা সবকিছু জানে।’ এই ভয়ংকর অবিশ্বাস তাঁর জীবনকে ধীরে ধীরে একাকিত্বের দিকে ঠেলে দেয়।

জীবনের শেষ দিকে পারভীন বাবি প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছিলেন বলে জানা যায়। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। ড্যানি ডেনজংপা, কবির বেদি এবং মহেশ ভাটের মতো তারকাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। তবে কখনো বিয়ে করেননি।

গত বছর কবির বেদি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, পারভীন বাবি মানসিক চিকিৎসার ভয়েই কবির বেদির কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। কারণ তাঁর ধারণা ছিল, কবির তাঁকে চিকিৎসার জন্য চাপ দিতে পারেন।

বলিউডের এককালের এই উজ্জ্বল তারকার জীবন শেষ হয় অত্যন্ত নিঃসঙ্গতার মধ্য দিয়ে। ২০০৫ সালের ২০ জানুয়ারি মাল্টিপল অর্গান ফেইলিউরের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। জীবনের শেষ তিন দিন তিনি এতই নিঃসঙ্গ ছিলেন যে, ফ্ল্যাটের সেক্রেটারি যখন পুলিশকে জানান, তিনি তিন দিন ধরে বাজার করেননি, কোনো সংবাদপত্র নেননি, ঠিক এর দু’দিন পর, ২২ জানুয়ারি পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কোটা তুলে দিলে নারীদের খুঁজেও পাওয়া যাবে না: সামান্তা শারমিন

আন্দোলনের মধ্যেই ফের বাড়ল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা

মেট্রোরেলের সময় বাড়ল: আজ থেকে নতুন সূচি, ট্রিপ বাড়ল ৭টি

৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা প্রত্যাখ্যান, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা শিক্ষকদের

প্রশিক্ষিত রন্ধনশিল্পীরা পাবেন আন্তর্জাতিক মানের সনদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত