ড. মোর্ত্তূজা আহমেদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজ বর্তমানে এক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন। দীর্ঘ সময় ধরে এই কলেজগুলো শিক্ষা মানের উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক স্বাধীনতার দাবি করে আসছে। শিক্ষার্থীরা নানা কারণে একের পর এক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে অবকাঠামোগত সংকট, কলেজের প্রশাসনিক জটিলতা এবং শিক্ষকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সম্প্রতি এসব কলেজের সমস্যা সমাধানে কার্যকর সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী তাঁদের জন্য ‘স্বতন্ত্র পরিচয়ের’ ব্যবস্থা করবেন। যা এই কলেজগুলোর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ ২০১৭ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে এবং দীর্ঘ সময় ধরে এটি দেশের উচ্চশিক্ষাব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই সাত কলেজের বর্তমান অবস্থা বেশ জটিল এবং তারা স্বাধীনভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন ও দাবিতে আছে। বর্তমানে এসব কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদের অবকাঠামো, প্রশাসনিক কাঠামো এবং শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
সাত কলেজের অধিকাংশ ভবন অত্যন্ত পুরোনো এবং একাধিক বিভাগের জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই। শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, আধুনিক গবেষণাগার এবং অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ প্রায়ই অনুপস্থিত। ফলে, কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মান নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ করে থাকে। এই অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা তাঁদের শিক্ষা কার্যক্রমের উন্নতি এবং আধুনিকীকরণে বাধা সৃষ্টি করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ হিসেবে সাত কলেজের নিজস্ব প্রশাসনিক স্বাধীনতা নেই। কলেজগুলোর অধিকাংশ প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ভাগ হয়ে থাকে। এই দ্বৈত প্রশাসনিক কাঠামো অনেক সময় কার্যকরী হতে পারে না। কারণ, একে অপরের পরিপূরক হওয়ার পরিবর্তে প্রায়ই বিরোধপূর্ণ হয়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, কলেজগুলোর শিক্ষক নিয়োগ, নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আসে, তবে একাডেমিক সিদ্ধান্ত এবং শিক্ষার মানের দিকটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্বাধীন। ফলে, এই বিভক্ত ব্যবস্থার কারণে কলেজগুলোর স্বাধীনতা ও কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা সৃষ্টি হয়, যা তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমে স্বাচ্ছন্দ্য এবং কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।
স্বাধীনতা ও প্রশাসনিক কাঠামো না থাকার কারণে, সাত কলেজে শিক্ষার মানের মধ্যে বেশ কিছু অমীমাংসিত সমস্যা রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর পাঠ্যক্রম, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক শিক্ষা সুবিধা বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত উদ্যোগের অভাব রয়েছে। সুতরাং, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার গুণগত মান কমতে শুরু করেছে এবং তারা দেশের অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে।
এই কলেজগুলোর দীর্ঘদিনের দাবি হলো তারা তাদের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো, পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষাব্যবস্থার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায়। শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকরা মনে করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকার ফলে তাঁদের মৌলিক চাহিদাগুলো সঠিকভাবে পূর্ণ হয় না এবং তাঁরা পর্যাপ্ত সেবা ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। এসব কলেজ স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলে তাঁদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক কাঠামো উন্নত হবে, যা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মানের উন্নতি ঘটাবে। এই অবস্থায়, সাত কলেজের বর্তমান পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের জন্য সরকারের সদিচ্ছা এবং কার্যকরী পদক্ষেপের প্রয়োজন, যাতে তাঁরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করতে পারে এবং তাঁদের শিক্ষার মান এবং প্রশাসনিক কাঠামো সমৃদ্ধ করতে পারে।
শিক্ষা উপদেষ্টা সম্প্রতি এক সভায় সাত কলেজের স্বতন্ত্র পরিচয়ের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার সাত কলেজকে স্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হবে। এটি শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং কলেজগুলোর প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও কার্যকরিতা আনবে। তবে, এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে কিছু সময় এবং পর্যাপ্ত পরিকল্পনার প্রয়োজন হবে। সাত কলেজের স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া অনেক দিক থেকেই জরুরি। প্রথমত, এটি শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কলেজগুলোর নিজস্ব প্রশাসনিক স্বাধীনতা থাকলে তারা তাদের নিজস্ব নীতি এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করতে পারবে। দ্বিতীয়ত, এটি শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণে সহায়ক হবে।
তবে, এই পদক্ষেপের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা, সরকারের প্রশাসনিক জটিলতা এবং সাত কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কিছু বিষয়—যা বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তবে ফেডারেটেড বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে, যেমন ইউনিভার্সিটি অব টরোন্টো বা ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের মতো সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এই ধরনের মডেলটি কলেজগুলোর স্বাধীনতা এবং স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামো বজায় রেখে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একযোগে কার্যকরী হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সাত কলেজের মধ্যে প্রতিটি কলেজ নিজস্ব শিক্ষাক্রম, গবেষণা কার্যক্রম এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা পাবে, তবে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে থাকবে, যা তাদের সুরক্ষা এবং উন্নয়নের জন্য একটি সাধারণ কাঠামো প্রদান করবে।
যদি শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করবে। তাদের শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে। কারণ, কলেজগুলো নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী পাঠ্যক্রম এবং পাঠদান পদ্ধতি উন্নত করতে পারবে। একইভাবে, শিক্ষকদের জন্য একটি উন্নত কর্মপরিবেশ তৈরি হবে, যেখানে তাঁরা তাঁদের পেশাদারি দক্ষতা এবং গবেষণায় মনোনিবেশ করতে পারবেন। এর মাধ্যমে, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার মান আরও উন্নত হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে সাত কলেজ। তবে, এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে একটি সুদৃঢ় পরিকল্পনা এবং একযোগী প্রয়াস প্রয়োজন, যাতে এই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চলতে থাকে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজ বর্তমানে এক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন। দীর্ঘ সময় ধরে এই কলেজগুলো শিক্ষা মানের উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক স্বাধীনতার দাবি করে আসছে। শিক্ষার্থীরা নানা কারণে একের পর এক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে অবকাঠামোগত সংকট, কলেজের প্রশাসনিক জটিলতা এবং শিক্ষকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সম্প্রতি এসব কলেজের সমস্যা সমাধানে কার্যকর সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী তাঁদের জন্য ‘স্বতন্ত্র পরিচয়ের’ ব্যবস্থা করবেন। যা এই কলেজগুলোর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ ২০১৭ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে এবং দীর্ঘ সময় ধরে এটি দেশের উচ্চশিক্ষাব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই সাত কলেজের বর্তমান অবস্থা বেশ জটিল এবং তারা স্বাধীনভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন ও দাবিতে আছে। বর্তমানে এসব কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদের অবকাঠামো, প্রশাসনিক কাঠামো এবং শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
সাত কলেজের অধিকাংশ ভবন অত্যন্ত পুরোনো এবং একাধিক বিভাগের জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই। শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, আধুনিক গবেষণাগার এবং অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ প্রায়ই অনুপস্থিত। ফলে, কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মান নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ করে থাকে। এই অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা তাঁদের শিক্ষা কার্যক্রমের উন্নতি এবং আধুনিকীকরণে বাধা সৃষ্টি করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ হিসেবে সাত কলেজের নিজস্ব প্রশাসনিক স্বাধীনতা নেই। কলেজগুলোর অধিকাংশ প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ভাগ হয়ে থাকে। এই দ্বৈত প্রশাসনিক কাঠামো অনেক সময় কার্যকরী হতে পারে না। কারণ, একে অপরের পরিপূরক হওয়ার পরিবর্তে প্রায়ই বিরোধপূর্ণ হয়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, কলেজগুলোর শিক্ষক নিয়োগ, নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আসে, তবে একাডেমিক সিদ্ধান্ত এবং শিক্ষার মানের দিকটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্বাধীন। ফলে, এই বিভক্ত ব্যবস্থার কারণে কলেজগুলোর স্বাধীনতা ও কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা সৃষ্টি হয়, যা তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমে স্বাচ্ছন্দ্য এবং কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।
স্বাধীনতা ও প্রশাসনিক কাঠামো না থাকার কারণে, সাত কলেজে শিক্ষার মানের মধ্যে বেশ কিছু অমীমাংসিত সমস্যা রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর পাঠ্যক্রম, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক শিক্ষা সুবিধা বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত উদ্যোগের অভাব রয়েছে। সুতরাং, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার গুণগত মান কমতে শুরু করেছে এবং তারা দেশের অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে।
এই কলেজগুলোর দীর্ঘদিনের দাবি হলো তারা তাদের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো, পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষাব্যবস্থার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায়। শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকরা মনে করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকার ফলে তাঁদের মৌলিক চাহিদাগুলো সঠিকভাবে পূর্ণ হয় না এবং তাঁরা পর্যাপ্ত সেবা ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। এসব কলেজ স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলে তাঁদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক কাঠামো উন্নত হবে, যা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মানের উন্নতি ঘটাবে। এই অবস্থায়, সাত কলেজের বর্তমান পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের জন্য সরকারের সদিচ্ছা এবং কার্যকরী পদক্ষেপের প্রয়োজন, যাতে তাঁরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করতে পারে এবং তাঁদের শিক্ষার মান এবং প্রশাসনিক কাঠামো সমৃদ্ধ করতে পারে।
শিক্ষা উপদেষ্টা সম্প্রতি এক সভায় সাত কলেজের স্বতন্ত্র পরিচয়ের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার সাত কলেজকে স্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হবে। এটি শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং কলেজগুলোর প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও কার্যকরিতা আনবে। তবে, এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে কিছু সময় এবং পর্যাপ্ত পরিকল্পনার প্রয়োজন হবে। সাত কলেজের স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া অনেক দিক থেকেই জরুরি। প্রথমত, এটি শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কলেজগুলোর নিজস্ব প্রশাসনিক স্বাধীনতা থাকলে তারা তাদের নিজস্ব নীতি এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করতে পারবে। দ্বিতীয়ত, এটি শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণে সহায়ক হবে।
তবে, এই পদক্ষেপের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা, সরকারের প্রশাসনিক জটিলতা এবং সাত কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কিছু বিষয়—যা বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তবে ফেডারেটেড বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে, যেমন ইউনিভার্সিটি অব টরোন্টো বা ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের মতো সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এই ধরনের মডেলটি কলেজগুলোর স্বাধীনতা এবং স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামো বজায় রেখে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একযোগে কার্যকরী হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সাত কলেজের মধ্যে প্রতিটি কলেজ নিজস্ব শিক্ষাক্রম, গবেষণা কার্যক্রম এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা পাবে, তবে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে থাকবে, যা তাদের সুরক্ষা এবং উন্নয়নের জন্য একটি সাধারণ কাঠামো প্রদান করবে।
যদি শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করবে। তাদের শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে। কারণ, কলেজগুলো নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী পাঠ্যক্রম এবং পাঠদান পদ্ধতি উন্নত করতে পারবে। একইভাবে, শিক্ষকদের জন্য একটি উন্নত কর্মপরিবেশ তৈরি হবে, যেখানে তাঁরা তাঁদের পেশাদারি দক্ষতা এবং গবেষণায় মনোনিবেশ করতে পারবেন। এর মাধ্যমে, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার মান আরও উন্নত হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে সাত কলেজ। তবে, এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে একটি সুদৃঢ় পরিকল্পনা এবং একযোগী প্রয়াস প্রয়োজন, যাতে এই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চলতে থাকে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ পরীক্ষা।
১৫ ঘণ্টা আগে২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে।
১৫ ঘণ্টা আগেযুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সরাসরি সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে ‘ইউসিবিডি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ইয়ার (ইউআইএফওয়াই)’ শীর্ষক একটি প্রোগ্রাম...
২ দিন আগেমাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স (সিপিএস) বিভাগের ৫ শিক্ষক একসঙ্গে অধ্যাপক হয়েছেন।
২ দিন আগে