Ajker Patrika

এবারও সেরার তালিকায় চট্টগ্রাম নগরীর ১০ স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
Thumbnail image

অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সেরা স্কুলের তালিকায় উঠে এসেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর ১০ স্কুলের নাম। বিগত কয়েক বছর ধরে ঘুরে ফিরে ওই সব স্কুলই সেরা দশের তালিকায় উঠে আসছে। এবার পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে শতভাগ পাস করে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে প্রথম হয়েছেন নগরীর জামালখান এলাকার ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। গতবার প্রতিষ্ঠানটি সেরার তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিল।

অন্যদিকে, প্রতিবার যেখানে শতভাগ পাস এবং জিপিএ-৫ শিক্ষার্থীর দিক থেকে এগিয়ে সেরার তালিকায় থাকত চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল। সেখানে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবার তালিকার শীর্ষস্থান থেকে ছিটকে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার ১ হাজার ৭৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করে সেরার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। গতবার চতুর্থ অবস্থানে থাকা এ স্কুল এবার রয়েছে সেরার তালিকার প্রথমে। দ্বিতীয় স্থানে কলেজিয়েট স্কুল। তৃতীয় স্থানে আছে নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়। এবার প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৪৭০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং ১ জন ফেল করে। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৯১ জন।

অপরদিকে, ৪০৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে শতভাগ পাস ও ৩৬৩ জন জিপিএ-৫ পেয়ে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে মুসলিম হাই স্কুল। ৫ম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা বিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠান থেকে এবার ৪৫৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করে। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২১ জন।

পাসের হার ও জিপিএ-৫ এর ভিত্তিতে সেরা দশে থাকা নগরীর বাকি পাঁচ বিদ্যালয়ের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৪৮৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪৮১ জন পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৮৬ জন। সপ্তম স্থানে রয়েছে বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। এই স্কুল থেকে ৩৮৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করে ২ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫৮ জন। অষ্টম স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটি থেকে এবার ৩০৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩০২ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪৮ জন।

নবম স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা বিদ্যালয়। এ প্রতিষ্ঠান থেকে ২৪১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করেছে। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১৩ জন। দশম স্থানে আছে অপর্ণাচরণ সিটি করপোরেশন বালিকা বিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৪৭৫ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৪৭০ জন পাস করেছে। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০১ জন।

শিক্ষার্থীরা ড্রাম বাজিয়ে আনন্দ উৎসব পালন করেফলাফলে দেখা গেছে, এই বছর খাস্তগীর স্কুল থেকে ৪৭৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করে। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৫৯ জন। এরপরেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কলেজিয়েট স্কুল। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এবার ৪৬২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করেছে। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৪৬ জন।

তবে কলেজিয়েট স্কুল ফলাফলে অনুপাতে এগিয়ে আছে বলে দাবি করেছেন, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষাবোর্ডের ফলাফলে আমরা দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করলেও ফলাফলের আনুপাতিক হারে আমরা কিন্তু খাস্তগীর স্কুল থেকে কিছুটা এগিয়ে আছি। ওই স্কুলের চেয়ে এবার আমাদের কম শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। সেই হিসেবে আমাদের জিপিএ-৫ বেশি।

গত বছর ফলাফলে কলেজিয়েট স্কুল প্রথম স্থান দখল করেছিল। এবার পিছিয়ে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্কুল থেকে শতভাগ পাস করেছে। ৪৬২ জনের মধ্যে ১৬ জন জিপিএ-৫ পায়নি। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম তারাও পাবে। কিন্তু করোনার কারণে এবার সব শিক্ষার্থীদের আমরা ঠিকভাবে মনিটরিংয়ের আওতায় রাখতে পারিনি। তাই এই ১৬ জন আমাদের প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

অন্যদিকে, অভিভাবক ও শিক্ষকদের নিরলস পরিশ্রমের কারণে ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবার ভালো ফলাফল করেছে বলে জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক শাহেদা আক্তার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, করোনার মধ্যে শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সময় বাসায় কাটিয়েছে। অভিভাবকেরা কঠোর পরিশ্রম করেছেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের একান্ত প্রচেষ্টা ছিল। যে কারণে এবার আমরা ফলাফলে শীর্ষে উঠে এসেছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত