Ajker Patrika

জুলাই বিপ্লবে অপ্রতিরোধ্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

মুশফিকুর রিজন, জাবি
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৫, ১৪: ৩০
৫ আগষ্ট, লং মার্চে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মিছিল।
৫ আগষ্ট, লং মার্চে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মিছিল।

২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় গণজাগরণ, যা ২০২৪ সালের ১ জুলাই শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটে। ৩৬ দিনের এই আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি, যেখানে প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের সূচনা ঘটে ২০২৪ সালের ৫ জুন থেকে। সেদিন সরকারি চাকরির নিয়োগব্যবস্থায় কোটা সংস্কারের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের সরকারপ্রদত্ত একটি সার্কুলারকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বেঞ্চ অবৈধ ঘোষণা করে। এর পরপরই শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসে এবং ৫৬ শতাংশ কোটা সুবিধা বাতিলের দাবিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়, যার মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল একটি। ৬ জুনও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়; তবে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় আন্দোলন সাময়িকভাবে স্তিমিত হয়ে পড়ে এবং ১ জুলাই ছুটি শেষে পুনরায় আন্দোলনের সূচনা হয়।

জাহাঙ্গীরনগরে প্রতিটি কর্মসূচির শুরু হতো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে। সেখানেই গণতান্ত্রিক আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি ও ব্যানার নির্ধারিত হতো। একই সঙ্গে আন্দোলন চালাতে ক্রাউড ফান্ডিংও চলত। সারা দেশে যে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে কর্মসূচি চলেছে, তার নাম প্রথম প্রস্তাব করা হয়েছিল জাহাঙ্গীরনগর থেকেই।

৫ আগষ্ট, লং মার্চে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মিছিল।
৫ আগষ্ট, লং মার্চে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মিছিল।

এ বিষয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম জানান, ‘আমরা লাইব্রেরির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিই কীভাবে আন্দোলন পরিচালিত হবে। ২৯ জুন আমরা একটি সাধারণ সভা করি, যেখানে সিদ্ধান্ত হয় একটি একক ব্যানারে আন্দোলন পরিচালনা করা হবে। ওই দিনই আমাদের ইন্টারনাল গ্রুপে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা’ নামটি প্রস্তাব করি এবং পরদিন ৩০ জুন তা পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এরপর ১ জুলাই থেকে সারা দেশে এই ব্যানারে আন্দোলন চলে।’

১ জুলাই থেকে প্রতিদিনই জাহাঙ্গীরনগরে লাগাতার কর্মসূচি চলতে থাকে এবং প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রতীকী অবরোধ করে। ৪ জুলাই একটি রায় ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এই রায় শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে গেলে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। ওই দিনই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল এবং সদস্যসচিব হন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম মেঘ। পরে ৩৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি সমন্বয়ক কমিটিও গঠন করা হয়।

৫ জুলাই মানববন্ধনের পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এবং ৬ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ৭ জুলাই সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ ডাকা হয়। যদিও কেন্দ্র থেকে বিকেল ৩টায় ব্লকেড শুরুর নির্দেশনা ছিল, জাহাঙ্গীরনগরে সকাল সাড়ে ১১টা থেকেই এটি শুরু হয়—যা ছিল দেশের প্রথম ব্লকেড কর্মসূচি।

১০ জুলাই পর্যন্ত টানা ব্লকড কর্মসূচি চলে। ১০ জুলাই আপিল বিভাগ কোটার ওপর চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেন। পরদিন ১১ জুলাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে মহাসড়ক অবরোধ করে জাবি শিক্ষার্থীরা। ১২ ও ১৩ জুলাই পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আন্দোলন অব্যাহত থাকে। ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার বিতর্কিত ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ মন্তব্যের প্রতিবাদে সারা দেশের মত জাবির ক্যাম্পাসেও ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রলীগের হামলা ও হল সিসিটিভি না দেখানোর প্রতিবাদে হল প্রাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেন।

২রা জুলাই  ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রতীকী অবরোধ
২রা জুলাই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রতীকী অবরোধ

১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় মশাল মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে পরবর্তীতে সময় পরিবর্তন করে বিকেল পাঁচটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে পৌঁছালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এ সময় নারী শিক্ষার্থীদেরও মারধর করা হয়। পরে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। এই ঘটনায় অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আহত হন।

এই ঘটনার বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে জড়ো হন এবং পরে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে যান। প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তারা তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাননি। এদিকে একই সময় ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে আসে। রাত বারোটার দিকে তারা উপাচার্যের বাসভবনের দিকে অগ্রসর হয়। হামলার খবর আগেভাগেই আন্দোলনকারীরা জেনে গেলে তারা উপাচার্যের বাসভবনের মধ্যে আশ্রয় নেন। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে বাসভবন ঘিরে ফেললেও উপাচার্য শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানান। রাত দেড়টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ, এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

৩রা জুলাই, ঢাকা - আরিচা মহাসড়কে ছাত্র সমাবেশ
৩রা জুলাই, ঢাকা - আরিচা মহাসড়কে ছাত্র সমাবেশ

এই সময়কার একটি লাইভ ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে হামলার খবর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করেন। ওই রাতেই ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের রুম ভাঙচুর করেন এবং ১৬ জুলাই প্রথম প্রহরেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করেন। সারা বাংলাদেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল প্রথম ক্যাম্পাস, যেখান থেকে ছাত্রলীগকে পুরোপুরি বিতাড়িত করা হয়।

১৬ জুলাই সকালে সাভারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা একে একে জাহাঙ্গীরনগরে আসতে থাকেন। সারা দিনজুড়ে ‘জাবি, তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’—স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। সেদিন প্রায় ২০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সন্ধ্যায় খবর আসে যে, ছাত্রলীগ আবার হলে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে—এ জন্য শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে থেকে পাহারা দেন।

১ আগষ্ট, নিজের কার্যালয় থেকে শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলেন জাবি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা
১ আগষ্ট, নিজের কার্যালয় থেকে শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলেন জাবি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা

১৭ জুলাই সকালে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খালি (ভ্যাকেন্ট) ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় প্রশাসন নিজেদের নিরাপত্তার অজুহাতে ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করায়। সকাল থেকেই পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। ছররা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হয়। শিক্ষার্থীরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। দুই ঘণ্টা পর পুলিশ ক্যাম্পাসের বাইরে সরে গিয়ে মূল ফটকে অবস্থান নেয়। এই ঘটনায় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাতে পুলিশ জোরপূর্বক সকল শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করে।

১৮ জুলাই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কমে যায়। অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে যান, আর কিছু শিক্ষার্থী আশপাশের ইসলামনগর, গেরুয়া ও আমবাগান এলাকায় অবস্থান নেন। এদিন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা মৌন মিছিল করেন। বিকেলে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে পুলিশকে বের করে দেন।

১৯ জুলাইও শিক্ষার্থীরা স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করেন। ২০ জুলাই বিকেলে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য–২৪ ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় পুরোনো ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে। এরপর শিক্ষার্থীরা কারফিউ ভেঙে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন। এ সময় ‘ঘোড়ার ডিমের কারফিউ, মানি না, মানব না’ স্লোগানে মুখরিত হয় আন্দোলন।

১৮ জুলাই থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন সাধারণ জনতা। তখন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হলে অফলাইনে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হতো। তখন আন্দোলনের সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসিব জামান। তিনি জানান, ‘আমাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাসায় চলে যাওয়ায় স্থানীয় জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হয়েছে। এ সময় আমার দায়িত্ব ছিল আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আমাদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো ও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা। এই কাজে আমাকে সহায়তা করেন আমাদের ক্যাম্পাসের অরিত্র সত্তার এবং তৎকালীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোসাদ্দেক ভাই। এ ছাড়া স্থানীয় বিএনপির ও জামায়াতের অনেক নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ হয়েছিল। তাঁদের অনেক নেতা-কর্মী আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন।’

২৬ জুলাই রাতে সমন্বয়ক আরিফ সোহেল ‘সেতু ভবন’ মামলায় ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। এ বিষয়ে তিনি জানান, ‘২৪ তারিখের দিকে আমার কাছে একটি মেসেজ আসে; সব সিনিয়র নেতা গ্রেপ্তার হওয়ায় আমাকে পুরো দেশের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে হবে এবং ঢাকায় চলে যেতে হবে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে এবং পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আমি আমবাগানের বাসায় যাই। সেখান থেকেই ব্লক রেইড দিয়ে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছয় দিনের রিমান্ড শেষে আবার ছেড়ে দেওয়া হয় এবং এরপর আবার আন্দোলনে যোগ দিই। আমি ৩ আগস্ট মুক্তি পাই এবং সেদিনই ‘এক দফা’ আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়।’

আরিফ সোহেলের গ্রেপ্তারের পর যাঁদের নেতৃত্বে আন্দোলন চলমান থাকে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু। তিনি জানান, ‘১৮ জুলাইয়ের পর থেকে একপ্রকার পালিয়ে পালিয়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে হয়েছে। সিম পরিবর্তন করতে হয়েছে, প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় থাকতে হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের ভয়ে আমি কয়েক রাত নৌকায় ঘুমিয়েছি। সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আমরা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছি।’

২৮ ও ২৯ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক ও স্থানীয় জনগণ মিলে বিক্ষোভ মিছিল করেন। ৩০ জুলাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিলে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আরও বাড়তে থাকে এবং সেদিনের মিছিলেও অনেক বেশি শিক্ষক যোগ দেন।

১ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভিন্নধর্মী প্রতিবাদী গানের মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এই দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ১২ জন শিক্ষক যোগ দেন। এদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হলেও দমে যাননি। ওই দিন দুপুরেই নিজের অফিস কক্ষ থেকে শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলে প্রতিবাদ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা। এ বিষয়ে অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, ‘আমার শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানের মতো। যার হাতে আমার সন্তানের রক্ত, তার ছবি আমার দেয়ালে থাকতে পারে না। সেই মুহূর্তে আমার মনে হয়েছে, যার কারণে আমরা আগে তাঁর ছবি টাঙিয়েছিলাম, তিনি আর সেই পদে থাকার যোগ্য নন। তাঁর জন্য তখন সবাই অনিরাপদ হয়ে পড়েছিল।’

ছবি নামানোর পর কোনো চাপ এসেছিল কি না? এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাকে তখন শোকজ করা হয়েছিল। কেন ছবি নামিয়েছি, সে বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে অনেক শিক্ষক। অনেকে ফোন করে জানিয়েছে, আমার ছবি কোথায় কোথায় ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আমি সেসব নিয়ে ভাবিনি। আমার একমাত্র চিন্তা ছিল—আমার সন্তানসম শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা।’

২, ৩ ও ৪ আগস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণও স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে অংশ নেন। এই আন্দোলনে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা সব ধরনের সহায়তা করেছেন। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির তৎকালীন সভাপতি আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল জানান, ‘আমরা সম্ভবপর সব ধরনের তথ্য দিয়ে আন্দোলনকারীদের সহায়তা করার চেষ্টা করতাম। একই সঙ্গে আমাদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখাও আমাদের দায়িত্ব ছিল। ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও আমরা অফিসে কল করে সংবাদ পাঠাতাম। আমরা চাইতাম, এই আন্দোলনের ভেতর থেকেও জাহাঙ্গীরনগর যেন অদৃশ্য না হয়ে যায়—সবাই যেন এখানকার কর্মসূচিগুলো সম্পর্কে জানতে পারে। পাশাপাশি আশপাশের মানুষদেরও আমরা এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করতাম।’

৫ আগস্টের লং মার্চে অংশ নিতে সকাল থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় জনগণ। বেলা ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে প্রায় ২০ হাজার মানুষের একটি মিছিল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে বের হয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল কারখানা শ্রমিক ও গার্মেন্টস কর্মী। তবে সাভার এলাকায় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই মিছিলটি পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পুলিশ মিছিলে গুলি চালায়। এতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে আসা শ্রাবণ গাজী নামে এক শিক্ষার্থী শহীদ হন। পুলিশের বাধায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা পৌঁছাতে না পেরে শহীদ শ্রাবণ গাজীর মরদেহ নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর ধীরে ধীরে বাইরের অংশগ্রহণকারীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। দেশের সেই উত্তাল পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অনেকটাই অরক্ষিত হয়ে পড়ে। রাতের বেলায় শিক্ষার্থীরাই একত্র হয়ে ক্যাম্পাস পাহারায় অংশ নেন।

বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে ‘গণ–অভ্যুত্থানের সরকার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ২৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের তৎকালীন তথ্য উপদেষ্টা ও বর্তমান জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সেখানে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সময় যখন আমরা মনোবল ও আশা হারিয়ে ফেলছিলাম, তখন জাহাঙ্গীরনগর আমাদের সাহস জুগিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেডিকেল ভর্তি-ইচ্ছুকদের শেষ মুহূর্তের করণীয়

সুরাইয়া ফেরদৌস ঋতু
সুরাইয়া ফেরদৌস ঋতু। ছবি: সংগৃহীত
সুরাইয়া ফেরদৌস ঋতু। ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১২ ডিসেম্বর। বছরের পর বছর কঠোর পরিশ্রম, অসংখ্য রাত জাগা, পরিবার-পরিজনের ত্যাগ—সবকিছুর লক্ষ্য হলো কাঙ্ক্ষিত আসনটি নিশ্চিত করা। এই দীর্ঘ যাত্রার শেষ ধাপ হচ্ছে পরীক্ষার আগের কয়েকটি দিন, যা ভর্তি-ইচ্ছুকদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, দক্ষতা, মেধা ও প্রস্তুতির সেরা ব্যবহার হয় ঠিক এই সময়েই। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি অনেকের জন্য চাপের। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা ও মানসিক স্থিরতা থাকলে এটিই হতে পারে সাফল্যের মোড় ঘোরানোর সময়।

ভুল থেকে শেখাই শেষ মুহূর্তের সবচেয়ে বড় প্রস্তুতি

যাঁরা নিয়মিত মডেল টেস্ট দিয়েছেন বা বিগত বছরের প্রশ্ন সমাধান করেছেন, তাঁদের সবারই কিছু ভুল থাকে—বিষয়ভিত্তিক বা প্রশ্নভিত্তিক। শেষ সময়ে এই ভুলগুলোই হয়ে ওঠে সবচেয়ে কার্যকর উপাদান। ভুলগুলো চিহ্নিত করে টপিকভিত্তিক দ্রুত রিভিশন করলে মস্তিষ্ক তথ্য ধরে রাখতে আরও সক্ষম হয়। সুপারফিসিয়াল রিভিশন বা দ্রুত চোখ বোলানো রিভিশনও শেষ মুহূর্তে দারুণ কাজ দেয়; কারণ, এটি মস্তিষ্কে প্রয়োজনীয় তথ্যের সিগন্যালকে আরও সক্রিয় করে। তাই এখন নতুন কিছু শেখার চেয়ে নিজের ভুল জানা এবং সেগুলো সংশোধন করাই বেশি যুক্তিসংগত।

নেগেটিভ মার্কিং এড়াতে কৌশল

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো নেগেটিভ মার্কিং। শেষ মুহূর্তে বাড়তি উত্তেজনায় অনেকেই কনফিউজিং প্রশ্নে ঝুঁকি নিয়ে ফেলেন। এতে প্রাপ্ত নম্বরের চেয়ে কাটা নম্বরই বেশি হয়। তাই নিয়মটি পরিষ্কার—৫০% নিশ্চিত না হলে দাগানো নয়। আর ৭০-৮০% নিশ্চিত হলে তখন হিসাব করে উত্তর দেওয়া যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, ভর্তি পরীক্ষা শুধু জানার পরীক্ষা নয়; এটি হলো বুদ্ধি, স্থিরতা এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণেরও পরীক্ষা।

মানসিক চাপ হলো সাফল্যের নীরব শত্রু

পরীক্ষার আগে চাপ অনুভব করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই চাপ যদি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায়, তবে এটি মেধাবী শিক্ষার্থীকেও দুর্বল করে দিতে পারে। ‘চান্স না পেলে কী হবে?’, ‘সবাই তো পারছে, আমি পারব তো?’— এমন ভাবনা আত্মবিশ্বাসকে ভেতর থেকে খেয়ে ফেলে। নিজের সঙ্গে অন্যের তুলনা করা এই সময় সবচেয়ে বড় ভুল। প্রত্যেকের যাত্রাই আলাদা, চেষ্টা ও মানসিক প্রস্তুতিও ভিন্ন। তাই শেষ সময়ে নিজের প্রতি আস্থা রাখতে হবে, আর আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, আপনি যেদিন প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন, সেদিন থেকেই আপনি সঠিক পথেই হাঁটছেন।

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি মনোবল ধরে রাখে

ভর্তি পরীক্ষার চাপ, দুশ্চিন্তা, অনিশ্চয়তা—সবই মানসিক শক্তিকে দুর্বল করে। কিন্তু ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ধরে রাখতে পারলে মন স্থির থাকে, মনোযোগ বাড়ে এবং পরীক্ষার হলে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়। ভুল হওয়া স্বাভাবিক; কিন্তু ভুল দেখেই ভেঙে পড়লে চলবে না। বরং ভাবতে হবে, আমি জানি, আমি পারি, এবং সেরা চেষ্টা আমি করব। ইতিবাচক মনোভাবই শেষ ধাপের লড়াইয়ে আপনাকে সবচেয়ে কার্যকরভাবে টিকিয়ে রাখবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তি

ভর্তি পরীক্ষা ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে অসংখ্য ভুয়া তথ্য—প্রশ্নপত্র ফাঁস, সময় পরিবর্তন, আসনসংখ্যা, নম্বর বণ্টন নিয়ে ভিত্তিহীন পোস্ট, কিংবা ‘নিশ্চিত প্রশ্ন’ নামে গুজব, এগুলো অনেকের মনকে অস্থির করে তোলে। যারা যাচাই না করে এসব শেয়ার করে, তারা বিভ্রান্তি আরও বাড়ায়। এই সময় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকা বা শুধু সরকারি নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুসরণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে মনোযোগ বিঘ্নিত হয় না এবং মানসিক চাপও কম থাকে।

শেষ মুহূর্তে যেসব বিষয় অবশ্যই মেনে চলা উচিত

শেষ সময়ে নিজেকে স্থির রাখা সবচেয়ে জরুরি। নতুন কিছু শেখার চেষ্টা নয়; বরং পড়া বিষয়গুলো রিভিশন করলেই স্মৃতি আরও স্থায়ী হয়। নিয়মিত, হালকা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত; কম খেয়ে দুর্বল হওয়া নয়। পর্যাপ্ত পানি পান শরীরকে সতেজ রাখে এবং স্বল্প সময় হাঁটা বা স্ট্রেচিং মস্তিষ্ককে সক্রিয় করে। পরিবারের সঙ্গে শুধু প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বললে মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হয় না। সোশ্যাল মিডিয়া ব্লক করে দিলে অপ্রয়োজনীয় গুজব থেকে দূরে থাকা যায়। আর হালকা দোয়া-ইবাদত মনকে শান্ত করে, আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।

শেষ কথা হলো, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি শুধু বইয়ের নয়, মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতিরও সমন্বয়। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন, নিয়ম মেনে চলুন এবং সেরাটুকু দিন। সাফল্য অবশ্যই আসবে। শুভকামনা প্রতিটি ভর্তি-ইচ্ছুকদের জন্য।

অনুলিখন: তানজিল কাজী

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ব্যাচেলর অব মেডিসিন ও ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) এবং ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হলেও পরীক্ষার্থীদের সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে অবশ্যই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে।

আজ মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, এবার ভর্তি পরীক্ষার সময় ১৫ মিনিট বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ পরীক্ষা হবে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর পাওয়া যাবে। তবে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। পাস নম্বর ৪০।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরীক্ষার্থীদের স্বচ্ছ ব্যাগে রঙিন প্রবেশপত্র, কালো কালির স্বচ্ছ বলপয়েন্ট কলম, এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার প্রবেশপত্র অথবা রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে আসতে হবে। মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, ঘড়ি, ইলেকট্রনিকসামগ্রী বা অন্য কোনো ব্যাগ নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ভর্তি পরীক্ষায় এইচএসসি বা সমমান সিলেবাস অনুযায়ী জীববিজ্ঞান ৩০, রসায়ন ২৫, পদার্থবিজ্ঞান ১৫, ইংরেজি ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান, প্রবণতা ও মানবিক গুণাবলি মূল্যায়নে ১৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোট ১৩ হাজার ৫১টি আসনের জন্য এমবিবিএস এবং বিডিএস কোর্সে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য এ বছর মোট আবেদনকারী ১ লাখ ২২ হাজার ৬৩২ জন। যার মধ্যে ৪৯ হাজার ২৮ জন আবেদনকারী ছাত্র ও ৭৩ হাজার ৬০৪ জন ছাত্রী।

স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজে মোট আসন ১৩ হাজার ৫১টি। এর মধ্যে সরকারি মেডিকেল কলেজে ৫ হাজার ১০০ ও ডেন্টাল ইউনিটে ৫৪৫টি আসন রয়েছে। বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন রয়েছে ৬ হাজার ১টি এবং ডেন্টাল কলেজে ১ হাজার ৪০৫টি। অর্থাৎ এমবিবিএস কোর্সে মোট ১১ হাজার ১০১টি এবং বিডিএস কোর্সে ১ হাজার ৯৫০টি আসন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: অধ্যাদেশ জারির আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনে আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনে আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর সাত কলেজ নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের অধ্যাদেশ জারির দাবিতে চলমান আন্দোলন ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

রাজধানীর ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনে আজ মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন তাঁরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি ও ঢাকা কলেজের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মো. রবিন হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান এক দফার কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। এ বিষয়ে সাত কলেজের সিনিয়র শিক্ষার্থীরাও আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করব। এ সময়ের মধ্যে পরবর্তীতে যেকোনো পরিস্থিতির আলোকে আমাদের পরবর্তী করণীয় ঠিক করে জানাব।’

ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ—এই সাত কলেজ নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের কার্যক্রম যখন চলছে, তখন এর আশু কাঠামো নিয়ে কলেজগুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কয়েকটি অংশ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। খসড়ায় সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ বা স্কুলিং কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী, কলেজগুলোয় উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানও চালু থাকবে।

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির প্রস্তাবিত কাঠামোতে সাতটি কলেজসহ সারা দেশের সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতির মতো মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। তাঁরা কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে ‘অধিভুক্তিমূলক কাঠামোতে’ নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।

অন্যদিকে কলেজগুলোর বর্তমান শিক্ষার্থীদের একাংশ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি কাঠামো দ্রুত নিশ্চিত করার পক্ষে অবস্থান নিয়ে দ্রুততম সময়ে অধ্যাদেশ জারির দাবি জানায়। গত রোববার ও গতকাল সোমবার শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা।

আজ ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত রাখার ঘোষণা এল তাদের কাছ থেকে।

অপর দিকে উচ্চমাধ্যমিক ও অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতোই প্রস্তাবিত কাঠামোর বিরোধিতা করে বলছে, স্কুলিং কাঠামোয় কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য বজায় থাকবে না।

এমন বাস্তবতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সব মহলের সঙ্গে আলোচনা করে অধ্যাদেশের খসড়া পরিমার্জন ও চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। ২৫ ডিসেম্বর খসড়া অধ্যাদেশ নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা আয়োজনের কথা রয়েছে। আর প্রথম ব্যাচের (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থীদের ক্লাস আগামী ১ জানুয়ারি থেকে শুরু করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই বিজ্ঞপ্তি উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রবিন হোসেন বলেন, ‘আমরা বরাবরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সরকার তথা রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যশীল। বিগত সময়ের মতো এবারও আমরা বিশ্বাস রাখতে চাই, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের যে সময়সীমা জানানো হয়েছে, সে সময়ের মধ্যে অধ্যাদেশ এবং নবীনদের পাঠদান শুরু হবে। আমরা শুনেছি, চলতি মাসের মধ্যে অধ্যাদেশের আরেকটি খসড়া প্রকাশ করা হবে। আমরা সেই খসড়ায় গভীর দৃষ্টি রাখছি। শুনেছি, পূর্বের খসড়ায় বৃহৎ সংশোধনী আনা হচ্ছে। শিক্ষা সিন্ডিকেট তথা ষড়যন্ত্রকারীদের প্রেসক্রিপশনে এমন সংশোধনী আনা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে আমাদের আশঙ্কা আছে।’

অধ্যাদেশে গুণগত শিক্ষার মান ও অধিকার সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে রবিন বলেন, মন্ত্রণালয়ের অধ্যাদেশে যদি এর ব্যত্যয় ঘটে, তাহলে শিক্ষার্থীরা সে অধ্যাদেশ ছুড়ে ফেলে দেবেন। শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে কোনো ষড়যন্ত্রকারীদের সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হতে দেওয়া হবে না। শিক্ষার্থীদের গুণগত শিক্ষার মান নিশ্চিতের লক্ষ্যেই এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ নিয়ে সভা ২৫ ডিসেম্বর, নতুন বছরে প্রথম দিন ক্লাস শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ১৩
প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করে নানা স্লোগান দেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করে নানা স্লোগান দেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি) প্রথম ব্যাচের ক্লাস আগামী ১ জানুয়ারি শুরু হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের খসড়া ২৫ ডিসেম্বর আন্তমন্ত্রণালয় সভায় উপস্থাপন করা হবে।

অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষার্থীদের একাংশের শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির মধ্যে আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় অধ্যাদেশ সংশোধন করা হচ্ছে জানিয়ে বলেছে, এ প্রক্রিয়া ‘সময়সাপেক্ষ’।

আজ বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৯ হাজার ৩৮৮ জন শিক্ষার্থী ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট, বিজ্ঞান ইউনিট ও ব্যবসাশিক্ষা ইউনিটে ভর্তি নিশ্চয়ন করেছেন। বিদ্যমান একাডেমিক কাঠামোতে ভর্তি করা শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর জন্য স্ব-স্ব কলেজের শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আসন্ন শীতকালীন ছুটি শেষে ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা সম্ভব হবে বলে শিক্ষক প্রতিনিধিরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাদেশের খসড়ার বিষয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সুধীজনসহ বিভিন্ন মহল হতে পাঁচ হাজারের বেশি মতামত পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত প্রতিটি মতামত আইনগত ও বাস্তবতার নিরিখে পর্যালোচনা করে খসড়া পরিমার্জন করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, পরিমার্জনের কাজ সম্পন্ন করে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিমার্জিত খসড়ার ওপর আন্তমন্ত্রণালয় সভা করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে সাত কলেজের সম্পৃক্ততার ধরন বিষয়ে বাস্তবসম্মত, কার্যকর ও উপযোগী কাঠামো নির্ধারণসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সব বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে ও বিধিবদ্ধ পদ্ধতি অনুসরণ করে অধ্যাদেশের খসড়া পরিমার্জন করা হচ্ছে।

এদিকে এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ অধ্যাদেশ জারির দাবিতে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। দুপুরের পর আব্দুল গণি রোডের শিক্ষা ভবনের সামনের সংযোগ সড়ক থেকে সচিবালয় অভিমুখী সড়কে অবস্থান নেন তাঁরা। এতে হাইকোর্ট মোড় থেকে সচিবালয় অভিমুখে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট হয়। শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে গতকাল রোববার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত শিক্ষা ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

জানতে চাইলে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ২০২৪-২৫ ব্যাচের ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবু বকর আজ দুপুরে বলেন, ‘অধ্যাদেশ জারি হওয়ার আগপর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব ৷ দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজকে নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের কার্যক্রম চলছে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। খসড়ায় সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ বা ‘স্কুলিং’ কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী কলেজগুলোতে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানও চালু থাকবে।

ওই খসড়া প্রকাশের পর কলেজগুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভিন্ন অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন। ওই সাত কলেজসহ সারা দেশের সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতির মতো মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার শঙ্কায় আছেন। তাঁরা কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে ‘অধিভুক্তিমূলক কাঠামোতে’ নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের একাংশ দ্রুত অধ্যাদেশের দাবি জানিয়েছেন এবং উচ্চমাধ্যমিক ও অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ ‘স্কুলিং’ কাঠামো বাতিল এবং কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দাবি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত