Ajker Patrika

প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন শিক্ষানীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২১, ২০: ৫৭
প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন শিক্ষানীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক

প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড স্থাপনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আইনের যে খসড়া করেছে সেটিকে জাতীয় শিক্ষানীতি ও জাতীয় শিক্ষাক্রমের রূপরেখার নীতি ও অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ৩৬ জন বিশিষ্ট নাগরিক এই অভিমত দিয়েছেন। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়কেন্দ্রিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সবাইকে বিনা মূল্যে বই দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে গাইড বই ব্যবহারের প্রবণতা কিছুটা কমেছে। পরীক্ষা ও বইয়ের বোঝা কমানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখায় প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা রাখা হয়নি। জাতীয় শিক্ষানীতিতেও পঞ্চমের সমাপনীকে পাবলিক পরীক্ষা হিসেবে ধরা হয়নি। 

‘কিন্তু সম্প্রতি আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনাকে আমলে না নিয়ে এবং জাতীয় শিক্ষানীতিকে পাশ কাটিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইনের খসড়া তৈরি করে মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। শিক্ষানীতি ও জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখার নীতি ও অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন প্রণয়নের উদ্যোগ কেন নেওয়া হলো, তা আমাদের বোধগম্য নয়। করোনার কারণে গত শিক্ষাবছরে একটি পরীক্ষাও নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বছরও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে এই বোর্ড গঠনের প্রস্তাব কতটুকু যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত তা প্রশ্নসাপেক্ষ।’ 

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ও প্রতিভার উন্মেষ ঘটানোর জন্য শুধু পরীক্ষানির্ভর, সনদসর্বস্ব ব্যবস্থার পরিবর্তে সহ-পাঠ্য ক্রমিক কার্যক্রমের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের মুখস্থনির্ভর করা, গাইড বই ও প্রাইভেট টিউশনকে বৈধতা দেওয়া এবং কোচিং বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার নানা অপচেষ্টা আমরা পূর্বেও লক্ষ্য করেছি। প্রস্তাবিত প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাঁধে বইয়ের বোঝা বাড়াবে এবং করোনার মতো মহাবিপর্যয়ের পর অভিভাবকদের কোচিং ও গাইড বইয়ের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় বাড়াবে। আমরা মন্ত্রণালয়কে এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জোর দাবি জানাচ্ছি।’ 

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, সেলিনা হোসেন, রামেন্দু মজুমদার, সুলতানা কামাল, নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক এম এম আকাশ, রাশেদা কে চৌধূরী, মামুনুর রশীদ, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ড. মনজুর আহমেদ, ইলিয়াস কাঞ্চন, অধ্যাপক মাহফুজা খানম, ড. ইফতেখারুজ্জামান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ, ডা. এজাজুল ইসলাম, কাজী রফিকুল আলম, ড. আবদুল হালিম, শাহীন আনাম, বুলবুল মহলানবীশ, অধ্যাপক শফি আহমেদ, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ফারহা কবীর, ড. মোহম্মদ আব্দুল মজিদ, ড. আনোয়ারা বেগম, অধ্যাপক হান্নানা বেগম, ড. তারিক আহসান, ড. সৈয়দা তাহমিনা আখতার, এম এ মুহিত এবং ড. আবদুল মালেক বিবৃতিতে সই করেছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত