Ajker Patrika

সবাই জ্ঞান আহরণে ব্যস্ত

মুসাররাত আবির
সবাই জ্ঞান আহরণে ব্যস্ত

রাশিয়ায় প্রথম বাংলাদেশি রকেট কমপ্লেক্স অ্যান্ড স্পেস সায়েন্স শিক্ষার্থী শাহ জালাল জোনাক বর্তমানে পড়াশোনা করছেন রাশিয়ার বাউমান মস্কো স্টেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে।

ছোটবেলা থেকেই তাঁর ছিল বিজ্ঞানের প্রতি বিশেষ ঝোঁক। কারণ বিজ্ঞানে আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া রহস্যময় বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়; বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞানে। সে জন্যই পদার্থবিজ্ঞান-সম্পর্কিত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের রকেট সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করতে তিনি পাড়ি জমালেন রাশিয়ায়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে রাশিয়ায় আছেন তিনি। মহাকাশ নিয়ে সবচেয়ে বেশি কাজ হয় রাশিয়া ও আমেরিকায়। তবে আমেরিকায় সরাসরি রকেট সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করা যায় না, পড়তে হয় অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং। অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মধ্যে রকেট, প্লেন, হেলিকপ্টার–সবকিছু নিয়েই পড়ানো হয়। অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শেষ করে যাঁরা বের হন, তাদের রকেট সায়েন্টিস্ট বলা হয়। তবে শুধু রকেট নিয়ে আলাদাভাবে পড়াশোনা করা যায় রাশিয়ায়।

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে নিজস্ব কিছু বৃত্তি দেওয়া হয়। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো রাশিয়ান ফেডারেশনের বৃত্তি। রুশ সরকার প্রতিবছর বিদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে থাকে। শতকরা ৮০ ভাগ নম্বর পেলে এসব বৃত্তির জন্য আবেদন করা যায়। নিজ খরচে ভর্তি হতে চাইলে গড় নম্বর থাকতে হবে ৬০-৭০ শতাংশ। প্রতিবছর রাশিয়ান সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে কিছুসংখ্যক বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়। এই বৃত্তির সার্কুলার বাংলাদেশে অবস্থিত রাশিয়ান সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড কালচার থেকে প্রতিবছরের জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসে দেওয়া হয়ে থাকে।

টিউশন ফি
রাশিয়ায় পড়াশোনার খরচ খুব একটা বেশি না। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক করার জন্য টিউশন ফি ২০০০-৭০০০ ডলার, কলা অনুষদের জন্য ৩২০০-৫০০০ ডলার এবং বাণিজ্য বিভাগের জন্য ৪০০০-৬০০০ ডলার প্রয়োজন। মস্কোর বাইরের শহরগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি আরও কম। এখানে পড়তে আসলে ব্যাংক ব্যালেন্স তেমন দেখাতে হয় না। চাইলে রাশিয়ায় এসেও টিউশন ফি চার ধাপে পরিশোধ করতে পারবেন। এ ছাড়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাতখরচ বাবদ কিছু বৃত্তি দেওয়া হয়।

সুযোগ-সুবিধা
রাশিয়ায় মাসে ১০ হাজার টাকার মধ্যেই একজন শিক্ষার্থীর থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় খরচ মেটানো যায়। তা ছাড়া রাশিয়ার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যেসব শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন, তাঁদের জন্য যাতায়াতব্যবস্থাও বেশ সাশ্রয়ী।
রাশিয়ায় খণ্ডকালীন চাকরি করার সুযোগ আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে করতে চাইলে কোনো অনুমতি নিতে হয় না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে করতে চাইলে জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর মাইগ্রেশন ইস্যুজ অব দ্য ইন্টেরিয়র মিনিস্ট্রি অব রাশিয়ার থেকে এক বছরের জন্য অনুমতি নিয়ে কাজ করতে হবে। কাজ করার কোনো ধরাবাঁধা সময়সীমা নেই। তবে যে শহরে শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়, তাঁকে সেই শহরেই চাকরি করতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী পড়াশোনা ছেড়ে দিলে তাঁর চাকরির অনুমতি আর বহাল থাকে না। 
এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো রাজনীতি নেই, নেই কোনো বিশৃঙ্খলা। সবাই জ্ঞান আহরণ কিংবা গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় হাতে-কলমে শেখানো হয়। সেখানে পড়াশোনা করতে চাইলে রাশিয়ান ভাষাটা জানতে হবে। অন্যথায় বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হবে। 

ভর্তির প্রক্রিয়া
সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি থেকে জুন–এই দুই সেমিস্টারে ভর্তি হওয়া যায়। ডিপ্লোমা, ব্যাচেলর ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রি ও পিএইচডি প্রোগ্রামে এখানে পড়াশোনার সুযোগ আছে। 
অ্যাকাউন্টিং, অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, কালচারাল অ্যানথ্রোপলজি, আর্থ সায়েন্স, ইকোলজি, ইকোনমিকস, ইনস্টিটিউট অব ওরিয়েন্টাল স্টাডিজ, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স ইত্যাদি বিষয় থেকে পছন্দমতো কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন। মূলত রাশিয়ান ভাষাতেই পড়াশোনা করানো হয়।

রাশিয়ার সেরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়
মস্কো ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল রিসার্চ ইউনিভার্সিটি হায়ার স্কুল অব ইকোনমিকস, সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেট ইউনিভার্সিটি, কাজান ফেডারেল ইউনিভার্সিটি, টমস্ক স্টেট ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি।

অনুলিখন: মুসাররাত আবির

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনের আগে এসআই-এএসআইদের ব্যক্তিগত তথ্য তালাশে পুলিশ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প: ইউএনও-উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শুনানি কাল

ইরানি নকশার ড্রোন হয়ে গেছে রাশিয়ার, ক্ষোভ বাড়ছে তেহরানে

যারা একাত্তরে ফিরতে চায়, তারা চব্বিশ অস্বীকার করে: নাহিদ

ফ্লাইট এক্সপার্ট: গ্রামবাসীর কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়েছেন এমডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত